আন্তর্জাতিক ডেস্ক,
অস্ট্রিয়ায় ক্ষমতাসীন জোট সরকার জনসম্মুখে পুরো মুখ ঢেকে রাখা নিকাব নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। সোশাল ডেমোক্রেট ও রক্ষণশীল পিপলস পার্টির মধ্যে কয়েক সপ্তাহ আলোচনার পর এই সমঝোতা হয়েছে।
অস্ট্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্কুল কলেজ, আদালত এরকম জায়গায় নিকাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে শরিক দলগুলোর সঙ্গে আমরা একমত হয়েছি। এছাড়াও যারা সরকারি চাকরি করেন, তাদের মাথায় স্কার্ফ বা হিজাব কিংবা অন্যান্য ধর্মীয় প্রতীক পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও বিবেচনা করছে সরকার।
এই সিদ্ধান্তকে অতি দক্ষিণপন্থী ফ্রিডম পার্টির উত্থান প্রতিহত করার চেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। গত মাসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফ্রিডম পার্টির প্রার্থী সামান্য ব্যবধানে পরাজিত হন।
নতুন সরকার দেশটিতে বেশ কিছু সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। তারই একটি হলো ইসলামিক নিকাব ও বোরকা নিষিদ্ধের পরিকল্পনা। অস্ট্রিয়ার জোট সরকার আরো যেসব বিষয়ে সম্মত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে সাবেক জিহাদিদের গায়ে ইলেকট্রনিক ট্যাগ না লাগানো এবং বিদেশি শ্রমিকের সংখ্যা কমিয়ে আনা। এসব পরিকল্পনা আরো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরতে হবে এবং কার্যকর হওয়ার আগে পার্লামেন্টে অনুমোদিত হতে হবে।
সরকার বলছে, ‘মুক্ত সমাজের ব্যাপারে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর জন্যে প্রয়োজন খোলামেলা যোগাযোগ। প্রকাশ্য স্থানে পুরো মুখ ঢেকে রাখার পর্দাপ্রথা এর পরিপন্থী। একারণেই এসব নিষিদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।’
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অস্ট্রিয়ায় দেড়শো জনের মতো নারী নিকাব পরেন। তবে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে এর ফলে উপসাগরীয় দেশগুলো থেকে আসা নারী পর্যটকের সংখ্যা কমে যেতে পারে।
সরকারের মুখপাত্র অস্ট্রিয়ার এক সংবাদপত্রকে বলেন, ভিয়েনার কেন্দ্র থেকে শুরু করে স্কি করার জায়গাগুলোতেও এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।
ইউরোপের আরো কয়েকটি দেশেও এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।ফ্রান্স ও বেলজিয়াম ২০১১ সালে বোরকা নিষিদ্ধ করেছে। একই ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে এখন আলোচনা হচ্ছে হল্যান্ডের পার্লামেন্টেও। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেলও গতমাসে বলেছিলেন, পুরো মুখ ঢেকে রাখার নিকাব তার দেশেও নিষিদ্ধ হওয়া উচিত। আইনগতভাবে যেখানেই এটি করা সম্ভব সেখানেই তা করা হোক।
তবে অস্ট্রিয়ার সবশেষ এই সিদ্ধান্তকে দেখা হচ্ছে প্রতীকী পদক্ষেপ হিসেবে। সরকারের এক মন্ত্রী সেবাস্টিয়ান কুর্তজ বলেন, পুলিশ বাহিনী কিংবা স্কুলের মতো জায়গায় যারা কাজ করেন তাদের নিরপেক্ষ হিসেবে দেখতে পাওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
ইউরোপের অনেক দেশে এসব নিষিদ্ধ করা হলেও যুক্তরাজ্যে এখনও তা বিবেচনা করা হচ্ছে না।