ঢাকা ০২:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রবাসে স্বৈরাচারের দোসরদের আস্ফালন, ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারের দাবি নাসিম আহমদ চৌধুরীর বিজয়নগরে স্কুল শিক্ষিকাকে বেধড়ক পিটিয়ে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার লুটপাট “লন্ডনে ‘প্রবাসীদের ক্ষমতায়ন: অধিকার, স্বীকৃতি ও জাতি গঠন – একটি এনআরবি প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক সেমিনার ও ইফতার মাহফিল অনুষ্টিত বিশ্বনাথে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, যুবক গ্রেপ্তার সুনামগঞ্জে চলন্ত সিএনজিতে কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টা, আটক ২ ‘মানুষের উন্নয়নে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বারবার রক্ষা করেছেন খালেদা জিয়া’ জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকঃ দ্রুত নির্বাচনের দাবি বিএনপির “যুক্তরাজ্য যুবদলের সভাপতি আফজাল হোসেনকে ইলিয়াস পত্নী তাহসিনা রুশদির লুনার অভিনন্দন” বায়ান্নের ভাষা শহীদদের প্রতি নর্থইষ্ট বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদন প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে জয় লাভ করেন সোয়াবই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বালিকারা

ছোট একটি প্রশ্ন, আপনি দোষী নাকি নির্দোষ—খালেদা জিয়াকে বিচারক


জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেওয়ার সময় খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘সব আইনজীবী অনাস্থা দিয়েছেন। আমিও আপনার আদালতের প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে অনাস্থা প্রদান করছি। তা সত্ত্বেও আমাকে জবরদস্তিমূলক ৩৪২ ধারা মোতাবেক পরীক্ষা করেছেন।’

আজ বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতে বিচারক আবু আহমেদ জমাদারকে উদ্দেশ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে সাক্ষীদের দেওয়া বক্তব্যের মৌলিক বিষয় অনুধাবন করব। এরপর আইনজীবীদের সাথে আলোচনা করে আমার বক্তব্য প্রদান করব। এ জন্য আমার যুক্তিসঙ্গত সময় প্রয়োজন।’

এ সময় বিচারক বলেন, ‘এখন একটি ছোট প্রশ্ন বলেন, আপনি দোষী নাকি নির্দোষ?’

জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি এখন কিছুই বক্তব্য দেব না।’ এরপর বিচারক আবার বলেন, ‘আপনি আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দিয়ে আপনি দোষী কি নির্দোষ সেটা তো বলবেন?’ জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি কিছুই বলব না।’

আবার বিচারক বলেন, ‘আপনি এ কথাগুলো না বললে নথিতে স্বাক্ষর নেব কীভাবে?

জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আপনার প্রতি আমাদের আস্থা নেই। আপনি মিথ্যা সাক্ষীর ওপর বিচার করছেন।’

জবাবে বিচারক বলেন, ‘আপনি এ কথাগুলো আত্মপক্ষের সমর্থনের বক্তব্যে বলেন।’

এরপর খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি আইনজীবীদের হৈ চৈ-এর মধ্যে সাক্ষীদের বিষয়ে আপনার বক্তব্য কিছুই শুনিনি। আমাকে যুক্তিসঙ্গত সময় দেন। আমি এখন কিছুই বলব না।’

বিচারক আবার বলেন, ‘আপনি দোষী কি নিদোষ?’ জবাবে খালেদা জিয়া বলেন,’ আমি এখন কিছুই বলব না’। বিচারক বলেন, ‘আপনি কি সাফাই সাক্ষী দেবেন?’

জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি এখন যা বললাম সেটাই আমার বক্তব্য।’

বিচারক আবার বলেন, ‘আপনি আর কিছু বলবেন কি?’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি তো বললাম আপনি আমাকে পর্যাপ্ত সময় দেবেন। আপনার প্রতি আনুষ্ঠানিক অনাস্থা দিয়েছি। তাই এখন কিছুই বলব না।’

বিচারক আবার বলেন, ‘আপনি দোষী কি নির্দোষ সেটা বলবেন তো?’

জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি আপনার আদালতের অনাস্থা প্রকাশ করছি। আমার মহুরির মাধ্যমে নকল গ্রহণ করব। তখন বক্তব্য দেব।’

জবাবে বিচারক বলেন, ‘আপনি আত্মপক্ষ সমর্থনে ৩৪২ ধারার নথিতে স্বাক্ষর করেন।’ তখন খালেদা জিয়া বলেন, ‘আপনার প্রতি যেহেতু আস্থা নেই। তাই স্বাক্ষর করব না।’ বিচারক বলেন, ‘স্বাক্ষর না করলে মামলার নকল পাবেন না।’

এ ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘সকাল থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়াকে আটকে রেখে রায়ের পূর্বে শাস্তি দিয়ে দিচ্ছেন। সার্চ কমিটির মিটিং চলছে। উনি রাজনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারছেন না। ওনাকে সকাল থেকে এখানে আটকে রেখে শাস্তি দিচ্ছেন।’

এ পর্যায়ে আদালত দুটি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ৯ ফেব্রুয়ারি দিন নির্ধারণ করেছেন।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় জিয়া চ্যারিটেবল ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য বিশেষ আদালতে হাজির হন খালেদা জিয়া।

বিচারকের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে খালেদা জিয়ার করা আবেদন নাকচ করেন দেন আবু আহমেদ জমাদার। বিএনপির চেয়ারপারসন তাঁর আবেদনে ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

আদালত একই সঙ্গে মামলা মুলতবি করার আবেদনও নাকচ করেছেন।

বিচারক তাঁর আদেশে বলেন, এ মামলার অভিযোগ গঠন হয়েছে প্রায় তিন বছর হতে চলল। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইন অনুযায়ী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে হয়। মামলার শেষ পর্যায়ে এসে এ ধরনের আবেদনের সুযোগ নেই। তাই আবেদন নাকচ করা হলো এবং মুলতবি করার আবেদনও নাকচ করা হলো।

আত্মপক্ষ সমর্থনের পাশাপাশি ওই দুই মামলার পুনর্তদন্তের দাবি জানিয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদনের শুনানির দিনও ছিল আজ।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি।

জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ।

ওই মামলার অন্য আসামিরা হলেন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

অন্যদিকে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।

দুই মামলারই বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের তৎকালীন সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ খান।

এর আগে ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি ও অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে ৫ এপ্রিল আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন তিনি।

গত বছরের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ নয়জনের বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ও অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রবাসে স্বৈরাচারের দোসরদের আস্ফালন, ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারের দাবি নাসিম আহমদ চৌধুরীর

ছোট একটি প্রশ্ন, আপনি দোষী নাকি নির্দোষ—খালেদা জিয়াকে বিচারক

আপডেট সময় : ০৯:৪৯:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৭


জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেওয়ার সময় খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘সব আইনজীবী অনাস্থা দিয়েছেন। আমিও আপনার আদালতের প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে অনাস্থা প্রদান করছি। তা সত্ত্বেও আমাকে জবরদস্তিমূলক ৩৪২ ধারা মোতাবেক পরীক্ষা করেছেন।’

আজ বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতে বিচারক আবু আহমেদ জমাদারকে উদ্দেশ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে সাক্ষীদের দেওয়া বক্তব্যের মৌলিক বিষয় অনুধাবন করব। এরপর আইনজীবীদের সাথে আলোচনা করে আমার বক্তব্য প্রদান করব। এ জন্য আমার যুক্তিসঙ্গত সময় প্রয়োজন।’

এ সময় বিচারক বলেন, ‘এখন একটি ছোট প্রশ্ন বলেন, আপনি দোষী নাকি নির্দোষ?’

জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি এখন কিছুই বক্তব্য দেব না।’ এরপর বিচারক আবার বলেন, ‘আপনি আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দিয়ে আপনি দোষী কি নির্দোষ সেটা তো বলবেন?’ জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি কিছুই বলব না।’

আবার বিচারক বলেন, ‘আপনি এ কথাগুলো না বললে নথিতে স্বাক্ষর নেব কীভাবে?

জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আপনার প্রতি আমাদের আস্থা নেই। আপনি মিথ্যা সাক্ষীর ওপর বিচার করছেন।’

জবাবে বিচারক বলেন, ‘আপনি এ কথাগুলো আত্মপক্ষের সমর্থনের বক্তব্যে বলেন।’

এরপর খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি আইনজীবীদের হৈ চৈ-এর মধ্যে সাক্ষীদের বিষয়ে আপনার বক্তব্য কিছুই শুনিনি। আমাকে যুক্তিসঙ্গত সময় দেন। আমি এখন কিছুই বলব না।’

বিচারক আবার বলেন, ‘আপনি দোষী কি নিদোষ?’ জবাবে খালেদা জিয়া বলেন,’ আমি এখন কিছুই বলব না’। বিচারক বলেন, ‘আপনি কি সাফাই সাক্ষী দেবেন?’

জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি এখন যা বললাম সেটাই আমার বক্তব্য।’

বিচারক আবার বলেন, ‘আপনি আর কিছু বলবেন কি?’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি তো বললাম আপনি আমাকে পর্যাপ্ত সময় দেবেন। আপনার প্রতি আনুষ্ঠানিক অনাস্থা দিয়েছি। তাই এখন কিছুই বলব না।’

বিচারক আবার বলেন, ‘আপনি দোষী কি নির্দোষ সেটা বলবেন তো?’

জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি আপনার আদালতের অনাস্থা প্রকাশ করছি। আমার মহুরির মাধ্যমে নকল গ্রহণ করব। তখন বক্তব্য দেব।’

জবাবে বিচারক বলেন, ‘আপনি আত্মপক্ষ সমর্থনে ৩৪২ ধারার নথিতে স্বাক্ষর করেন।’ তখন খালেদা জিয়া বলেন, ‘আপনার প্রতি যেহেতু আস্থা নেই। তাই স্বাক্ষর করব না।’ বিচারক বলেন, ‘স্বাক্ষর না করলে মামলার নকল পাবেন না।’

এ ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘সকাল থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়াকে আটকে রেখে রায়ের পূর্বে শাস্তি দিয়ে দিচ্ছেন। সার্চ কমিটির মিটিং চলছে। উনি রাজনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারছেন না। ওনাকে সকাল থেকে এখানে আটকে রেখে শাস্তি দিচ্ছেন।’

এ পর্যায়ে আদালত দুটি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ৯ ফেব্রুয়ারি দিন নির্ধারণ করেছেন।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় জিয়া চ্যারিটেবল ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য বিশেষ আদালতে হাজির হন খালেদা জিয়া।

বিচারকের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে খালেদা জিয়ার করা আবেদন নাকচ করেন দেন আবু আহমেদ জমাদার। বিএনপির চেয়ারপারসন তাঁর আবেদনে ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

আদালত একই সঙ্গে মামলা মুলতবি করার আবেদনও নাকচ করেছেন।

বিচারক তাঁর আদেশে বলেন, এ মামলার অভিযোগ গঠন হয়েছে প্রায় তিন বছর হতে চলল। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইন অনুযায়ী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে হয়। মামলার শেষ পর্যায়ে এসে এ ধরনের আবেদনের সুযোগ নেই। তাই আবেদন নাকচ করা হলো এবং মুলতবি করার আবেদনও নাকচ করা হলো।

আত্মপক্ষ সমর্থনের পাশাপাশি ওই দুই মামলার পুনর্তদন্তের দাবি জানিয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদনের শুনানির দিনও ছিল আজ।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি।

জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ।

ওই মামলার অন্য আসামিরা হলেন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

অন্যদিকে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।

দুই মামলারই বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের তৎকালীন সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ খান।

এর আগে ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি ও অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে ৫ এপ্রিল আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন তিনি।

গত বছরের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ নয়জনের বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ও অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।