স্টাফ রিপোর্টার,
ইন্টারনেট সপ্তাহ উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইন্টারনেটের ব্যাপক প্রসারের ফলে আমাদের যুব সমাজ ও ছোটদের যেন সামাজিক অবক্ষয় না ঘটে এবং তথ্য-প্রযুক্তির অপব্যবহার করে যাতে কেউ সমাজে অস্থিরতা তৈরি করতে না পারে সেজন্য ইন্টারনেট সুরক্ষা আইন করা হবে। গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম কমানোরও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল বিকালে ‘উপজেলা ডিজিটাল মেলা ও ইন্টারনেট সপ্তাহ ২০১৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কয়েকটি উপজেলার কর্মকর্তা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আইন প্রণয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইন্টারনেট প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে এর নিরাপত্তার বিষয়টি চলে আসে। কেউ যেন কোন ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু লিখতে না পারে। এটা সব ধর্মের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কোন শিশু যেন ইন্টারনেটের ‘অন্য’ সাইটে না ঢুকতে পারে। সমাজের অবক্ষয়ের দিকটাও সামনে চলে আসবে। এ সময় ইন্টারনেটের অপব্যবহারের মাধ্যমে হাইতির ভূমিকম্পের ছবি ঢাকার হেফাজত কর্মী হত্যা, কাবা শরিফের গিলাপ পরিবর্তনের ছবিকে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে মুসলিম জনতার মানববন্ধন ও কক্সবাজারের রামুর বেদনাদায়ক ঘটনার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, যাতে প্রযুক্তির অপব্যবহার না হয় সেজন্যই আইন হচ্ছে। আইনটির খসড়া মূল্যায়ন করা হচ্ছে। আশা করি এ বছরের মধ্যেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি আমরা প্রণয়ন করতে পারব। এ আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইন্টারনেট ও তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ হবে। নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিত হবে। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করে আমাদের সমাজের উন্নয়ন করতে হবে। এটার ব্যবহার যেন আমাদের ক্ষতির দিকে না নেয়।
ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার মাধ্যমে দেশের কৃষকরাও লাভবান হচ্ছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, ১৬ কোটি জনগণের দেশে ৫ কোটিরও বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। গ্রামের কৃষক এখন মোবাইলে ছবি তুলে ধান গাছের পাতার রং নষ্ট হলো কেন, তার জন্য কী কীটনাশক লাগবে, কী সার লাগবে তা জানতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছে। আশা করি এবার ঘরে ঘরে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে। দুই হাজার ২৫০টি ইউনিয়ন ফাইবার অপটিক্যালের আওতায় আসবে। আর ইতিমধ্যে বিটিসিএল এক হাজার ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল দেয়ার কাজ করছে। আশা করি ২০১৭ সালের মধ্যে চার হাজার ৫শ’ ইউনিয়নে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে সক্ষম হবো।
গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম কমানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, জনগণের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসতে ইন্টারনেটের দাম কমানো হয়েছে। মোবাইল অপারেটরগুলোকে আহ্বান জানাই তারাও যেন গ্রাহক পর্যায়ে দাম কমিয়ে আনতে কার্যকর ভূমিকা নেয়। তিনি বলেন, ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। সরকার কর্মসংস্থানে কাজ করে যাচ্ছে।
ঢাকা ছাড়াও দুটি বিভাগীয় শহরে বড় বড় প্রদর্শনীসহ দেশের ৪৮৭টি উপজেলায় একযোগে শুরু হওয়া এ ইন্টারনেট সপ্তাহ চলবে আগামী ১১ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রথমবারের মতো সরকারি অবকাঠামো ব্যবহারের মাধ্যমে ইন্টারনেট মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইন্টারনেট সপ্তাহের স্লোগান হচ্ছে ‘উন্নয়নের পাসওয়ার্ড আমাদের হাতেই’। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে ইন্টারনেট সপ্তাহ যৌথভাবে আয়োজন করছে সরকারের তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ, বেসিস ও গ্রামীণফোন। উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্স করেন ঢাকার বনানী সোসাইটি মাঠ, গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া, রংপুরের পীরগঞ্জ, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, নাটোরের সিংড়া ও বরিশালের সদর উপজেলায়।
গণভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বেসিসের সভাপতি শামীম আহসান, গ্রামীণফোনের সিইও রাজীব শেঠী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ শিরোনাম ::
এ বছরের মধ্যেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন
-
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময় : ০৯:৫৫:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫
- 347
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ