কিশোরীর ‘উপযুক্ত পোশাক’ নির্ধারণ করেছে পাঠ্যপুস্তক!
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৪০:১৬,অপরাহ্ন ১০ জানুয়ারি ২০১৯ | সংবাদটি ৩০০ বার পঠিত
নিউজ ডেস্ক:: সাদা-কালো সালোয়ার-কামিজ আর সাদা ওড়না গায়ে এক কিশোরীর ছবি। ছবির নিচে লেখা, ‘উপযুক্ত পোশাকে কিশোরী’। এই ছবির পাশেই লেখা, ‘মেয়েরা তাদের দৈহিক পরিবর্তন অন্যরা দেখে বিরূপ মন্তব্য করতে পারে বলে ভয়ে ভয়ে থাকে। দেহের পরিবর্তন বেশি চোখে পড়ে বলে মেয়েরা অনেক সময় সামনে ঝুঁকে হাঁটে। উপযুক্ত পোশাক পরিধান করলে এ সংকোচ দূর করা যায়।’
২০১৯ শিক্ষাবর্ষের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের ষষ্ঠ শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বইয়ের ‘কৈশোরকালীন পরিবর্তন ও নিজের নিরাপত্তা রক্ষা’ বিষয়ক সপ্তম অধ্যায়ে কিশোরীদের দৈহিক পরিবর্তন নিয়ে সংকোচ দূর করতে উপযুক্ত পোশাক পরিধানের সুপারিশ করা হয়েছে।
তবে নারী, শিশু ও শিক্ষা অধিকার নিয়ে কর্মরত ব্যক্তিরা পাঠ্যপুস্তক এভাবে ‘উপযুক্ত পোশাক’ নির্ধারণ করে দিতে পারে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁরা বলছেন, একজন কিশোরীর উপযুক্ত পোশাক কোনটি, তা পাঠ্যপুস্তকে কেন থাকবে? পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করে বিষয়টিতে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ কতটা যুক্তিসংগত?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ বলেন, এভাবে কিশোরীর উপযুক্ত পোশাক নির্ধারণ করে নারীর শরীর যে একটি বাড়তি সমস্যা, তা চিহ্নিত করে দেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘ মেয়াদে কিশোরীদের মাথায়ও এটা ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।পাঠ্যপুস্তকে এ ধরনের বিষয় বা পাঠ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে জেন্ডার বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হয়েছে কি না, তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন।
আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের জেন্ডার উপদেষ্টা উম্মে সালমা বলেন, ‘কৈশোরকালীন পরিবর্তন ও নিজের নিরাপত্তা রক্ষা’ বিষয়ক অধ্যায়ে কিশোরীর উপযুক্ত পোশাকের বিষয়টি একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক। এ ধরনের বিষয় উত্থাপন করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। এভাবে সংকোচ দূর করা বা নিরাপত্তা দেওয়ার অজুহাত একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সূত্র: প্রথম আলো