ঢাকা ০৬:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
হবিগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন পেলেন সৈয়দ মো. ফয়সল মাধবপুরে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মচারীর বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি-চুরির মামলা চাঞ্চল্যকর জিয়া হত্যা: দীর্ঘ এক বছর পর আপন ভাই বাবুল গ্রেফতার, পরিবারের দিকেই সন্দেহের তীর গোপশহর প্রবাসী ট্রাস্ট ইউকে’র দ্বীবার্ষিক সম্মেলন ও নতুন কার্যকরী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত রেলের টিকেট ঘরে বসে বুকিং আর নয়, স্টেশনে গেলেই “দৈত্যের” হাতে মিলবে রেলের টিকিট! আমিরাতে লটারি জিতে একসঙ্গে ভাগ্য খুলে গেল দুই বাংলাদেশির মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের নতুন হাইকমিশনার মঞ্জুরুল করিম ১২ কর্মকর্তাকে ঢাকায় না থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অফিস করার নির্দেশ সড়ক উপদেষ্টার “সিলেট পলিটেকনিকে দিনব্যাপী স্কিলস এন্ড ইনোভেশন কম্পিটিশন সম্পন্ন” চোরাচালান দমনে কড়াকড়ি বিজিবির জালে কোটি টাকার পণ্য

কৃষি-খাদ্যনিরাপত্তায় মনোযোগ দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী


ঢাকা: স্বল্প আয়ের ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে রক্ষা করার জন্য প্যারিস চুক্তিকে অবশ্যই সামনে এগিয়ে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সুইজারল্যান্ডের দাভোসের কংগ্রেস সেন্টারে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘লিডিং দ্য ফাইট এগেনস্ট ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শীর্ষক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে এসব কথা বলেন।বিশ্ববাসীকে সমন্বিতভাবে কৃষক, জেলে, কারুশিল্পী ও নারীদের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি নিরসনে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বানও জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ প্যারিস চুক্তি অনুসমর্থন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এক্ষেত্রে বিশ্ব সম্প্রদায় এবং ব্যবসায়ীদেরও ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।”

প্রথমত, প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের কৃষক, জেলে, কারুশিল্পী, নারীরা দিনকে দিন অধিকতার ঝুঁকিতে পড়ছে। তাদের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার দিকে আমাদের ভালোভাবে মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন।”

কৃষিকে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবমুক্ত করার জন্য উন্নত প্রযুক্তি দরিদ্র ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর কৃষকদের কাছে সহজলভ্য করার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী চাপ সহনশীল জাত উন্নতকরণ ও উদ্ভাবন, পানি সহিষ্ণু ধান উৎপাদন, সৌর বিদ্যুৎ ভিত্তিক সেচ পাম্প চালু করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রী বলেন, জীবন, শস্য, কৃষি, সম্পদ রক্ষায় সমাধান খুঁজতে গবেষণা ও বিশ্ব বাণিজ্য বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের প্রয়োজন অলাভজনক মডেল উদ্ভাবন, অংশীদারিত্বের জন্য এবং আমাদের সমস্যা সমাধানের জন্য।

তৃতীয় বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে শেখ হাসিনা বলেন, নবায়নযোগ্য এবং ক্লিন এর্নাজি, দক্ষ জ্বালানি প্রযুক্তি, যন্ত্র, নিরাপদ উৎপাদ, নগর সেবায় যেতে হবে।

চতুর্থত, তিনি বলেন, আমরা ‘গ্রিন প্রবৃদ্ধি’ পথের দিকে যাচ্ছি। কিন্তু প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে। এই অর্থের অন্তত অর্ধেকটা জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কাছে যেতে হবে।

প্রযুক্তি বিনিময়কে ৫ম বিষয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের নামে বিশ্ব সুখকর অবস্থানে থাকতে পারে না। স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে সহযোগিতার জন্য জাতিসংঘ প্রযুক্তি ব্যাংক রয়েছে। কৃষি-স্বাস্থ্যে আমরা জীবন রক্ষাকারী প্রযুক্তিতে যেতে চাই।”

শেখ হাসিনা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের অস্তিত্বের বিষয়। বাংলাদেশ সবচেয়ে কম গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ করে অথচ আমাদেরই সবচেয়ে বেশি মূল্য দিতে হয়। লাখ লাখ মানুষ নীরবে স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হচ্ছে।”

সমৃদ্ধির জন্য বিশ্ব সম্প্রদায় দায়িত্ব ভাগ করে নেবে আশা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বল্প আয়ের ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোকে রক্ষা করার জন্য প্যারিস চুক্তিকে অবশ্যই সামনে এগিয়ে নিতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে নিজস্ব সম্পদ থেকে আমরা ৪০০ মিলিয়ন ডলারের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করি।

তিনি বলেন, আমরা কম কার্বন নিঃসরণ উন্নয়নের দিকে যাই। আমাদের উৎপাদন ক্ষেত্রকে আমরা ‘গ্রিন’ প্রযুক্তিতে রূপান্তর করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে গুরুত্ব দিয়েছি। বাংলাদেশে ৪৫ লাখ সোলার হোম সিস্টেম বসানো হয়েছে।

১৫ লাখ মানুষ এখন সৌরবিদ্যুৎ পাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ২০১৮ সাল নাগাদ বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে বড় সোলার জাতি হিসেবে উঠে আসবে।

শেখ হাসিনা বলেন, কৃষিকে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবমুক্ত করার চেষ্টা করছি। চাপ সহনশীল জাত উন্নতকরণ ও উদ্ভাবন, পানিসহিষ্ণু ধান উৎপাদন, সৌরবিদ্যুৎ ভিত্তিক সেচ পাম্প চালু করেছি।

সুখী-সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়তে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবেলায় বিশ্ব সম্প্রদায়কে দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

হবিগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন পেলেন সৈয়দ মো. ফয়সল

কৃষি-খাদ্যনিরাপত্তায় মনোযোগ দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০৬:০৫:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০১৭


ঢাকা: স্বল্প আয়ের ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে রক্ষা করার জন্য প্যারিস চুক্তিকে অবশ্যই সামনে এগিয়ে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সুইজারল্যান্ডের দাভোসের কংগ্রেস সেন্টারে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘লিডিং দ্য ফাইট এগেনস্ট ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শীর্ষক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে এসব কথা বলেন।বিশ্ববাসীকে সমন্বিতভাবে কৃষক, জেলে, কারুশিল্পী ও নারীদের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি নিরসনে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বানও জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ প্যারিস চুক্তি অনুসমর্থন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এক্ষেত্রে বিশ্ব সম্প্রদায় এবং ব্যবসায়ীদেরও ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।”

প্রথমত, প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের কৃষক, জেলে, কারুশিল্পী, নারীরা দিনকে দিন অধিকতার ঝুঁকিতে পড়ছে। তাদের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার দিকে আমাদের ভালোভাবে মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন।”

কৃষিকে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবমুক্ত করার জন্য উন্নত প্রযুক্তি দরিদ্র ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর কৃষকদের কাছে সহজলভ্য করার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী চাপ সহনশীল জাত উন্নতকরণ ও উদ্ভাবন, পানি সহিষ্ণু ধান উৎপাদন, সৌর বিদ্যুৎ ভিত্তিক সেচ পাম্প চালু করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রী বলেন, জীবন, শস্য, কৃষি, সম্পদ রক্ষায় সমাধান খুঁজতে গবেষণা ও বিশ্ব বাণিজ্য বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের প্রয়োজন অলাভজনক মডেল উদ্ভাবন, অংশীদারিত্বের জন্য এবং আমাদের সমস্যা সমাধানের জন্য।

তৃতীয় বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে শেখ হাসিনা বলেন, নবায়নযোগ্য এবং ক্লিন এর্নাজি, দক্ষ জ্বালানি প্রযুক্তি, যন্ত্র, নিরাপদ উৎপাদ, নগর সেবায় যেতে হবে।

চতুর্থত, তিনি বলেন, আমরা ‘গ্রিন প্রবৃদ্ধি’ পথের দিকে যাচ্ছি। কিন্তু প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে। এই অর্থের অন্তত অর্ধেকটা জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কাছে যেতে হবে।

প্রযুক্তি বিনিময়কে ৫ম বিষয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের নামে বিশ্ব সুখকর অবস্থানে থাকতে পারে না। স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে সহযোগিতার জন্য জাতিসংঘ প্রযুক্তি ব্যাংক রয়েছে। কৃষি-স্বাস্থ্যে আমরা জীবন রক্ষাকারী প্রযুক্তিতে যেতে চাই।”

শেখ হাসিনা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের অস্তিত্বের বিষয়। বাংলাদেশ সবচেয়ে কম গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ করে অথচ আমাদেরই সবচেয়ে বেশি মূল্য দিতে হয়। লাখ লাখ মানুষ নীরবে স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হচ্ছে।”

সমৃদ্ধির জন্য বিশ্ব সম্প্রদায় দায়িত্ব ভাগ করে নেবে আশা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বল্প আয়ের ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোকে রক্ষা করার জন্য প্যারিস চুক্তিকে অবশ্যই সামনে এগিয়ে নিতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে নিজস্ব সম্পদ থেকে আমরা ৪০০ মিলিয়ন ডলারের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করি।

তিনি বলেন, আমরা কম কার্বন নিঃসরণ উন্নয়নের দিকে যাই। আমাদের উৎপাদন ক্ষেত্রকে আমরা ‘গ্রিন’ প্রযুক্তিতে রূপান্তর করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে গুরুত্ব দিয়েছি। বাংলাদেশে ৪৫ লাখ সোলার হোম সিস্টেম বসানো হয়েছে।

১৫ লাখ মানুষ এখন সৌরবিদ্যুৎ পাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ২০১৮ সাল নাগাদ বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে বড় সোলার জাতি হিসেবে উঠে আসবে।

শেখ হাসিনা বলেন, কৃষিকে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবমুক্ত করার চেষ্টা করছি। চাপ সহনশীল জাত উন্নতকরণ ও উদ্ভাবন, পানিসহিষ্ণু ধান উৎপাদন, সৌরবিদ্যুৎ ভিত্তিক সেচ পাম্প চালু করেছি।

সুখী-সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়তে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবেলায় বিশ্ব সম্প্রদায়কে দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।