ঢাকা ১১:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রবাসে স্বৈরাচারের দোসরদের আস্ফালন, ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারের দাবি নাসিম আহমদ চৌধুরীর বিজয়নগরে স্কুল শিক্ষিকাকে বেধড়ক পিটিয়ে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার লুটপাট “লন্ডনে ‘প্রবাসীদের ক্ষমতায়ন: অধিকার, স্বীকৃতি ও জাতি গঠন – একটি এনআরবি প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক সেমিনার ও ইফতার মাহফিল অনুষ্টিত বিশ্বনাথে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, যুবক গ্রেপ্তার সুনামগঞ্জে চলন্ত সিএনজিতে কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টা, আটক ২ ‘মানুষের উন্নয়নে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বারবার রক্ষা করেছেন খালেদা জিয়া’ জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকঃ দ্রুত নির্বাচনের দাবি বিএনপির “যুক্তরাজ্য যুবদলের সভাপতি আফজাল হোসেনকে ইলিয়াস পত্নী তাহসিনা রুশদির লুনার অভিনন্দন” বায়ান্নের ভাষা শহীদদের প্রতি নর্থইষ্ট বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদন প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে জয় লাভ করেন সোয়াবই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বালিকারা

খালেদা জিয়ার সব মিটিং রাতে হয় কেন?


বিশেষ প্রতিনিধি :
মঙ্গলবার রাতে মাত্র কিছুক্ষণ আগে শেষ হল বিএনপি চেয়ারপারসনের সাথে ২০ দলীয় জোটের নেতাদের বৈঠক। মিটিংটি শুরু হয়েছিল রাত ৮টায়। বিএনপির কোনো নীতিনির্ধারণী বৈঠকের সময় রাতে অনুষ্ঠিত হওয়াটা অবশ্য নতুন কিছু নয়। এটাই দলটির ঐতিহ্য। বহু বছর ধরেই এমনটা চলে আসছে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, কেন এমনটিই করতে হবে? রাতের বেলা বৈঠক শুরু করে গভীর রাতে শেষ করার মধ্যে তো বিশেষ কল্যাণকর কিছু নেই। আছে উল্টো ক্ষতির দিক।
বাংলাদেশে সাংবাদিকতা জগতটি অতীত থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত কখনো বিএনপি-বান্ধব ছিল না। এখন তো পরিস্থিতি ভয়াবহ পর্যায়ে চলে গেছে। বিএনপিকে নিয়ে ইতিবাচক কোনো সংবাদের দেখা মেলা অমাবশ্যার চাঁদের চেয়েও অদৃশ্য কিছু। অথচ সরকারি দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা/নেত্রীর গুনগান এসব মিডিয়া নিয়মিতই গেয়ে থাকে।
এমন অবস্থায় বিএনপির তো উচিত ছিলকিভাবে বেশি করে সাংবাদিকদের কাছে যাওয়া যায় তার চেষ্টা করা। সাংবাদিকরা এখন সবার কাছ থেকে তথ্য পায়। তাদেরকে তথ্য আনতে যেতে হয় না। এমনকি সরকারের মন্ত্রনালয়গুলোও কোনো কাজ করলে তা দ্রুততম সময়ে লিখে বা ছবি/ফুটেজ তুলে সাংবাদিকদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। শুধু বাংলাদেশ নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারও জনসংযোগে সব কিছুর আগে থাকে। এর কারণ হচ্ছে, সবাই ভাবে আমি যে কাজটি করলাম তা যদি মানুষের কাছেই না পৌঁছে তাহলে লাভ কী হল?
এই যখন দুনিয়ার বাস্তবতা তখন বিএনপি যেন দিন দিন মিডিয়াকে দুরে ঠেলে দেয়ার চেষ্টায় আছে। তাদের মিটিংকে রাতের বেলায় আয়োজনের কারণে সাংবাদিকরা যারপরনাই বিরক্ত দলটির নেতৃত্বের ওপর। এমনকি বিএনপিপন্থী সাংবাদিকরাও নিজেদের হাউজে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এ নিয়ে। রাত ১০টার মধ্যে বেশিরভাগ পত্রিকার প্রথম সংস্করণ বের হয়ে যায়। অথচ ১১টায় শেষ হয় বিএনপির বৈঠক! তখন দলীয় নেতারা যে ব্রিফিং দেন তা ধরাতে হলে ছাপানো পেছাতে হয় কর্তৃপক্ষ। এতে বিশাল অংকের ক্ষতি গুনতে হয় পত্রিকাগুলোকে। কে গুনতে চাইবে এই আর্থিক ক্ষতি? ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিএনপির বক্তব্য ঢাকার বাইরের মানুষের কাছে যায় না।
আবার ঢাকার সংস্করণেও এসব মিটিংয়ের সংবাদ গৌণ ট্রিটমেন্ট পায়, কারণ বিএনপির বৈঠক শেষ হওয়ার আগেই দ্বিতীয় সংস্করণের মেক আপে পরিবর্তন কী আনা হবে তা ফাইনাল হয়ে যায়। এরপর আর কোনো সংবাদ এলে ভালভাবে কভারেজ দেয়ার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না।
টিভির ক্ষেত্রে একই কথা। রাত ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে দিনের প্রধান সংবাদ প্রচার করে। চ্যানেলগুলো। ১০টায় থাকে রাতের সংবাদ। অথচ বিএনপির বৈঠফ শেষ হয়ে কোনো নেতার ব্রিফিংয়ে আসতে আসতে রাত ১১টা! ফলে গুরুত্বপূর্ণ কোনো বুলেটিনে তা প্রচারের সুযোগ থাকে না। রাত ১২টায় যখন ধরানো যায় সংবাদটি তখন বেশির ভাগ মানুষ সংবাদ দেখা রেখে ঘুমানোর প্রস্তুতি নেন, অথবা কেউ বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান দেখেন টিভিতে।
বিএনপির নিজের ভালর জন্যেই খালেদা জিয়ার উচিত গুরুত্বপূর্ণ মিটিংগুলো সন্ধ্যার আগে ডেকে সংবাদমাধ্যমে প্রচারের সুযোগ দেয়া।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

প্রবাসে স্বৈরাচারের দোসরদের আস্ফালন, ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারের দাবি নাসিম আহমদ চৌধুরীর

খালেদা জিয়ার সব মিটিং রাতে হয় কেন?

আপডেট সময় : ০৫:০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৭


বিশেষ প্রতিনিধি :
মঙ্গলবার রাতে মাত্র কিছুক্ষণ আগে শেষ হল বিএনপি চেয়ারপারসনের সাথে ২০ দলীয় জোটের নেতাদের বৈঠক। মিটিংটি শুরু হয়েছিল রাত ৮টায়। বিএনপির কোনো নীতিনির্ধারণী বৈঠকের সময় রাতে অনুষ্ঠিত হওয়াটা অবশ্য নতুন কিছু নয়। এটাই দলটির ঐতিহ্য। বহু বছর ধরেই এমনটা চলে আসছে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, কেন এমনটিই করতে হবে? রাতের বেলা বৈঠক শুরু করে গভীর রাতে শেষ করার মধ্যে তো বিশেষ কল্যাণকর কিছু নেই। আছে উল্টো ক্ষতির দিক।
বাংলাদেশে সাংবাদিকতা জগতটি অতীত থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত কখনো বিএনপি-বান্ধব ছিল না। এখন তো পরিস্থিতি ভয়াবহ পর্যায়ে চলে গেছে। বিএনপিকে নিয়ে ইতিবাচক কোনো সংবাদের দেখা মেলা অমাবশ্যার চাঁদের চেয়েও অদৃশ্য কিছু। অথচ সরকারি দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা/নেত্রীর গুনগান এসব মিডিয়া নিয়মিতই গেয়ে থাকে।
এমন অবস্থায় বিএনপির তো উচিত ছিলকিভাবে বেশি করে সাংবাদিকদের কাছে যাওয়া যায় তার চেষ্টা করা। সাংবাদিকরা এখন সবার কাছ থেকে তথ্য পায়। তাদেরকে তথ্য আনতে যেতে হয় না। এমনকি সরকারের মন্ত্রনালয়গুলোও কোনো কাজ করলে তা দ্রুততম সময়ে লিখে বা ছবি/ফুটেজ তুলে সাংবাদিকদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। শুধু বাংলাদেশ নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারও জনসংযোগে সব কিছুর আগে থাকে। এর কারণ হচ্ছে, সবাই ভাবে আমি যে কাজটি করলাম তা যদি মানুষের কাছেই না পৌঁছে তাহলে লাভ কী হল?
এই যখন দুনিয়ার বাস্তবতা তখন বিএনপি যেন দিন দিন মিডিয়াকে দুরে ঠেলে দেয়ার চেষ্টায় আছে। তাদের মিটিংকে রাতের বেলায় আয়োজনের কারণে সাংবাদিকরা যারপরনাই বিরক্ত দলটির নেতৃত্বের ওপর। এমনকি বিএনপিপন্থী সাংবাদিকরাও নিজেদের হাউজে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এ নিয়ে। রাত ১০টার মধ্যে বেশিরভাগ পত্রিকার প্রথম সংস্করণ বের হয়ে যায়। অথচ ১১টায় শেষ হয় বিএনপির বৈঠক! তখন দলীয় নেতারা যে ব্রিফিং দেন তা ধরাতে হলে ছাপানো পেছাতে হয় কর্তৃপক্ষ। এতে বিশাল অংকের ক্ষতি গুনতে হয় পত্রিকাগুলোকে। কে গুনতে চাইবে এই আর্থিক ক্ষতি? ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিএনপির বক্তব্য ঢাকার বাইরের মানুষের কাছে যায় না।
আবার ঢাকার সংস্করণেও এসব মিটিংয়ের সংবাদ গৌণ ট্রিটমেন্ট পায়, কারণ বিএনপির বৈঠক শেষ হওয়ার আগেই দ্বিতীয় সংস্করণের মেক আপে পরিবর্তন কী আনা হবে তা ফাইনাল হয়ে যায়। এরপর আর কোনো সংবাদ এলে ভালভাবে কভারেজ দেয়ার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না।
টিভির ক্ষেত্রে একই কথা। রাত ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে দিনের প্রধান সংবাদ প্রচার করে। চ্যানেলগুলো। ১০টায় থাকে রাতের সংবাদ। অথচ বিএনপির বৈঠফ শেষ হয়ে কোনো নেতার ব্রিফিংয়ে আসতে আসতে রাত ১১টা! ফলে গুরুত্বপূর্ণ কোনো বুলেটিনে তা প্রচারের সুযোগ থাকে না। রাত ১২টায় যখন ধরানো যায় সংবাদটি তখন বেশির ভাগ মানুষ সংবাদ দেখা রেখে ঘুমানোর প্রস্তুতি নেন, অথবা কেউ বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান দেখেন টিভিতে।
বিএনপির নিজের ভালর জন্যেই খালেদা জিয়ার উচিত গুরুত্বপূর্ণ মিটিংগুলো সন্ধ্যার আগে ডেকে সংবাদমাধ্যমে প্রচারের সুযোগ দেয়া।