ওয়ান ইলেভেন কি আসছে? দেশের প্রভু কে চীন, আমেরিকা না ইন্ডিয়া?
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:১৩:০৬,অপরাহ্ন ১৫ অক্টোবর ২০১৭ | সংবাদটি ৬৬৫৯৬ বার পঠিত

রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী
(এক) আগামী মাস নভেম্বর। অক্টোবর আসলেই আমার মনের মধ্যে উঁকি দেয় ওয়ান ইলেভেনের। সকালে ঘুম থেকে উঠেছি, নাস্তা সেরে বাইরে বের হবো, এ সময় মোবাইল ফোন বেজে উঠে, বাংলা ষ্টেইটমেন্টের প্রধান সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ খানের ফোন। লেখা রেডি করেছেন? কি লিখবো? লিখতে আর ভালো লাগেনা, লেখা পড়ে কেউ বাহবা ও দেয়না। মনে মনে বলি ঢাকার কিছু দালাল সাংবাদিক বন্ধুদের মত যদি দলীয় দালালী করতাম তাহলে আর যাই হোক না কেন অনেক সাংবাদিকের মত বিলাস বহুল জীবন যাপন করতে পারতাম। তোফায়েল খানকে বললাম, আমি জরুরী কাজে বেডফোর্ডে যাবো। লন্ডন থেকে বেশী দুরে নয়, বেড ফোর্ড থেকে এসে লেখা রেডি করে পাঠিয়ে দিব। লেপ টপ সাথে নিয়ে নিলাম, ট্রেইনে বসে বসে লিখে ফেলবো। পূর্ব লন্ডনের লাইম হাউস ষ্টেশন থেকে ট্রেন ধরে সেন্টপাংক্রাস ষ্টেশনে পৌঁছলাম। সেন্টপাংক্রাস থেকে ইষ্ট মিডল্যন্ডের ফাস্টার ট্রেইনে চেপে বসে লেপটপ অন করলাম। কিন্তু লিখতে ইচ্ছে হলোনা। লন্ডনের বাইরে বের হলে লন্ডনের গ্রামগুলোকে আমার ভালোই লাগে। সবুজের সমারোহ চোখে পড়ে। ট্রেন থেকে বসে সবুজ বন আর পাহাড় দেখতে ভালোই লাগছে। প্রকৃতির নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে দেখতে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দিচ্ছিলাম। সৃষ্টির মধ্যেই তো শ্রষ্টা নিহিত। কোন এক বাংলাদেশের গরীব কবি লিখেছিলেন “এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি সকল ———রানী সে যে আমার জন্মভূমি“ এই কবি ভূল লিখেছিলেন, বৃটেনের গ্রীস্মকাল যদি কবি দেখতেন তাহলে তিনি এরকম লিখতেননা। সে যাক, আগে ট্রেন ছড়তামনা। কিন্তু এখন গাড়ী দিয়ে আমি কোথাও যেতে পারিনা। লং ড্রাইভ করতে ভালো লাগেনা। এক সময় কথা নেই বার্তা নেই লংড্রাইভে বেরিয়ে পড়তাম। এখন বয়স বেড়েছে, লং ড্রাইভে যেতে হলে সংঙ্গী লাগে। স্ত্রী নিয়ে কোথাও যাওয়ার মানে হলো একশ কথার উত্তর দিতে হয়। সেন্টপাংক্রাসে গেলেই মনে পড়ে ইউরোপরে কথা। চ্যানেল আইর বদৌলতে ইউরোপের অনেক দেশেই আমি গিয়েছি। এ ষ্টেশনটা আমি বড় বেশী ব্যবহার করেছি। প্যারিসে অসংখ্যবার গিয়েছি। প্যারিসের গার্দানাত ষ্টেশন আমার বড় পরিচিত। প্রথম গিয়েছিলাম চ্যানেল আই ইউরোপের তৎকালীন প্যারিস প্রতিনিধি বিশিষ্ট সাংবাদিক এম এ হাশেমের আমন্ত্রনে প্যারিসে উদীচীর একটি অনুষ্টানে। তারপর যে কতবার গিয়েছি হিসেব নেই। সেন্টপাংক্রস ষ্টেশনে যাওয়ার পর আবার তোফায়েল খান ফোন করে বললেন লেখা দেন তাড়াতাড়ি। দেশ কোন দিকে যাচ্ছে? বললাম ওয়ান ইলেভেনের দিকে বোধহয়। অবশ্য একবার ওয়ান ইলেভেনের কারনে আওয়ামীলীগ ১০ বছর ক্ষমতায়। এখন যদি আবার ওয়ান ইলেভেন আসে তাহেল কি বিএনপি আসবে? বিএনপি আসলে হয়তো আরো ১০ বছর। কিন্তু বিএনপিকে তো ক্ষমতায় দেখতে চায় না প্রতিবেশী দেশ ভারত। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান থেকে যেটা বুঝতে পেরেছি সেটি হচ্ছে শেখ হাসিনাকে সরিয়ে তারেক জিয়া সাহেবকে তারা ক্ষমতায় দেখতে চায়না। বিশেষ করে ভারত। ১০ ট্রাক অস্ত্র তো কাল হয়ে দেখা দিয়েছিল বিএনপির জন্য। তা ছাড়া ষ্টাবলীষ্টমেন্ট ম্যাডাম খালেদা জিয়াকে যত সহজে মেনে নিবে তত সহজে তারেক রহমান সাহেবকে মানবেনা। এটা যে ম্যাডাম জিয়া বুঝেননা তা কিন্তু না। তিনি সবই বুঝেন। কিন্তু ছেলের কাছে তিনি বড় অসহায়। বাংলাদেশের রাজনীতির জীবন খাতার শুন্য পাতায় ওয়ান ইলেভেন যুক্ত হয়েছিল এক আর্শীবাদ হিসেবে। আওয়ামীলীগ বা দেশের রাজনীতির যারা পন্ডিত তাদের অনেকেই বলেন ওয়ান ইলেভেন ব্যর্থ। আমি ব্যর্থ বলিনা। ওয়ান ইলেভেন সফল ছিলনা, ছিলনা ব্যর্থ, তবে সার্থক ছিল। সফলতার সাথে স্বার্থকতার দুরত্ব যোজন মাইলের। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব স্বার্থক ছিলেন কিন্তু তিনি সফল ছিলেননা। এ পৃথিবীতে বেশীর ভাগ ক্ষণজন্মা রাজনীতিবীদ অথবা নেতা সার্থক ছিলেন । সফল ছিলেননা। নেনসেল মেন্ডালা সার্থক ছিলেন সফল ছিলেননা। এ সব হচ্ছে আধ্যাত্মিক কথাবার্তা। অথবা পান্ডিত্য জাহিরের এক অপচেষ্টা। আমি আমার লেখায় পান্ডিত্য জাহির করতে চাইনা। বক্তব্য সহজ সরল এবং সাবলীল ভাষায় তুলে ধরতে চাই। ওয়ান ইলেভেনের কথা জাতি স্বরন রাখবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ অথবা বিএনপির ক্ষমতায় থাকাটাকে কেউ মনে রাখবেনা। তারা ক্ষমতায় থেকে কি করেছেন? জাতীকে উপহার দিয়েছেন প্রতিহিংসার রাজনীতি!! ওয়ান ইলেভেন আজ কেন বার বার মানুষের মনের মধ্যে উকি দেয়? দেশের যে রাজনৈতিক অবস্থা মানুষ ওয়ান ইলেভেনকে স্বাগত জানাতে চায়,জানানোর জন্য প্রস্তুত। আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালের নির্বাচনে যা করেছে তা কি দেশের মানুষের চিন্তার মধ্যে ছিল? বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দল ৭৫ এর পর থেকে ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে ছিল। কি আওয়ামীলীগ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল? হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে বলেছিলেন সংবিধান রক্ষার নির্বাচন এটি, শীঘ্রই মধ্যবর্তী নির্বাচন হবে। তারপর বঙ্গপসাগরের জল আটলান্টিক পাড়ি দিল। শেখ হাসিনা মরিয়া হয়ে উঠলেন ক্ষমতায় থাকার জন্য। থাকলেন তিনি। হঠাৎ সিনহা সাহেবের এক রায়ে সব উলট পালট হয়ে গেল? সিনহা সাহেবকে এমন কোনো মন্ত্রী এমপি নেই যে অকথ্য ভাষায় গালি দেননি। কি অপরাধ করেছিলেন তিনি? ষোড়শ সংশোধনীতে কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে গেল? ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়েছে এটাই তো সত্য। সত্য মেনে নেয়াই কি উত্তম নয়? মতিয়া চৌধুরীর মত মহিলা যখন অকথ্য ভাষায় সিনহা সাহেবকে গালি দেন তখন বলতে হয় “ধরনী দ্বিধা হও” । এই ভদ্র মহিলা কি নিজেকে আয়নায় দেখেন না? শুধু মতিয়া চৌধুরী কেন এমন কেউ বাকী ছিলেননা সিনহা সাহেবকে গালি দেয়ার। এখন কি সব শেষ হয়েছে? বিচার বিভাগের শেষ প্যারাগটা কি আওয়ামীলীগ মারতে চায়? আমি অবাক হয়েছি আওয়ামী দালাল সাংবাদিকদের দালালী দেখে!! অনেকেই আমাকে বলেছেন আপনি নাম ধরছেনননা কেন? এ দাললা সাংবাদিকদের নাম প্রকাশ করুন। আমি বলেছি এখনই উপযুক্ত সময় নয়। আর ওদের নাম প্রকাশ করে কি হবে? সিলেটি ভাষায় একটি ফ্রেইজ রয়েছে সেটি হচ্ছে“ যে মহিলা রাস্তার পাশে জমিনের পাশে টয়লেট করছে তার কোনো লাজ লজ্জা নেই, যে দেখছে তারই লজ্জা হচ্ছে। দালাল সাংবাদিক যারা তাদের কি লজ্জা শরম আছে? থাকলে কি আর দালালী করতো? প্রিয় পাঠক আমি কামনা করিনা ওয়ান ইলেভেনের, কিন্তু দেশের যে অবস্থা তাতে মনে হয় আরেকটি ওয়ান ইলেভেন অবশ্যাম্ভাবী হয়ে উঠছে।
(দুই) বাংলাদেশের কোনো প্রভু নেই বন্ধু আছে এটি হচ্ছে আমাদের তথাকথিত রাজনীতিবীদদের একটি সন্তা শ্লোগান। পৃথিবীতে বহু পলিটিক্যাল ব্লাফ আমি শুনেছি। শুনতে শুনতে এ পর্যন্ত এসেছি। যেমন বৃটেনে আছে ইকুয়্যলটি। যেমন আমি বৃটিশ। কোন ক্যটাগরির বৃটিশ আমি জানিনা। কোনো ফ্রম ফিলাপ করতে হলে সেখানে লিখা থাকে এথনিসিটি কি? বাংলাদেশী, পাকিস্তানী, ইন্ডিয়ান, না আফ্রো ক্যারাবিয়ান ইত্যাদি। এ সব এথনিসিটির বেড়াজালে আমার মত বৃটিশ আবদ্ধ। বাংলাদেশের তিন-টন ট্রাকের মধ্যে লেখা থাকে এ ট্রাকটি ইসলামী ব্যংক ঢাকা ব্রাঞ্চ এর কাছে দায়বদ্ধ। আমি বাংলাদেশী হিসেবে কার কাছে দায়বদ্ধ? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাননীয় পররাষ্টমন্ত্রী জবাব দিবেন কি? আমি ইন্ডিয়ার কাছে দায়বদ্ধ না চীনের কাছে? না আমেরিক্রা কাছে? বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে পাকিস্তানীদের কাছে দায়বদ্ধ থাকে বাংলাদেশ। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলে ইন্ডিয়ার কাছে দায়বদ্ধ থাকে বাংলাদেশ। বর্তমানে ইন্ডিয়া না চীনের কাছে আমরা দায়বদ্ধ আমি জানিনা। জানতে চাই।
সে দিন চ্যানেল আই এর তৃতৃীয় মাত্রার টক শো দেখছিলাম। সেখানে অতিথি হিসেবে ছিলেন তিনজন। ব্যারিষ্টার মঈনুল হোসেন, আওয়ামলীগের সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু, ও একজন সাবেক এম্বাসেডর। ব্যারিষ্টার মঈনুল হোসেন সাহেব বলেছিলেন ডাল ভাত খেয়ে ডিপ্লোমেসি হয়না। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কথা। ২০০৮ সালে দিপু মনি যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন আমি তখন একটি কলাম লিখেছিলাম দৈনিক আমাদের সময়ে, নাঈমুল ইসলাম খান সাহেব আমার সে লেখা ছাপেননি। হেডিং ছিল “দীপু মনি পররাষ্টমন্ত্রী ওয়ার্ল্ড বিগেষ্ট জোক“। নাঈম ভাই এর যুক্তি ছিল নতুনদের জায়গা করে দিতে হবে। তারও আগে ১৯৯৬ ইংরেজীর দিকে আওয়ামলীগ ক্ষমতায় ছিল। ৯৮ অথবা ৯৯ সালের দিকে স্কটল্যান্ডের এডিনভরায় কমনওয়েলথ কনফারেন্স ছিল সে কনফারেন্সে তৎকালীন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার যখন গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখছিলেন তখন আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন ব্যাক্তিত্ব সাবেক পররাষ্টমন্ত্রী মরহুম আব্দুস সামাদ আজাদ সাহেব ঘুমের কারনে বার বার হাই তুলছিলেন। সাদা এক মহিলা জিজ্ঞাস করেছিলেন হো ইজ হি? বলা হয়েছিল হি ইজ এ ফরেনমিনিষ্টার অব বাংলাদেশ। সাদা মহিলা বলেছিলেন ইফ হি ইজ এ ফরেনমিনিষ্টার অব বাংলাদেশ আই ফিল সরি ফর দ্য বাংলাদেশী ন্যাশন। আমি তখন লন্ডন থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক সুরমা পত্রিকায় লিখেছিলাম “সামাদ আজাদ যে দেশের পররাষ্টমন্ত্রী সে দেশের জন্য বড় দুঃখ হয়”। পরবর্তীতে লন্ডনে আওয়ামলীগ নেতা আব্দুল আলী রউফ সাহেবের পূর্ব লন্ডনের ব্রিকলেইনের রেষ্টুরেন্টে সামাদ আজাদ সাহেবের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলাম। কারন রেষ্টুরেন্টের মালিক সম্পর্কে আমার মামা, আমি কি কারনে গিয়েছিলাম মামার সাথে দেখা করতে। মামা তখন সামাদ সাহেবের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। সেদিনের কমনওয়েলথ কনফান্সের ঘটনা আরো ছিল। আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তখনও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। বৃটেনের নামকরা টিভি সাংবাদিক প্রয়াত ডেভিড ফ্রষ্ট শেখ হাসিনাকে দেখে আমার এক বন্ধুকে জিজ্ঞাস করেছিলেন দিস লেডি রিলেটেড টু শেখ মুজিবুর রহমান? বন্ধু বলেছিলেন ইয়েস। ডেভিড ফ্রষ্ট তখন আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন শেখ হাসিনার সাক্ষাতকার নিবেন। আজকের যিনি পররাষ্টমন্ত্রী স্মৃতি যদি আমার সাথে প্রতারনা না করে তাহলে হয়তো তিনিই ছিলেন লন্ডনে বাংলাদেশের হাইকমিশনার। তিনি সেদিন কি বলেছিলেন সে ইতিহাস আজ এখানে না-ই-বা লিখলাম। কারন লিখলে অনেকের ক্ষতি হয়ে যাবে!!!!
প্রিয় পাঠক বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতিটা কি? অনেককেই জিজ্ঞাস করেছি বলেছেন সবার সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে কোনো শুক্রতা না। এটা কি পররাষ্ট্রনীতি? এ নীতি কি পৃথিবীর আর কোনো দেশ ফলো করে? সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডঃ কামাল হোসেন সাহেবকে আমার টক শো তে জিজ্ঞাস করেছিলাম বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি কি? লিখিত কি কোনো পররাষ্ট্রনীতি আছে? কামাল সাহেব উত্তর দিয়েছিলেন তিনি লেখার সময় পাননি, বলেছিলাম তাহলে কি সারাজীবনে এক সংবিধান রচনা করেছেন? কামাল সাহেব বলেছিলেন সব আমরা করবো কেন? নতুন প্রজন্মের সন্তানরা কিছু করুক। সে যাক কামাল হোসেন সাহেব হয়তো সময় পাননি, তারপরে তো আরো অনেকেই পররাষ্টমন্ত্রী হয়েছেন সামাদ সাহেব তো দীর্ঘদিন ছিলেন। ছিলেন ক্যারিয়ার ডিপ্লোমেট মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, বিএনপির সময় ছিলেন মোবাইল ব্যবসায়ি মোর্শেদ খান, কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান সাহেব ও ছিলেন। ইদানিং জাতিসংঘের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ডঃ মোমেন সাহেবকেও জিজ্ঞাস করেছি কোনো সদত্তর পাইনি। বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আুলী সাহেব অথবা নতুন প্রজন্মের পররাষ্ট্র-প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার সাহেবদের কি সময় হবে পররাষ্ট্র-নীতিটা লিখার? আমি জানিনা। এটা যদি পররাষ্ট্রনীতি হয় সবার সাথে বন্দুত্ব কারো সাথে শুত্রুতা নয় তাহলে বলতে হবে বাঙালী জাতির কুষ্ট রোগ হয়েছে। এটি একটি আইনসাইন্টিফিক কথা বার্তা। জাসদের ভাষায় বৈজ্ঞানীক সমাজতন্ত্রের পরিবর্তে অবৈজ্ঞানিক পররাষ্ট্রনীতি। এটি নাকি বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন। বঙ্গবন্ধু যদি এটি বলে থাকেন তাহলে তৎকালীন সময়ে তিনি বলেছিলেন। তখন ছিল ১৯৭২ সাল। তখন তো মোবাইল ছিলনা ইন্টারন্যট ছিলনা। লেপটপ কম্পিউটার কিছুই ছিলনা। এখন সময় বদলেছে, যুগের পরিবর্তন হয়েছে। এখন ভাইয়ে ভাইয়ে বনিবনা হয়না, স্বামী স্ত্রী বনিবনা হয়না। আমাদের বার্মার সাথে হচ্ছেনা, তাহলে এই বস্তা পঁচা পররাষ্ট্রনীতির ডায়লগটি প্রত্যাহার করতে হবে। নতজানু পররাষ্ট্রনীতি থেকে দেশ বেরিয়ে আসতে হবে। অযোগ্য অপদার্থ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কবল থেকে এবং প্রথম শ্রেনীর অপদার্থ কিছু আমলা হাইকমিশনার এম্বেসেডরদের কবল থেকে পররাষ্টমন্ত্রনালয়কে উদ্ধার করতে হবে।
সে যাক প্রিয় পাঠক ২০০১-২ সালে আমি তখন লন্ডনের টাওয়ার হ্যমলেটস কলেজের পারটাইম ছাত্র । পলিটিক্সের ক্লাসে আমেরিকার এক ভিজিটর লেকচারার আমাদের ক্লাস নিচ্ছিলেন। তিনি জিজ্ঞাস করেছিলেন, কেউ কি বলতে পারবা- বৃটিশ ও আমেরিকান ফরেন পলিসি কি ? আমি তখন বোকার মত বলে উঠেছিলাম বৃটিশ এন্ড আমেরিকান ফরেন পলিসি গ্লোবাল ইকনমিক এন্ড পলিটিক্যাল টেররিজম। লেকচারার হা করে আমার দিকে থাকিয়ে বলেছিলেন আর ইউ শিউর? আমি বলেছিলাম “ও ইয়েস” দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বৃটেনও আমেরিকা এই অলিখিত ফরেন পলিসি চালিয়ে যাচ্ছে। দেশ স্বাধীনের পর থেকে বাংলাদেশের ফরেন পলিসি বঙ্গবন্ধুর এই ডায়লগ দিয়েই (সবার সাথে বন্ধুত্ব) কাঠিয়ে দিয়েছে ৪৬ বছর। একটি যুগাপোযুগী পররাষ্ট্রনীতি দরকার বাংলাদেশের। আর যিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হবেন তারও দরকার কুটনৈতিক দক্ষতা। আমি বলছিনা মঙ্গলগ্রহ থেকে কাউকে হায়ার করে নিয়ে আসতে। আইকে গুজরাল, সাহেবজাদা ইয়াকুন খান, ইরাকের তারিক আজীজ এ পর্যায়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদেরকে অন্তত ফেইস করতে পারে এমন একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের দরকার। এ ক্যাটাগরীর পররাষ্টমন্ত্রী ছিলেন হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী। হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী পরে আগে যারা পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন তারা না দিতে পেরেছেন বাংলাদেশকে কিছু ,না দিতে পেরেছেন নিজেকে। সাবেক এক পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো বাফার ষ্টেইট বুঝেননি।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে তৌফিক দান করুন। “আমীন”
লেখক সভাপতি ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি বাংলা ষ্টেটমেন্ট ডট কম
ব্যবস্থাপনা পরিচালক চ্যানেল আই ইউরোপ