আওয়ামী লীগ মিডিয়া সন্ত্রাসে নেমেছে: রিজভী
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:২৫:৫৬,অপরাহ্ন ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ | সংবাদটি ২৩৫ বার পঠিত
নিউজ ডেস্ক:: আওয়ামী লীগ মিডিয়া সন্ত্রাসে নেমেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার নিশ্চিত ভরাডুবির আশঙ্কায় অস্থির ও বেসামাল হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে অনর্গল মিথ্যাচার ও প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ, তারা মিডিয়া সন্ত্রাসে নেমেছে। তারা প্রতিবেশী একটি দেশকে নিজেদের পক্ষে টানতে, অনুকম্পা ও সমর্থন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আমাদের নেতাদের নামে আজগুবী ভিত্তিহীন কথা ছড়াচ্ছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, পাকিস্তানি দূতাবাসে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাক্ষাৎ ও গোপন বৈঠক করেছেন। এই অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদ জানিয়ে পাকিস্তান হাইকমিশন রোববার সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছে। লিখিত বার্তায় তারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে খবর বেরিয়েছে তা ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছে। পাকিস্তানের কোনো কূটনীতিকের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক হয়নি।
তিনি বলেন, মিথ্যা কুৎসা প্রচারণায় বিকারগ্রস্ত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। গোষ্ঠী স্বার্থে দেন-দরবার করার ঐতিহ্যই হচ্ছে আওয়ামী লীগের। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী সাহেবই তো ৭ দিন পাকিস্তানে কাটিয়ে আসলেন। এই ধরনের মিথ্যাচার থেকে আওয়ামী লীগ ও তাদের অর্থপুষ্ট দালাল মিডিয়া বিরত থাকবে বলে আমরা আশা করি। আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও তাদের মদদপুষ্ট কিছু দালাল মিডিয়াকে বলবো-বিকৃত অপপ্রচার না চালিয়ে আওয়ামী লীগের গোপন দেন-দরবারগুলি প্রকাশ করলে জাতি উপকৃত হবে।
রিজভী বলেন, ভয়ঙ্কর গোপন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন জেলা প্রশাসক তথা রিটার্নিং অফিসাররা। পরিকল্পিত নীলনকশার মাধ্যমে অবৈধ সরকারের দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য লোক দেখানো নির্বাচন আয়োজনে ফন্দি-ফিকির করছে। ক্ষমতাসীনদের মাষ্টারপ্ল্যান অনুযায়ী প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রহসনমূলক নির্বাচনী ছক তৈরি করে এগিয়ে চলছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিদিন জেলা প্রশাসকরা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করছেন। ভোট ডাকাতি প্রস্তুতির শলাপরামর্শ করছেন। আমরা বিশ্বস্তসুত্রে জানতে পেরেছি, রোববার সকল জেলার প্রশাসকরা স্ব স্ব এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ডেকে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে চারটি বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এগুলো হলো:
১. সুষ্ঠু ভোট হলে বিএনপি বিজয়ী হয়ে যাবে, তাই এই সরকারকে আবারও ক্ষমতায় রাখতে হলে বুঝেশুনে কাজ করতে হবে। যেকোন মূল্যে এই সরকারকে ক্ষমতায় আনতে হবে। কাজেই এদিক ওদিক করার মতলব থাকলে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন।
২. মাঠে কাজ করবে পুলিশ ও র্যাব। আপনাদের দায়িত্ব হলো তাদের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করা এবং সহযোগিতা প্রদান।
৩. প্রিজাইডিং অফিসারদের নিরাপদে কন্ট্রোল রুমে আসার ব্যবস্থা করবেন।
৪. প্রিজাইডিং অফিসারদের ব্ল্যাঙ্ক সিগনেচার নিয়ে রাখবেন। সেটা সময়মতা কাজে লাগানো হবে। এই সরকারকে যে কোন প্রকারে হোক ক্ষমতায় রাখতে হবে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আমরা বলতে চাই-সাজানো প্রশাসন ও আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। জনপ্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ঢেলে সাজাতে হবে এবং দলবাজ কর্মকর্তাদের নির্বাচনী মাঠ থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। এই অবৈধ সরকারকে কোনো সহযোগিতা করবেন না। আপনারা এদেশের সন্তান। নিরপেক্ষ ভুমিকা পালন করুন।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন, ভারতের অন্যতম বাংলা পত্রিকা দৈনিক যুগশঙ্খ রোববার উলফার কমান্ডার ইন চিফ পরেশ বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়ার একটি সাক্ষাতকার ছেপেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘এক যুগেরও বেশি সময় পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ক্লিনচিট দিলো ভারতের স্বাধীনতাকামী সংগঠন ‘ইউনাটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফা)’।
বিএনপি-জামায়াত আমলে উলফা নেতাদের আশ্রয় এবং সহযোগিতার যে অভিযোগ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ছিল তা মিথ্যা, বানোয়াট ও কল্পনাপ্রসূত বলে উল্লেখ করেছেন উলফার কমান্ডার ইন চিফ পরেশ বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়া।পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান আলোচনাপন্থী উলফার সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের অনেক নেতা আছে যাদের আমাদের বিপ্লবের প্রতি সমর্থন ছিল ও আছে। কিন্তু তারেক জিয়ার সঙ্গে আমাদের কোনো যোগযোগ বা সম্পর্ক ছিল না।
রিজভী বলেন, গত দশ বছর ধরে আওয়ামী লীগ নেতারা তারেক রহমানকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যে কাল্পনিক ও বানোয়াট গালগল্পের ঢালাও প্রচার করে এসেছে সেটি যে ডাহা মিথ্যা অভিযোগ ছিল তা সুষ্পষ্টভাবে প্রমানিত হলো উক্ত প্রতিবেদনে।
আজ সত্য উন্মোচিত হওয়ার পর আমরা বলবো-তারেক রহমানকে ভিলেন সাজাতে তার সাথে পরেশ বড়ুয়া ও অনুপ চেটিয়ার ঘনিষ্ঠতার যে মহাকাব্য বিগত এক দশক ধরে রচনা করা হয়েছে তার জন্য আওয়ামী লীগ প্রধানসহ নেতাদের দু:খ প্রকাশ করতে হবে।