বিএনপিকে সংসদে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৫২:০৫,অপরাহ্ন ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ | সংবাদটি ২৩২ বার পঠিত
নিউজ ডেস্ক:: আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির চরিত্র শোধরায়নি, তাই বাংলার জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। তারপরও যে কয়টা আসনে তারা জিতেছে, গণতন্ত্রের স্বার্থে তাদের সংসদে আসা প্রয়োজন।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে শনিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের উপদেষ্টা পরিষদ এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের যৌথ সভার সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ মন্তব্য করেন।
যৌথ সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তাঁর বক্তব্যের শুরুতে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোক প্রকাশ করেন। যৌথ সভায় শোক প্রস্তাব পড়েন দলের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ। এর আগে ২০১৮ সালের ৬ জুলাই গণভবনে আওয়ামী লীগের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল পলাতক আসামিকে দিয়ে রাজনীতি করতে গেলে সেখানে কী রেজাল্ট হয়, সেটাই তারা (বিএনপি) পেয়েছে।তা-ও হতো না,যদি তারা নির্বাচনে যে প্রার্থী দিয়েছে, সেই প্রার্থী নিয়ে মনোনয়ন-বাণিজ্যটা না করত। তাহলে আরও ভালো ফল তারা করতে পারত। এ থেকে তো মানুষ জানতে পেরেছে, এদের চরিত্রটা কী?’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এসেছি, আমরা অগ্নিপরীক্ষা দিয়ে এসেছি। জনগণের বিশ্বাস, আস্থাটা যে কারণে আমাদের ওপরে এসেছে। আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা করি জনগণের কল্যাণে, জনগণের স্বার্থে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমরা এইটুকু বলতে পারি যে আমরা যখন সরকারে এসেছি, আমরা দেশের জন্য কাজ করেছি। জনগণের জন্য কাজ করেছি। আমরা কিন্তু কাউকে কোনো হয়রানি করতে যাইনি।’ তিনি বলেন, ‘জনগণ আজকে উপলব্ধি করতে পারে এবং আমরা উন্নয়নের যে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি, সব সময় লক্ষ্য করি গ্রামের মানুষ, তৃণমূলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে। তারা একটু সুন্দর জীবন পাবে, তারা একটু উন্নত জীবন পাবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের জীবনমান উন্নত হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা প্রতিটি কর্মসূচি নিয়েছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে সব থেকে লক্ষণীয় বিষয় ছিল, মানুষের মধ্যে একটা স্বতঃস্ফূর্ততা এবং ভোট দেওয়ার জন্য আগ্রহ। বিশেষ করে এ দেশের তরুণ সমাজ, যারা প্রথম ভোটার এবং নারী সমাজের। এবারের নির্বাচনটা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে হলেও কিছু কিছু জায়গায় বিএনপি-জামায়াত জোট মিলে কোথাও ব্যালট বাক্স ছিনতাই করতে গেছে, কোথাও তারা নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করেছে এবং তাদের এই অপকর্মের কারণে বেশ কিছু প্রাণহানি ঘটেছে, যার মধ্যে আমাদের দলীয় নেতা-কর্মীরা অনেক আছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার কাছে ঘটনাগুলো লিপিবদ্ধ করা আছে।
আপনারা মাঠঘাটে দেখেছেন, টেলিভিশনে দেখেছেন, কীভাবে তারা (বিএনপি-জামায়াত) প্রচেষ্টা চালিয়েছিল কোনোমতে নির্বাচনটা যেন বানচাল করা যায়। কিন্তু তা তারা পারেনি। এখন বিএনপি নির্বাচনে হেরেছে, এই দোষটা তারা কাকে দেবে? দোষ দিলে তাদের নিজেদের দিতে হয়। কারণ একটি রাজনৈতিক দলের যদি নেতৃত্ব না থাকে, মাথাই না থাকে, তাহলে সেই রাজনৈতিক দল কীভাবে নির্বাচনে জয়ের কথা চিন্তা করতে পারে?’
নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি-জামায়াতের অপতৎপরতার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩ থেকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি-জামায়াত জোট অগ্নি-সন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করেছে। এটা দেশের মানুষ কখনো মেনে নিতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে আবার আমরা সরকার গঠন করি।
আমাদের সৌভাগ্য যে আমরা একটানা ১০ বছর হাতে সময় পেয়েছিলাম, যার ফলে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটা উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় আমরা জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করতে পেরেছি, তার ফলে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও জয়লাভ করেছি।’আওয়ামী লীগ আসলে দেশের উন্নতি হবে। এই উপলব্ধিটা তাদের মধ্যে ব্যাপকভাবে দানা বেঁধে যায়।’ তাই টানা তৃতীয় মেয়াদে জয়ী হয়ে সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়ার জন্য দেশের সব স্তরের মানুষের সমর্থনের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ এবং ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।