মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ থেকেঃ
নবীগঞ্জ উপজেলার ইমাম ও বাওয়ানী চা- বাগানে বকেয়া বেতন-ভাতা’সহ বিভিন্ন দাবীতে ফের গতকাল শনিবার সকাল থেকে ধর্মঘট পালন করে শ্রমিকরা। এসময় বিক্ষোদ্ধ শ্রমিকরা মিছিল দিয়ে অফিস ঘেরাও করে রাখে। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা বাগানে গিয়ে বাগান মালিক পক্ষের সাথে আলোচনা করে লিখিত চুক্তির মাধ্যমে আগামী ৩০ জানুয়ারীর মধ্যে বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিলে বিকেল ৩টার দিকে ধর্মঘট স্থগিত করে শ্রমিকরা। চলতি জানুয়ারী মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে শ্রমিক, ম্যানাজার ও স্টাফদের বেতন না ফেলে ফের কঠোর আন্দোলন কর্মসূচির ডাক দিবেন বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।
সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নে অবস্থিত ইমাম-বাওয়ানী চা বাগানের প্রায় সাড়ে ৪ শত শ্রমিকদের ৬ সপ্তাহের বকেয়া বেতন ও রেশন বাবত প্রায় ২০ লক্ষাধীক টাকা বকেয়া রয়েছে। দিন দিন করে রেশন ও সপ্তাহিক বেতন না ফেয়ে শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করে আসছে।
ইতি পূর্বেও শ্রমিকরা বকেয়া বেতন আদায় ও অন্যান্য দাবী বাস্তবায়নের জন্য কোম্পানীর উপ মহা পরিচালক বরাবরে আবেদন করেও কোন সুরহা না হওয়ায় ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করে শ্রমিকরা। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে শেষে গেল ডিসেম্বর মাসে তা পরিশোধ করে মালিক পক্ষ। অতঃপর এর পর থেকে প্রায় ৬ সপ্তাহ ধরে শ্রমিক, ম্যানাজার ও স্টাফদের রেশন ও বেতন না দেয়ায় আন্দোলনে নামে শ্রমিকরা। গতকাল শনিবার সকাল থেকে সব কাজ বন্ধ করে কয়েক শতাধীক শ্রমিক বিক্ষোভ করে।
খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জীতেন্দ্র কুমার নাথ, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইজাজুর রহমান, পুটিজুরি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মুদ্দত আলী, ইউপি সদস্য আব্দুল কালাম, গোপলার বাজার পুলিশ ফাড়ির ইনর্চাজ আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সিউধ্বনি কুর্মি, বাংলাদেশ চা শ্রমিক বালিছড়া ভ্যালির সভাপতি বিজয় হাজরা, সাধারন সম্পাদক দেবেন্দ্র কারাউফসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা বাগানে যান।
তারা চা বাগানে গিয়ে শ্রমিকদের সাথে আলাপ আলোচনা করে তাদের দাবীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। এসময় ইমাম বাওয়ানী চা বাগানের মালিক পক্ষে বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস.এম মোবাসসিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ইমাম টি এস্টেট লিমিটেডে প্যাডে একটি লিখিত চুক্তি পত্রে উল্লেখ তাদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করার লিখিত ভাবে আশ্বাস দিয়ে বিকেল ৩টার দিকে শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করার আহ্বান জানালে শ্রমিকরা ধর্মঘট কর্মসূচি ৩০ জানুয়ারী পর্যন্ত স্থগিত করে।
শ্রমিকরা জানান, তাদের ঘর বাড়ি মেরামত করে দেয়া হচ্ছে না। অনেক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। প্রফিডেন্ট ফান্ডের টাকা শ্রমিকরা দিলেও মালিক পক্ষ সে টাকা জমা না দেয়ায় তারা ভবিষ্যতে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভব্যনা রয়েছে।