পুষ্টি উপাদানের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়টি হলো প্রোটিন। উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবারের কত ব্যবস্থাই না করা হয়েছে। রেস্টুরেন্টের উচ্চ প্রোটিনের মেনু থেকে শুরু করে দোকানের প্রোটিন বার অহরহ খায় মানুষ। আমেরিকার একটি রিসার্চ ফার্ম রকভিল ম্যারিল্যান্ড তাদের জরিপে জানায়, ৬২ শতাংশ মানুষ দৈনিক খাদ্যতালিকায় প্রোটিনকে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় খাবার বলে মনে করে। বিজ্ঞানীদের মতে, প্রোটিন গ্রহণ ভালো। কিন্তু অতিরিক্ত প্রোটিন খাওয়া মোটেও ভালো নয়।
প্রোটিন তৈরি হয় অ্যামিনো এসিড থেকে। যখন প্রোটিন খাওয়া হয় এবং তা ভেঙে যায়, তখন দেহে শক্তি উৎপন্ন হয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু মেরামত হয়। আসলে দেহের সব অংশেই প্রোটিন পাওয়া যায়। এমনকি নখ এবং চুলও প্রোটিন দ্বারা গঠিত।
আমেরিকান একাডেমি অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়েটিকস-এর মুখপাত্র হিদার ম্যাঙ্গেরি জানান, পরিমাণমতো প্রোটিন সুস্বাস্থ্যের শর্ত। পেশির গঠন এবং ভালো পারফরম্যান্সের জন্যে প্রোটিন প্রয়োজন। তবে গুণগতমানসম্পন্ন প্রোটিন আসতে পারে মাংস ও পশুজাত খাদ্যপণ্য থেকে। কিন্তু বহু মানুষ প্রক্রিয়াজাত পণ্যের মাধ্যমে প্রোটিন গ্রহণ করছেন। এতে প্রোটিন গ্রহণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণহীন হচ্ছে। কোনো পণ্যে যদি প্রোটিনের কথা লেখা থাকে তবে মানুষ ধরে নেন এটাই ভালো খাবার। কিন্তু এসব খাবার যখন প্রোটিনের উৎস, তখন অতিরিক্ত প্রোটিন হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে।
এখন আপনার কতটুকু প্রোটিন প্রয়োজন তা নির্ভর করে দেহ, জীবনযাপন, পরিশ্রম ইত্যাদিন ওপর। দেহের প্রতি কেজি ওজনের জন্যে ৮ গ্রাম প্রোটিন দরকার। তবে যারা নিরামিষভোজী তাদের প্রোটিনের অভাব ঘটতে পারে। এ কারণে তাদের বিন, বাদাম ইত্যাদি উদ্ভিজ্জ প্রোটিন বেশি বেশি খেতে হবে।
গর্ভবতী এবং শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের প্রতিদিন বাড়তি ২৫ গ্রাম প্রোটিন দরকার। যাদের ক্যান্সার আছে এবং যারা ওজন বৃদ্ধি করতে চান, তাদেরও সম পরিমাণ প্রোটিন দরকার।
কিছুটা বেশি খেলে সমস্যা নেই। কিন্তু অতিরিক্ত প্রোটিন কিডনিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ডিহাইড্রেশন ঘটতে পারে। ক্যালসিয়াম ক্ষয়ের কারণ হতে পারে। দিনে প্রতিবারই খাবারের সঙ্গে প্রোটিন খাওয়া ভালো। কিন্তু একবেলা যদি বেশি প্রোটিন খেয়ে ফেলেন, তবে পরের বেলা বেশি খাবেন না। প্রতিদিনের প্রোটিন ভারসামস্যপূর্ণভাবে খেতে হবে।