ঢাকা ১২:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বনাথে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, যুবক গ্রেপ্তার সুনামগঞ্জে চলন্ত সিএনজিতে কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টা, আটক ২ ‘মানুষের উন্নয়নে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বারবার রক্ষা করেছেন খালেদা জিয়া’ জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকঃ দ্রুত নির্বাচনের দাবি বিএনপির “যুক্তরাজ্য যুবদলের সভাপতি আফজাল হোসেনকে ইলিয়াস পত্নী তাহসিনা রুশদির লুনার অভিনন্দন” বায়ান্নের ভাষা শহীদদের প্রতি নর্থইষ্ট বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদন প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে জয় লাভ করেন সোয়াবই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বালিকারা “সিলেট প্রদেশ প্রতিষ্ঠার দাবীতে লন্ডনে গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকের সভা অনুষ্ঠিত” জাউয়াবাজারে বিএনপি নেতাকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারে ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ সমাবেশ গৃহহীন পরিবারের পুনর্বাসনের লক্ষ্য জয়তুন ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের উদ্যোগে সংবর্ধনা ও গৃহ নির্মাণের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত

দলের জয়ে অন্য কষ্ট ভুলে যাই

খেলাধুলা প্রতিনিধি,
404
‘আমিতো রক্ত মাংসের মানুষ, খারাপ লাগবে না কেন? ড্রেসিং রুমে বসে বসে খেলা দেখি আর চিন্তা করি হয়তো সুযোগ পেলে কিছু করতাম…। কিন্তু দল যখন জিতে যায় তখন সব ভুলে যাই, কষ্ট আর থাকে না’- কথাগুলো বলতে বলতে রনি তালুকদারের চোখ হয়তো একটু ভিজে এসেছিল কিন্তু সেখানেও ছিল প্রাপ্তির ঝিলিক। দীর্ঘ অপেক্ষার পর জাতীয় দলে সুযোগ এসেছে নারায়ণগঞ্জের ২৪ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানের। এরই মধ্যে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হলেও ওয়ানডেতে ড্রেসিং রুমে বসেই কাটাতে হয়েছে তার। কিন্তু তাতে কি, ড্রেসিং রুমে বসে থাকার আক্ষেপ, তার স্বপ্নকে করেছে আরও বড় আর লক্ষ্যকে করেছে স্থির। তার এগিয়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরছেন মানবজমিন-এর স্পোর্টস রিপোর্টার ইশতিয়াক পারভেজ।
প্রশ্ন: জাতীয় দলের খেলা নেই, সময় কাটছে কিভাবে?
রনি: আমি হাইপারফরমেন্স ইউনিটে (এইচপি) আছি। এখানে আমার বেশ ভাল সময় কাটছে। ফিটনেস ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় সবই করছি আমি। সত্যি, বিসিবি এখন আমাদের অনেক বড় সুযোগ করে দিয়েছে। একটা সময় ভাবতাম প্র্যাকটিস করবো কোথায়, জিম কিভাবে করবো, খেলা না থাকলে অলস সময় কাটাতে হতো। এখন তা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে না। বিসিবি প্রায় সব ক্রিকেটারকে ক্রিকেটের সঙ্গে রাখার খুবই ভাল পরিকল্পনা করেছে। এমনকি যারা এইচপিতে নেই, জাতীয় দলেও নেই তারা প্লেয়ার্স ফর ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট (পনি) প্রোগ্রামে সুযোগ পাচ্ছে।
প্রশ্ন: দলের খেলায় শুধু ড্রেসিং রুমে বসে থাকা, কতটা কষ্টের ছিল?
রনি: খুব খারাপ লাগতো। ওয়ানডে দলে সুযোগ পেয়েও মাঠে নামতে পারছিলাম না, শুরুতে খুবই হতাশ ছিলাম। রক্ত-মাংসের মানুষতো কি করার। কিন্তু দল যখন জিততে শুরু করলো ধীরে ধীরে কষ্ট ভুলে যেতে শুরু করলাম। ম্যাচ শেষ হলেই দৌড়ে মাঠে চলে যেতাম, একবারও মনে হতো না আমি ম্যাচ খেলতে পারিনি। দল জিতলে আমরা সবাই গান গাই ‘আমরা করবো জয়’। আমি বলে বুঝাতে পারবো না, সেই আনন্দের কথা।
প্রশ্ন: ড্রেসিং রুমের কেমন অভিজ্ঞতা হলো?
রনি: আমি এখান থেকে আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। মনে হয় না, পৃথিবীর কোন দলের বিপক্ষেই আমার খেলা কঠিন হবে। মাশরাফি ভাই থেকে শুরু করে দলের প্রত্যেক সদস্যকে কাছ থেকে দেখেছি। বিশেষ করে অভিজ্ঞরা কি করে, কিভাবে চলে, তারা জয়ের সময় কেমন থাকে, দল হারার পথে কি ধরনের কথা বলে। এই সবকিছুই আমার কাজে আসবে। যখন মাঠে খেলার সুযোগ পাবো তখন আশা করি নিজেকে প্রমাণ করতে সহজ হবে আমার।
প্রশ্ন: দলে তরুণ ক্রিকেটার সৌম্য সরকার, লিটন দাস, মুস্তাফিজুর রহমান এসেই ভাল করছে। আপনি এতে অনুপ্রেরণা পান?
রনি: ওরা তরুণ হলেও আমার জন্য অনুপ্রেরণা। সৌম্য, লিটন অনেক ভাল ব্যাট করে। মুস্তাফিজ এসেই তার প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছে। আমি ওদের দেখে নিজেকে আরও এগিয়ে রাখার কথা ভাবি। আমিও চিন্তা করি সুযোগ পেলে যেন তা খুব ভালভাবেই কাজে লাগাতে পারি।
প্রশ্ন: প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে আপনার সাফল্য বেশি। কিন্তু আগে অভিষেক হলো টি-টোয়েন্টিতে-
রনি: এখন তিন ফরমেটের ক্রিকেট খেলাটাই বড় বিষয়। একজন ব্যাটসম্যান যদি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ ভাল খেলে সে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিও ভাল খেলতে পারবে। নির্বাচকরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটি আমার জন্যই ভাল হয়েছে। আমি যে কোন ফরমেটেই নিজেকে প্রমাণ করতে চাই।
প্রশ্ন: অধিনায়ক মাশরাফির কাছ থেকে কি পেলেন?
রনি: তিনি (মাশরাফি) অসাধারণ একজন মানুষ। কথায় কাজে তিনি সব সময়ই পজিটিভ। দলকে কিভাবে নেতৃত্ব দিতে হয়, তার কাছে শেখার আছে। সবচেয়ে ভাল লেগেছে মাশরাফি ভাই আমাকে কখনও হতাশ হতে দেননি। বলতেন, যখন সুযোগ পাবি কাজে লাগাবি।
প্রশ্ন: বিয়ে করলেন সম্প্রতি। খেলার সুযোগ পান না, এতে স্ত্রী কি অখুশি?
রনি: আমার পরিবার ক্রিকেট পাগল। আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি যে, আমার স্ত্রীও ক্রিকেটের বেশ ভক্ত। সে ক্রিকেট বুঝে। তাই আমাকে উৎসাহ দেয় যেন আমি হতাশ না হয়ে আরও ভাল খেলি। এটি আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের ক্রিকেটে আপনার আদর্শ কে?
রনি: মুশফিকুর রহীম ভাই, আমি তাকে সব সময় অনুসরণ করি।
প্রশ্ন: ক্রিকেটারদের অনেকেই ব্যাবসায় ঝুকছেন। আপনার লক্ষ্য কি?
রনি: প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে- আরও ৮/১০ বছর খেলার। একটি ক্রিকেট একাডেমি করারও স্বপ্ন দেখি। নিজ জেলা নারায়ণগঞ্জের ক্রিকেটারদের নিয়ে কাজ করার স্বপ্ন আমার।
প্রশ্ন: নারায়ণগঞ্জ থেকে অনেক ক্রিকেটার উঠে আসছে, কেমন লাগে সেটি দেখতে?
রনি: খুবই ভাল লাগে। একটা সময় ছিল নারায়ণগঞ্জে লীগ হতো না, ভাল মাঠ ছিল না। এখানে এখন লীগের খেলা হয় নিয়মিত। ফতুল্লা মাঠেও খেলার সুযোগ হয়েছে। আমরা নারায়ণগঞ্জ ক্রীড়া সংস্থার টিটু ভাইকে এজন্য ধন্যবাদ জানাই। তবে কিছু অভাব রয়ে গেছে। আমাদের অনুশীলনের কোন টার্ফ নেই। এমনকি জিমও নেই।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

বিশ্বনাথে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, যুবক গ্রেপ্তার

দলের জয়ে অন্য কষ্ট ভুলে যাই

আপডেট সময় : ০৬:৪৭:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ অগাস্ট ২০১৫

খেলাধুলা প্রতিনিধি,
404
‘আমিতো রক্ত মাংসের মানুষ, খারাপ লাগবে না কেন? ড্রেসিং রুমে বসে বসে খেলা দেখি আর চিন্তা করি হয়তো সুযোগ পেলে কিছু করতাম…। কিন্তু দল যখন জিতে যায় তখন সব ভুলে যাই, কষ্ট আর থাকে না’- কথাগুলো বলতে বলতে রনি তালুকদারের চোখ হয়তো একটু ভিজে এসেছিল কিন্তু সেখানেও ছিল প্রাপ্তির ঝিলিক। দীর্ঘ অপেক্ষার পর জাতীয় দলে সুযোগ এসেছে নারায়ণগঞ্জের ২৪ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানের। এরই মধ্যে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হলেও ওয়ানডেতে ড্রেসিং রুমে বসেই কাটাতে হয়েছে তার। কিন্তু তাতে কি, ড্রেসিং রুমে বসে থাকার আক্ষেপ, তার স্বপ্নকে করেছে আরও বড় আর লক্ষ্যকে করেছে স্থির। তার এগিয়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরছেন মানবজমিন-এর স্পোর্টস রিপোর্টার ইশতিয়াক পারভেজ।
প্রশ্ন: জাতীয় দলের খেলা নেই, সময় কাটছে কিভাবে?
রনি: আমি হাইপারফরমেন্স ইউনিটে (এইচপি) আছি। এখানে আমার বেশ ভাল সময় কাটছে। ফিটনেস ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় সবই করছি আমি। সত্যি, বিসিবি এখন আমাদের অনেক বড় সুযোগ করে দিয়েছে। একটা সময় ভাবতাম প্র্যাকটিস করবো কোথায়, জিম কিভাবে করবো, খেলা না থাকলে অলস সময় কাটাতে হতো। এখন তা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে না। বিসিবি প্রায় সব ক্রিকেটারকে ক্রিকেটের সঙ্গে রাখার খুবই ভাল পরিকল্পনা করেছে। এমনকি যারা এইচপিতে নেই, জাতীয় দলেও নেই তারা প্লেয়ার্স ফর ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট (পনি) প্রোগ্রামে সুযোগ পাচ্ছে।
প্রশ্ন: দলের খেলায় শুধু ড্রেসিং রুমে বসে থাকা, কতটা কষ্টের ছিল?
রনি: খুব খারাপ লাগতো। ওয়ানডে দলে সুযোগ পেয়েও মাঠে নামতে পারছিলাম না, শুরুতে খুবই হতাশ ছিলাম। রক্ত-মাংসের মানুষতো কি করার। কিন্তু দল যখন জিততে শুরু করলো ধীরে ধীরে কষ্ট ভুলে যেতে শুরু করলাম। ম্যাচ শেষ হলেই দৌড়ে মাঠে চলে যেতাম, একবারও মনে হতো না আমি ম্যাচ খেলতে পারিনি। দল জিতলে আমরা সবাই গান গাই ‘আমরা করবো জয়’। আমি বলে বুঝাতে পারবো না, সেই আনন্দের কথা।
প্রশ্ন: ড্রেসিং রুমের কেমন অভিজ্ঞতা হলো?
রনি: আমি এখান থেকে আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। মনে হয় না, পৃথিবীর কোন দলের বিপক্ষেই আমার খেলা কঠিন হবে। মাশরাফি ভাই থেকে শুরু করে দলের প্রত্যেক সদস্যকে কাছ থেকে দেখেছি। বিশেষ করে অভিজ্ঞরা কি করে, কিভাবে চলে, তারা জয়ের সময় কেমন থাকে, দল হারার পথে কি ধরনের কথা বলে। এই সবকিছুই আমার কাজে আসবে। যখন মাঠে খেলার সুযোগ পাবো তখন আশা করি নিজেকে প্রমাণ করতে সহজ হবে আমার।
প্রশ্ন: দলে তরুণ ক্রিকেটার সৌম্য সরকার, লিটন দাস, মুস্তাফিজুর রহমান এসেই ভাল করছে। আপনি এতে অনুপ্রেরণা পান?
রনি: ওরা তরুণ হলেও আমার জন্য অনুপ্রেরণা। সৌম্য, লিটন অনেক ভাল ব্যাট করে। মুস্তাফিজ এসেই তার প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছে। আমি ওদের দেখে নিজেকে আরও এগিয়ে রাখার কথা ভাবি। আমিও চিন্তা করি সুযোগ পেলে যেন তা খুব ভালভাবেই কাজে লাগাতে পারি।
প্রশ্ন: প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে আপনার সাফল্য বেশি। কিন্তু আগে অভিষেক হলো টি-টোয়েন্টিতে-
রনি: এখন তিন ফরমেটের ক্রিকেট খেলাটাই বড় বিষয়। একজন ব্যাটসম্যান যদি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ ভাল খেলে সে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিও ভাল খেলতে পারবে। নির্বাচকরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটি আমার জন্যই ভাল হয়েছে। আমি যে কোন ফরমেটেই নিজেকে প্রমাণ করতে চাই।
প্রশ্ন: অধিনায়ক মাশরাফির কাছ থেকে কি পেলেন?
রনি: তিনি (মাশরাফি) অসাধারণ একজন মানুষ। কথায় কাজে তিনি সব সময়ই পজিটিভ। দলকে কিভাবে নেতৃত্ব দিতে হয়, তার কাছে শেখার আছে। সবচেয়ে ভাল লেগেছে মাশরাফি ভাই আমাকে কখনও হতাশ হতে দেননি। বলতেন, যখন সুযোগ পাবি কাজে লাগাবি।
প্রশ্ন: বিয়ে করলেন সম্প্রতি। খেলার সুযোগ পান না, এতে স্ত্রী কি অখুশি?
রনি: আমার পরিবার ক্রিকেট পাগল। আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি যে, আমার স্ত্রীও ক্রিকেটের বেশ ভক্ত। সে ক্রিকেট বুঝে। তাই আমাকে উৎসাহ দেয় যেন আমি হতাশ না হয়ে আরও ভাল খেলি। এটি আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের ক্রিকেটে আপনার আদর্শ কে?
রনি: মুশফিকুর রহীম ভাই, আমি তাকে সব সময় অনুসরণ করি।
প্রশ্ন: ক্রিকেটারদের অনেকেই ব্যাবসায় ঝুকছেন। আপনার লক্ষ্য কি?
রনি: প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে- আরও ৮/১০ বছর খেলার। একটি ক্রিকেট একাডেমি করারও স্বপ্ন দেখি। নিজ জেলা নারায়ণগঞ্জের ক্রিকেটারদের নিয়ে কাজ করার স্বপ্ন আমার।
প্রশ্ন: নারায়ণগঞ্জ থেকে অনেক ক্রিকেটার উঠে আসছে, কেমন লাগে সেটি দেখতে?
রনি: খুবই ভাল লাগে। একটা সময় ছিল নারায়ণগঞ্জে লীগ হতো না, ভাল মাঠ ছিল না। এখানে এখন লীগের খেলা হয় নিয়মিত। ফতুল্লা মাঠেও খেলার সুযোগ হয়েছে। আমরা নারায়ণগঞ্জ ক্রীড়া সংস্থার টিটু ভাইকে এজন্য ধন্যবাদ জানাই। তবে কিছু অভাব রয়ে গেছে। আমাদের অনুশীলনের কোন টার্ফ নেই। এমনকি জিমও নেই।