ঢাকা ০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রবাসে স্বৈরাচারের দোসরদের আস্ফালন, ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারের দাবি নাসিম আহমদ চৌধুরীর বিজয়নগরে স্কুল শিক্ষিকাকে বেধড়ক পিটিয়ে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার লুটপাট “লন্ডনে ‘প্রবাসীদের ক্ষমতায়ন: অধিকার, স্বীকৃতি ও জাতি গঠন – একটি এনআরবি প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক সেমিনার ও ইফতার মাহফিল অনুষ্টিত বিশ্বনাথে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, যুবক গ্রেপ্তার সুনামগঞ্জে চলন্ত সিএনজিতে কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টা, আটক ২ ‘মানুষের উন্নয়নে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বারবার রক্ষা করেছেন খালেদা জিয়া’ জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকঃ দ্রুত নির্বাচনের দাবি বিএনপির “যুক্তরাজ্য যুবদলের সভাপতি আফজাল হোসেনকে ইলিয়াস পত্নী তাহসিনা রুশদির লুনার অভিনন্দন” বায়ান্নের ভাষা শহীদদের প্রতি নর্থইষ্ট বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদন প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে জয় লাভ করেন সোয়াবই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বালিকারা

কামারুজ্জামানের সেই চিঠি, শামসুন্নাহার নিজামীর জবাব

স্টাফ রিপোর্টার,
492
‘কামারুজ্জামানের চিঠি এবং জামায়াতের সংস্কার প্রসঙ্গ’ শীর্ষক বইটির সম্পাদনা করেছেন সমাজ ও সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান পরিচালক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক। সমাজ ও সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র থেকেই বইটি প্রকাশিত হয়েছে। এ বইয়ে ঠাঁই পেয়েছে মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের লেখা সেই বহুল আলোচিত চিঠি। দীর্ঘ যে চিঠিতে তিনি জামায়াতে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ওই প্রস্তাবের জবাব হিসেবে সাপ্তাহিক সোনার বাংলায় দুই পর্বের একটি নিবন্ধ লেখেন জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি শামসুন্নাহার নিজামী।
২০১০ সালের নভেম্বরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বকুল সেলে লেখা ৩৬ পৃষ্ঠার দীর্ঘ চিঠির শেষ অংশে জামায়াতে সংস্কার নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। এরইমধ্যে যার মৃত্যুদ- কার্যকর হয়েছে। চিঠির শেষ দিকে তিনি লিখেছিলেন, প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের (জামায়াত) ভবিষ্যত কি?
এক. যা হবার হবে। আমরা যেমন আছি তেমনি থাকবো (বর্তমানে এই কৌশলই অবলম্বন করা হয়েছে)।
দুই.পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জামায়াত সিদ্ধান্ত নিয়ে পিছনে থেকে একটি নতুন সংগঠন গড়ে তুলবে। এই সংগঠন প্রজ্ঞা ও দৃড়তার সাথে ধর্মহীন শক্তির মোকাবিলা করবে।
তিন. আমাদের যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে তারা জামায়াতের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াবো এবং সম্পূর্ণ নতুন লোকদের হাতে জামায়াতকে ছেড়ে দিবো। অর্থাৎ একটি নিউ জেনারেশন জামায়াত হবে এটি।
আমার ক্ষুদ্র বিবেচনায় উপরোক্ত তিন অবস্থার প্রথমটা হচ্ছে নেতৃত্ব আকড়ে থাকা, যা হতবুদ্ধিতা ও হতাশাবাদিতা। একটি গতিশীল আন্দোলন এ ধরনের পশ্চাৎমুখী অবস্থান গ্রহণ করতে পারে না। তৃতীয় যে পন্থা নতুন নেতৃত্বের হাতে জামায়াতকে ছেড়ে দেয়া এটা বিবেচনা করা যেতো যদি ১৯৭১ সালের বিষয়টার একটা রাজনৈতিক মীমাংসা আমরা করতে পারতাম। দ্বিতীয় যে পন্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, আমার মতে সামগ্রিক বিবেচনায় এই বিকল্প পন্থাটির কথা চিন্তা করা যেতে পারে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ইসলামী আন্দোলন এই কৌশল অবলম্বন করে ভাল ফল লাভ করেছে। আমরা রাজনৈতিকভাবে সরে দাঁড়ালাম যাতে বিভ্রান্তির কোন সুযোগ না থাকে। এ ধরনের একটি অবস্থান গ্রহণ করলে সাময়িকভাবে আমাদের জন্য ব্যক্তিগতভাবে অবমাননাকর মনে হলেও শেষ পর্যন্ত মহত্ত্বের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে আমার বিশ্বাস।
অন্যদিকে, ‘বিবেচনায় আনতে হবে সবকিছু’ শিরোনামে লেখায় শামসুন্নাহার নিজামী লিখেছেন, জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এখন জেলে। দেশের তৃতীয় বৃহত্তর এ রাজনৈতিক দল নিয়ে ঔৎসুক্যের শেষ নেই। অনেকেই দলটির এ অবস্থাকে ‘খুবই নাজুক’ অথবা দলটি ‘কঠিন চ্যালেঞ্জে’ আছে মনে করেন। মূলত জামায়াতে ইসলামীর সঠিক সরূপ না জানার কারণেই এ কথাগুলোর সৃষ্টি হয়।
জামায়াতে ইসলামী সেই দল যারা কোরআন ও সুন্নাহর পথে চলে। এ দল দৃড়ভাবে বিশ্বাস করে এ পথেই কেবল মানবতা মনুষ্যত্বের পরিবর্তন সম্ভব। জামায়াত মনে করে যেকোন পরিস্থিতিতে বা পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে নতুন কর্মকৌশল নয় বরং শ্বাশত সেই কর্মকৌশল অবলম্বন করতে হবে যে কর্মকৌশল অবলম্বন করেছিলেন মানবতার মুক্তিদূত হযরত মুহাম্মদ (সা)। পরিস্থিতি যতই নাজুক হোক, চ্যালেঞ্জ যত কঠিনই হোক শর্টকার্ট কোনপথ নেই। জামায়াত নিছক ক্ষমতার রাজনীতি করে না। ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার প্রবণতাও জামায়াত নেতৃবৃন্দের নেই।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রবাসে স্বৈরাচারের দোসরদের আস্ফালন, ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারের দাবি নাসিম আহমদ চৌধুরীর

কামারুজ্জামানের সেই চিঠি, শামসুন্নাহার নিজামীর জবাব

আপডেট সময় : ০৮:৪৮:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ অগাস্ট ২০১৫

স্টাফ রিপোর্টার,
492
‘কামারুজ্জামানের চিঠি এবং জামায়াতের সংস্কার প্রসঙ্গ’ শীর্ষক বইটির সম্পাদনা করেছেন সমাজ ও সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান পরিচালক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক। সমাজ ও সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র থেকেই বইটি প্রকাশিত হয়েছে। এ বইয়ে ঠাঁই পেয়েছে মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের লেখা সেই বহুল আলোচিত চিঠি। দীর্ঘ যে চিঠিতে তিনি জামায়াতে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ওই প্রস্তাবের জবাব হিসেবে সাপ্তাহিক সোনার বাংলায় দুই পর্বের একটি নিবন্ধ লেখেন জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি শামসুন্নাহার নিজামী।
২০১০ সালের নভেম্বরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বকুল সেলে লেখা ৩৬ পৃষ্ঠার দীর্ঘ চিঠির শেষ অংশে জামায়াতে সংস্কার নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। এরইমধ্যে যার মৃত্যুদ- কার্যকর হয়েছে। চিঠির শেষ দিকে তিনি লিখেছিলেন, প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের (জামায়াত) ভবিষ্যত কি?
এক. যা হবার হবে। আমরা যেমন আছি তেমনি থাকবো (বর্তমানে এই কৌশলই অবলম্বন করা হয়েছে)।
দুই.পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জামায়াত সিদ্ধান্ত নিয়ে পিছনে থেকে একটি নতুন সংগঠন গড়ে তুলবে। এই সংগঠন প্রজ্ঞা ও দৃড়তার সাথে ধর্মহীন শক্তির মোকাবিলা করবে।
তিন. আমাদের যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে তারা জামায়াতের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াবো এবং সম্পূর্ণ নতুন লোকদের হাতে জামায়াতকে ছেড়ে দিবো। অর্থাৎ একটি নিউ জেনারেশন জামায়াত হবে এটি।
আমার ক্ষুদ্র বিবেচনায় উপরোক্ত তিন অবস্থার প্রথমটা হচ্ছে নেতৃত্ব আকড়ে থাকা, যা হতবুদ্ধিতা ও হতাশাবাদিতা। একটি গতিশীল আন্দোলন এ ধরনের পশ্চাৎমুখী অবস্থান গ্রহণ করতে পারে না। তৃতীয় যে পন্থা নতুন নেতৃত্বের হাতে জামায়াতকে ছেড়ে দেয়া এটা বিবেচনা করা যেতো যদি ১৯৭১ সালের বিষয়টার একটা রাজনৈতিক মীমাংসা আমরা করতে পারতাম। দ্বিতীয় যে পন্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, আমার মতে সামগ্রিক বিবেচনায় এই বিকল্প পন্থাটির কথা চিন্তা করা যেতে পারে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ইসলামী আন্দোলন এই কৌশল অবলম্বন করে ভাল ফল লাভ করেছে। আমরা রাজনৈতিকভাবে সরে দাঁড়ালাম যাতে বিভ্রান্তির কোন সুযোগ না থাকে। এ ধরনের একটি অবস্থান গ্রহণ করলে সাময়িকভাবে আমাদের জন্য ব্যক্তিগতভাবে অবমাননাকর মনে হলেও শেষ পর্যন্ত মহত্ত্বের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে আমার বিশ্বাস।
অন্যদিকে, ‘বিবেচনায় আনতে হবে সবকিছু’ শিরোনামে লেখায় শামসুন্নাহার নিজামী লিখেছেন, জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এখন জেলে। দেশের তৃতীয় বৃহত্তর এ রাজনৈতিক দল নিয়ে ঔৎসুক্যের শেষ নেই। অনেকেই দলটির এ অবস্থাকে ‘খুবই নাজুক’ অথবা দলটি ‘কঠিন চ্যালেঞ্জে’ আছে মনে করেন। মূলত জামায়াতে ইসলামীর সঠিক সরূপ না জানার কারণেই এ কথাগুলোর সৃষ্টি হয়।
জামায়াতে ইসলামী সেই দল যারা কোরআন ও সুন্নাহর পথে চলে। এ দল দৃড়ভাবে বিশ্বাস করে এ পথেই কেবল মানবতা মনুষ্যত্বের পরিবর্তন সম্ভব। জামায়াত মনে করে যেকোন পরিস্থিতিতে বা পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে নতুন কর্মকৌশল নয় বরং শ্বাশত সেই কর্মকৌশল অবলম্বন করতে হবে যে কর্মকৌশল অবলম্বন করেছিলেন মানবতার মুক্তিদূত হযরত মুহাম্মদ (সা)। পরিস্থিতি যতই নাজুক হোক, চ্যালেঞ্জ যত কঠিনই হোক শর্টকার্ট কোনপথ নেই। জামায়াত নিছক ক্ষমতার রাজনীতি করে না। ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার প্রবণতাও জামায়াত নেতৃবৃন্দের নেই।