ঢাকা ১০:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিজয়নগরে স্কুল শিক্ষিকাকে বেধড়ক পিটিয়ে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার লুটপাট “লন্ডনে ‘প্রবাসীদের ক্ষমতায়ন: অধিকার, স্বীকৃতি ও জাতি গঠন – একটি এনআরবি প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক সেমিনার ও ইফতার মাহফিল অনুষ্টিত বিশ্বনাথে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, যুবক গ্রেপ্তার সুনামগঞ্জে চলন্ত সিএনজিতে কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টা, আটক ২ ‘মানুষের উন্নয়নে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বারবার রক্ষা করেছেন খালেদা জিয়া’ জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকঃ দ্রুত নির্বাচনের দাবি বিএনপির “যুক্তরাজ্য যুবদলের সভাপতি আফজাল হোসেনকে ইলিয়াস পত্নী তাহসিনা রুশদির লুনার অভিনন্দন” বায়ান্নের ভাষা শহীদদের প্রতি নর্থইষ্ট বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদন প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে জয় লাভ করেন সোয়াবই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বালিকারা “সিলেট প্রদেশ প্রতিষ্ঠার দাবীতে লন্ডনে গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকের সভা অনুষ্ঠিত”

এবার নারী আইজিপি?

নিজস্ব প্রতিবেদক,

প্রশাসনিক উচ্চপদগুলোতে নারীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও এর বাইরে নয়। পুলিশ-বিজিবিতে নারীরা এখন কেবল ডেস্কে নন, কাজ করছেন মাঠ পর্যায়েও। পুলিশের ঊর্ধ্বতন পদেও এখন আছেন বেশ কয়েকজন নারী। সরকারের নানা সূত্রগুলো জানাচ্ছে, পুলিশ প্রধান হিসেবে একজন নারীকে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি ভাবনায় আছে।

১৯৯৬ সালেও বাংলাদেশে হাইকোর্টের কোনো বিচারক, সচিব এমনকি জেলা প্রশাসক পদে নারী ছিলেন না। কিন্তু গত দুই দশকে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে পুরোপুরি। বাংলাদেশকে এখন নারী জাগরণের দিক থেকে বিশ্বে উদাহরণ হিসেবেই ধরা হয়। রাজনীতির পাশাপাশি ব্যবসা, বেসরকারি চাকরি এমনকি নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পরিশ্রমও নারীরা করছেন অবলীলায়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সুশৃঙ্খল বাহিনীর প্রধান হিসেবে নারী দায়িত্ব পাননি।

বাংলাদেশে পুলিশ প্রধানের পদটিতে একজন কয় বছর থাকবেন-সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বিধান নেই। বর্তমান আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে এই পদে দায়িত্ব পালন করছেন। স্বাভাবিক নিয়মে তিনি ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অবসরে যাবেন।

শহীদুলের পর নতুন আইজিপি কে হচ্ছেন-তা নিয়ে নানা আলোচনা, জল্পনা কল্পনা আছে। বেশ কিছু কর্মকর্তার নাম নিয়ে বলাবলি হচ্ছে। এদের মধ্যে আছেন একজন নারী কর্মকর্তাও।

পুলিশে নারীদের মধ্যে সবচেয়ে উঁচু পদে আছেন ফাতেমা বেগম। তিনি বাহিনীটির অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (অর্থ) হিসেবে কাজ করছেন।
১৯৮৪ সালে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশে যোগ দেন ফাতেমা বেগম। প্রশিক্ষণ শেষে তিনি ১৯৮৬ সালের ২১ জানুয়ারি চাকরিতে স্থায়ী হন।

সারদা থেকে প্রশিক্ষণ শেষে সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) হিসেবে যোগ দেন ফাতেমা। বর্ণিল কর্মজীবনে ফাতেমা বেগম কাজ করেছেন অনেক স্থান ও অবস্থানে। সহকারী পুলিশ সুপার খাগড়াছড়ি সার্কেল, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার কমিশনার, পুলিশ টেলিকম, ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার হিসেবে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন তিনি।

দেশের বাইরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে তিনি আফ্রিকার সিয়েরালিয়নে কাজ করেছেন।

১ জানুয়ারি ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেন বর্তমান আইজিপি শহিদুল হক

পুলিশ সদরদপ্তরে সহকারী মহাপরিদর্শক (কল্যাণ), পুলিশ সুপার (স্পেশাল ব্রাঞ্চ), কমান্ড্যান্ট (এসবি ট্রেনিং স্কুল), পরিচালক (তদন্ত, র‌্যাব), পুলিশ সদর দপ্তর ডিআইজি (ট্রেনিং অ্যান্ড রিক্রুটমেন্ট), ডিআইজি (প্রশাসন ও অর্থ -এসবি), এবং অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক আইজিপি (পুলিশ সদর দপ্তর ) হিসেবেও কৃতিত্বের সাথে কাজ করেছেন ফাতেমা। ২০১৪ সালে তিনি পুলিশ স্টাফ কলেজর রেক্টর হিসেবে যোগ দেন। সব শেষে তিনি অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক অর্থ হিসেবে পুলিশ সদর দপ্তরে যুক্ত হন।

পুলিশের চাকরিরত অবস্থাতেই ফাতেমা অস্ট্রেলিয়া সরকারের বৃত্তি নিয়ে অ্যাডিলেইড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন।

পুলিশে নারী আইজিপির গুঞ্জনের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোনা মন্তব্য করতে চাননি। জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নিরোধ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘এ বিষয়ে কোন তথ্য আমার জানা নেই।’

তবে মন্ত্রণালয়ের অন্য একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, পুলিশে নারী প্রধানের বিষয়টি নিয়ে নানা পর্যায়ে কথা হচ্ছে, তবে এখনও সিদ্ধান্তে আসার মতো কোনো তথ্য নেই।

যোগাযোগ করা হলে ফাতেমা বেগম বলেন, ‘নারীরা এখন কোথায় খারাপ করছে? সব চ্যালেঞ্জিং পেশায় তারা এখন সাহসের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে।’

বাংলাদেশের সামাজিক বাস্তবতায় যদি কোনো নারীকে পুলিশের প্রধান করা হয় তাহলে সেটা কেমন হয়-জানতে চাইলে ফাতেমা বেগম বলেন, ‘বর্তমানে পুলিশে নারীরা তো ভালই করছেন। তাদের ভূমিকা মূল্যায়ন করলে তো বলাই যায় কোনো নারী যদি পুলিশ প্রধান হন, তাহলে তিনি ভালই করবেন। কারণ, পুলিশের পুরুষেরাও যে কাজ করেন, নারী সদস্যরাও একই দায়িত্ব পালন করে থাকেন।’

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বিজয়নগরে স্কুল শিক্ষিকাকে বেধড়ক পিটিয়ে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার লুটপাট

এবার নারী আইজিপি?

আপডেট সময় : ১২:৩৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক,

প্রশাসনিক উচ্চপদগুলোতে নারীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও এর বাইরে নয়। পুলিশ-বিজিবিতে নারীরা এখন কেবল ডেস্কে নন, কাজ করছেন মাঠ পর্যায়েও। পুলিশের ঊর্ধ্বতন পদেও এখন আছেন বেশ কয়েকজন নারী। সরকারের নানা সূত্রগুলো জানাচ্ছে, পুলিশ প্রধান হিসেবে একজন নারীকে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি ভাবনায় আছে।

১৯৯৬ সালেও বাংলাদেশে হাইকোর্টের কোনো বিচারক, সচিব এমনকি জেলা প্রশাসক পদে নারী ছিলেন না। কিন্তু গত দুই দশকে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে পুরোপুরি। বাংলাদেশকে এখন নারী জাগরণের দিক থেকে বিশ্বে উদাহরণ হিসেবেই ধরা হয়। রাজনীতির পাশাপাশি ব্যবসা, বেসরকারি চাকরি এমনকি নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পরিশ্রমও নারীরা করছেন অবলীলায়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সুশৃঙ্খল বাহিনীর প্রধান হিসেবে নারী দায়িত্ব পাননি।

বাংলাদেশে পুলিশ প্রধানের পদটিতে একজন কয় বছর থাকবেন-সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বিধান নেই। বর্তমান আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে এই পদে দায়িত্ব পালন করছেন। স্বাভাবিক নিয়মে তিনি ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অবসরে যাবেন।

শহীদুলের পর নতুন আইজিপি কে হচ্ছেন-তা নিয়ে নানা আলোচনা, জল্পনা কল্পনা আছে। বেশ কিছু কর্মকর্তার নাম নিয়ে বলাবলি হচ্ছে। এদের মধ্যে আছেন একজন নারী কর্মকর্তাও।

পুলিশে নারীদের মধ্যে সবচেয়ে উঁচু পদে আছেন ফাতেমা বেগম। তিনি বাহিনীটির অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (অর্থ) হিসেবে কাজ করছেন।
১৯৮৪ সালে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশে যোগ দেন ফাতেমা বেগম। প্রশিক্ষণ শেষে তিনি ১৯৮৬ সালের ২১ জানুয়ারি চাকরিতে স্থায়ী হন।

সারদা থেকে প্রশিক্ষণ শেষে সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) হিসেবে যোগ দেন ফাতেমা। বর্ণিল কর্মজীবনে ফাতেমা বেগম কাজ করেছেন অনেক স্থান ও অবস্থানে। সহকারী পুলিশ সুপার খাগড়াছড়ি সার্কেল, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার কমিশনার, পুলিশ টেলিকম, ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার হিসেবে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন তিনি।

দেশের বাইরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে তিনি আফ্রিকার সিয়েরালিয়নে কাজ করেছেন।

১ জানুয়ারি ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেন বর্তমান আইজিপি শহিদুল হক

পুলিশ সদরদপ্তরে সহকারী মহাপরিদর্শক (কল্যাণ), পুলিশ সুপার (স্পেশাল ব্রাঞ্চ), কমান্ড্যান্ট (এসবি ট্রেনিং স্কুল), পরিচালক (তদন্ত, র‌্যাব), পুলিশ সদর দপ্তর ডিআইজি (ট্রেনিং অ্যান্ড রিক্রুটমেন্ট), ডিআইজি (প্রশাসন ও অর্থ -এসবি), এবং অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক আইজিপি (পুলিশ সদর দপ্তর ) হিসেবেও কৃতিত্বের সাথে কাজ করেছেন ফাতেমা। ২০১৪ সালে তিনি পুলিশ স্টাফ কলেজর রেক্টর হিসেবে যোগ দেন। সব শেষে তিনি অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক অর্থ হিসেবে পুলিশ সদর দপ্তরে যুক্ত হন।

পুলিশের চাকরিরত অবস্থাতেই ফাতেমা অস্ট্রেলিয়া সরকারের বৃত্তি নিয়ে অ্যাডিলেইড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন।

পুলিশে নারী আইজিপির গুঞ্জনের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোনা মন্তব্য করতে চাননি। জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নিরোধ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘এ বিষয়ে কোন তথ্য আমার জানা নেই।’

তবে মন্ত্রণালয়ের অন্য একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, পুলিশে নারী প্রধানের বিষয়টি নিয়ে নানা পর্যায়ে কথা হচ্ছে, তবে এখনও সিদ্ধান্তে আসার মতো কোনো তথ্য নেই।

যোগাযোগ করা হলে ফাতেমা বেগম বলেন, ‘নারীরা এখন কোথায় খারাপ করছে? সব চ্যালেঞ্জিং পেশায় তারা এখন সাহসের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে।’

বাংলাদেশের সামাজিক বাস্তবতায় যদি কোনো নারীকে পুলিশের প্রধান করা হয় তাহলে সেটা কেমন হয়-জানতে চাইলে ফাতেমা বেগম বলেন, ‘বর্তমানে পুলিশে নারীরা তো ভালই করছেন। তাদের ভূমিকা মূল্যায়ন করলে তো বলাই যায় কোনো নারী যদি পুলিশ প্রধান হন, তাহলে তিনি ভালই করবেন। কারণ, পুলিশের পুরুষেরাও যে কাজ করেন, নারী সদস্যরাও একই দায়িত্ব পালন করে থাকেন।’