ঢাকা ০৬:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিজয়নগরে স্কুল শিক্ষিকাকে বেধড়ক পিটিয়ে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার লুটপাট “লন্ডনে ‘প্রবাসীদের ক্ষমতায়ন: অধিকার, স্বীকৃতি ও জাতি গঠন – একটি এনআরবি প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক সেমিনার ও ইফতার মাহফিল অনুষ্টিত বিশ্বনাথে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, যুবক গ্রেপ্তার সুনামগঞ্জে চলন্ত সিএনজিতে কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টা, আটক ২ ‘মানুষের উন্নয়নে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বারবার রক্ষা করেছেন খালেদা জিয়া’ জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকঃ দ্রুত নির্বাচনের দাবি বিএনপির “যুক্তরাজ্য যুবদলের সভাপতি আফজাল হোসেনকে ইলিয়াস পত্নী তাহসিনা রুশদির লুনার অভিনন্দন” বায়ান্নের ভাষা শহীদদের প্রতি নর্থইষ্ট বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদন প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে জয় লাভ করেন সোয়াবই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বালিকারা “সিলেট প্রদেশ প্রতিষ্ঠার দাবীতে লন্ডনে গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকের সভা অনুষ্ঠিত”

ঢাকায় ভাঙা হচ্ছে ২৭১ বছরের পুরনো মসজিদ


ঢাকা: বাইরে দেখে আঁচ করার উপায় নেই ভেতরে ২৭১ বছরের পুরনো মসজিদ আছে। পুরনো ঢাকার আজিমপুরের নিউ পল্টন এলাকায় সরু এক রাস্তার ধারে জনবহুল এলাকায় এ মসজিদটির অবস্থান।

এটি আজিমপুর শাহী মসজিদ হিসেবে পরিচিত। গবেষকরা বলছেন, সব মসজিদ শাহী মসজিদ নয়। যেসব মসজিদ নবাবদের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি হয়েছে এবং একটি কবরস্থানসহ অন্যান্য বিষয়কে মাথায় নিয়ে নির্মাণ হয়েছে – সেসব মসজিদকে শাহী মসজিদ হিসেবে বর্ণনা করা হয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক নুরুল কবির এ মসজিদ নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি বলছেন, “এ মসজিদের একটি শিলালিপি দেখে ধারণা পাওয়া যায় যে এটি ১৭৪৬ সালে নির্মিত। তখন নবাব আলীবর্দি খাঁ বাংলার শাসনকর্তা।”

কবির বলেন, “এ মসজিদের গম্বুজ অনেকটা তুরস্কের অটোম্যান আমলের স্থাপত্য শৈলীর মিল আছে।”

কিন্তু নতুন ছয়তলা মসজিদ নির্মাণের জন্য প্রায় পৌনে ৩০০ বছরের পুরনো এ মসজিদটি ভাঙার কাজ শুরু করেছিলেন মসজিদ কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে মসজিদের প্রায় অর্ধেক ভেঙে ফেলা হয়েছে।

মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, এলাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এখন মসজিদে জায়গার সংকুলান হচ্ছেনা। সে কারণে এ মসজিদ ভেঙ্গে ছয়তলা মসজিদ তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।

এতো পুরনো হওয়া সত্ত্বেও এ মসজিদটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃত হয়নি। মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক বলছেন ভাঙার কাজ শুরুর আগে তারা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাছে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছেন এ মসজিদটি তাদের তালিকায় রয়েছে কিনা। কিন্তু প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর চিঠি দিয়ে মসজিদ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে যে, এ স্থাপনাটি তাদের তালিকায় নেই।

মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মৃধা বলেন, “আমরা তো স্পেশালিষ্ট না। যারা স্পেশালিষ্ট তারা বলছে যে এটা পুরাকীর্তি না। তখন আমরা ভাঙছি।”

এ মসজিদটি ভেঙে নতুন বহুতল মসজিদ নির্মাণের প্রয়োজন আছে কি-না সেটি নিয়ে এলাকায় অনেকের মাঝে দ্বিমত আছে। কেউ মনে করেন যেহেতু জুম্মার নামাজ, তারাবীর নামাজ কিংবা অন্য কোন বিশেষ দিনে মসজিদে মুসল্লিদের জায়গা হয়না সেজন্য এটি ভেঙে নতুন মসজিদ করা প্রয়োজন।

অন্যদিকে কেউ-কেউ মনে করে, পুরনো কাঠামো অক্ষত রেখে মসজিদটিকে কিভাবে সম্প্রসারণ করা যায় সেদিকে নজর দেয়া উচিত ছিল।

শেষ পর্যন্ত বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এবং প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপে ভাঙ্গার কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। এখনো পর্যন্ত যতটুকু অক্ষত আছে সেটিকে বাঁচিয়ে কিভাবে মসজিদটিকে সম্প্রসারণ করা যায় সে সুপারিশ করবে বিশেষজ্ঞ কমিটি। কিন্তু ততক্ষণে ২৭১ বছরের পুরনো এ মসজিদটির প্রায় অর্ধেক ধ্বংসস্তূপে রূপ নিয়েছে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বিজয়নগরে স্কুল শিক্ষিকাকে বেধড়ক পিটিয়ে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার লুটপাট

ঢাকায় ভাঙা হচ্ছে ২৭১ বছরের পুরনো মসজিদ

আপডেট সময় : ০৮:৩৫:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০১৭


ঢাকা: বাইরে দেখে আঁচ করার উপায় নেই ভেতরে ২৭১ বছরের পুরনো মসজিদ আছে। পুরনো ঢাকার আজিমপুরের নিউ পল্টন এলাকায় সরু এক রাস্তার ধারে জনবহুল এলাকায় এ মসজিদটির অবস্থান।

এটি আজিমপুর শাহী মসজিদ হিসেবে পরিচিত। গবেষকরা বলছেন, সব মসজিদ শাহী মসজিদ নয়। যেসব মসজিদ নবাবদের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি হয়েছে এবং একটি কবরস্থানসহ অন্যান্য বিষয়কে মাথায় নিয়ে নির্মাণ হয়েছে – সেসব মসজিদকে শাহী মসজিদ হিসেবে বর্ণনা করা হয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক নুরুল কবির এ মসজিদ নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি বলছেন, “এ মসজিদের একটি শিলালিপি দেখে ধারণা পাওয়া যায় যে এটি ১৭৪৬ সালে নির্মিত। তখন নবাব আলীবর্দি খাঁ বাংলার শাসনকর্তা।”

কবির বলেন, “এ মসজিদের গম্বুজ অনেকটা তুরস্কের অটোম্যান আমলের স্থাপত্য শৈলীর মিল আছে।”

কিন্তু নতুন ছয়তলা মসজিদ নির্মাণের জন্য প্রায় পৌনে ৩০০ বছরের পুরনো এ মসজিদটি ভাঙার কাজ শুরু করেছিলেন মসজিদ কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে মসজিদের প্রায় অর্ধেক ভেঙে ফেলা হয়েছে।

মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, এলাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এখন মসজিদে জায়গার সংকুলান হচ্ছেনা। সে কারণে এ মসজিদ ভেঙ্গে ছয়তলা মসজিদ তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।

এতো পুরনো হওয়া সত্ত্বেও এ মসজিদটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃত হয়নি। মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক বলছেন ভাঙার কাজ শুরুর আগে তারা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাছে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছেন এ মসজিদটি তাদের তালিকায় রয়েছে কিনা। কিন্তু প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর চিঠি দিয়ে মসজিদ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে যে, এ স্থাপনাটি তাদের তালিকায় নেই।

মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মৃধা বলেন, “আমরা তো স্পেশালিষ্ট না। যারা স্পেশালিষ্ট তারা বলছে যে এটা পুরাকীর্তি না। তখন আমরা ভাঙছি।”

এ মসজিদটি ভেঙে নতুন বহুতল মসজিদ নির্মাণের প্রয়োজন আছে কি-না সেটি নিয়ে এলাকায় অনেকের মাঝে দ্বিমত আছে। কেউ মনে করেন যেহেতু জুম্মার নামাজ, তারাবীর নামাজ কিংবা অন্য কোন বিশেষ দিনে মসজিদে মুসল্লিদের জায়গা হয়না সেজন্য এটি ভেঙে নতুন মসজিদ করা প্রয়োজন।

অন্যদিকে কেউ-কেউ মনে করে, পুরনো কাঠামো অক্ষত রেখে মসজিদটিকে কিভাবে সম্প্রসারণ করা যায় সেদিকে নজর দেয়া উচিত ছিল।

শেষ পর্যন্ত বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এবং প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপে ভাঙ্গার কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। এখনো পর্যন্ত যতটুকু অক্ষত আছে সেটিকে বাঁচিয়ে কিভাবে মসজিদটিকে সম্প্রসারণ করা যায় সে সুপারিশ করবে বিশেষজ্ঞ কমিটি। কিন্তু ততক্ষণে ২৭১ বছরের পুরনো এ মসজিদটির প্রায় অর্ধেক ধ্বংসস্তূপে রূপ নিয়েছে।