প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। বিশ্বে বাংলাদেশ প্রশংসিত হচ্ছে। কিন্তু দেশের এই এগিয়ে যাওয়াটা অনেকে মেনে নিতে পারছে না। তারা সবসময় চিন্তায় থাকে কীভাবে দেশের ক্ষতি করা যায়। আর আমাদের সেই শত্রু বাইরের না। ঘরের শত্রুই বিভীষণ।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এ সব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫ এর পর যারা ক্ষমতায় থেকে অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে তাদের কাছে ক্ষমতাটাই সব। দেশ গোল্লায় যাক। তাতে কিছু আসে যায় না তাদের। কীভাবে দেশের ক্ষতি করতে হবে, সেই চিন্তাতেই থাকেন তারা।’
জঙ্গি দমনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘হলি আর্টিজানের ঘটনার পর কোনো এক দেশের রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য ছিলো এ ঘটনা বাংলাদেশ সামাল দিতে পারবে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাস দিয়েছিলো। কিন্তু আমরা সেটা পারলাম কয়েক ঘণ্টার মধ্যে। তাতে মনে হলো কেউ কেউ খুশি হতে পারলো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা ভেবেছিল আমরা তাদের কাছে আকুতি করবো, অমুকের কাছে যাইবো, এটা চাইবো। কিন্তু, আমরা সেটা করিনি। এখনো তারা আমাদের চিনতে পারেনি। আমরাও পারি।’
শেখ হাসিনা বলেন, হলি আর্টিজানের ঘটনায় দুইজন পুলিশ জীবন দিয়ে গেছে, কিন্তু তারা অনেকগুলো মানুষকে বাঁচিয়ে গেছে, দেশের সম্মান বাঁচিয়ে গেছে। এটা হচ্ছে কর্তব্যবোধ, যে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা যেন সুন্দর থাকে, সেদিকে পুলিশ বাহিনীকে নজর দিতে হবে। এজন্য পুলিশের প্রয়োজন অনুসারে যানবাহন সরবরাহ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ছয় হাজার ৮৫৬টি গাড়ি কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এছাড়া গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে ‘কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি না আসায়’ বিস্ময় প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ছোটোখাটো ঘটনা হলেই দেখি হাউকাউ শুরু হয়ে যায়। একজন সংসদ সদস্যকে হত্যা করার পর কোনো মানবাধিকার সংগঠন বা কেউ এ ব্যাপারে কোনো শব্দও করেন না। প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ। জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে এভাবে মৃত্যুবরণ করতে হবে, এটা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্বরাষ্ট্র সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ, পুলিশের মহা-পরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম বিভাগের প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।