স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথে কোন্দল এবং মতভেদের কারনে কোনঠাসা হয়ে পড়েছে দলটি। জেলা বিএনপির কোন্দলের অবসান ঘটাতে নতুন নেতৃত্ব চায় তৃণমূল। জেলা বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ নিজেদের মধ্যে দলীয় কোন্দল থাকার কারনে কর্মসূচী পালনের ক্ষেত্রেও সফলতার মুখ দেখতে পারছে না দলটি। দীর্ঘদিন ধরে জেলা বিএনপির মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব চলে আসার কারনে এর প্রভাব গিয়ে পড়েছে তৃণমূল নেতৃবৃন্দের মাঝে। এর ফলে সর্বদাই বিরাজ করছে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা।
তাই তৃণমূল নেতৃবৃন্দ বিএনপিকে শক্তিশালী করার জন্য দলের নেতাদের মধ্যে সকল রাগ অভিমান এবং কোন্দল ভূলে গিয়ে ঐক্য গড়ে তুলে নতুনদের হাতে নিজেদের নেতৃত্ব তুলে দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন। আর সঠিক সময়ে সঠিক কাজ না করা হলে অতীতের মতই কোনঠাসা হয়ে থাকবে জেলা বিএনপির রাজনীতি। এছাড়াও দলীয় সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথে দ্বন্দ্বের ফলে নারায়ণগঞ্জের মাটি থেকে বিএনপির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাওয়ারও আশংকা করছেন জেলা বিএনপির তৃণনমূল নেতৃবৃন্দ।
বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানিয়েছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. তৈমুর আলম খন্দকার এবং সাধারন সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জমানের সাথে দীর্ঘদিন ধরে দলীয় কোন্দল চলে আসছে। জেলা বিএনপিতে আশীন থাকা প্রভাবশালী এই দুই নেতার বলয়ের নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক ভাবে দলীয় কর্মসূচী পালন করে থাকে। এছাড়া প্রকাশ্যে না বললেও গোঁপনে একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে। সুযোগ পেলেই একে অপরের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতে সর্বদাই যেন প্রস্তুত থাকে। এমনটাই অভিমত জেলা বিএনপির তৃনমূল নেতৃবৃন্দের। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সিনিয়র নেতৃবৃন্দের এমন কোন্দলের কারনে দ্বিধাবিভক্তিতে পড়েছে তৃণমূল নেতৃত্বেও।
বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা আরো জানান, দলটি কেন্দ্র ঘোষিত দলীয় কর্মসূচী পালনের ক্ষেত্রে কোন্দলপূর্ণ জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক ভাবে সভা সমাবেশ করলেও তার আর সফলতার মুখ দেখতে পারছে না। ফলে জেলা বিএনপির রাজনীতির অস্তিত্ব নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন অধিকাংশ তৃণমূল বিএনপির নেতৃবৃন্দ। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা জেলা বিএনপির সিনিয়র এই দুই নেতার কোন্দল নিরসন করা অতীব জরুরী বলে মনে করছেন দলের একাধিক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।
তাছাড়া তৃণমূল বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে জেলা বিএনপির নেতৃত্বদানকারী এ্যাড. তৈমুর আলম খন্দকার এবং কাজী মনিরের মধ্যে চলে আসা দীর্ঘদিনের কোন্দল ভুলে গিয়ে ঐক্যের পতাকাতলে একত্রিত হয়ে দলীয় রাজনীতি পরিচালিত করা। আর তাদের ঐক্যই পারে জেলা বিএনপির হতাশাগ্রস্থ তৃণমূল নেতৃবৃন্দকে উজ্জীবিত করে তুলতে। তাদের ঐক্যবদ্ধতায় দলীয় কমৃসূচী পালনের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি এখনো শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে নারায়ণগঞ্জের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে জানান দেওয়ার একমাত্র পন্থা।
এছাড়া নেতাকর্মীরা মনে করেন, জেলা বিএনপির নেতৃত্বদানকারী প্রভাবশালী এই দুই নেতা ঐক্য গড়ে তুলে নতুনদের হাতে দ্বায়িত্ব দেয়ার মাধ্যমে প্রমান করবেন তৃণমূলকে তারা সম্মান এবং দলকে ভালবাসেন। অণ্যথায় তৃনমূল মনে করবেন, তৃনমূল কিংবা দলীয় স্বার্থ হাছিল নয় তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য জেলা বিএনপিতে আশিন পাওয়া কোন্দলে জড়িত সিনিয়র নেতৃবৃন্দ রাজনীতি করেন।
জেলা বিএনপির মেয়াদহীন কমিটি ভেঙ্গে নতুন নেতৃত্বের মাঝেই বিএনপি আরো শক্তিশালি এবং অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারবেন বলে মন্তব্য করেছেন মাঠ পর্যায়ে অনেক নেতা।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. তৈমুর আলম খন্দকার বরাবরের মতই জানান, দলের মধ্যে কোন কোন্দল নেই। আর কোন্দল নেই বিধায় ঐক্য গড়ে তুলার মানুষও নেই। যদি দলীয় নেতৃবৃন্দের মাঝে কোন্দলমান রাজনীতি বিরাজ করতো তাহলে অনেক আগেই তারা সাংগঠনিকভাবে পিছিয়ে পড়তো। দলের মধ্যে ঐক্য আছে বলেই জেলা বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচী পালনে সফলতাসহ সাংগঠানিকভাবে অনেকটা শক্তিশালী।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জমানের মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিব করেননি।
এ বিষয়ে মহানগর বিএনপি নেতা এবং জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. শাখওয়াত হোসেন আগামী দিনের কর্মসূচি, আন্দোলন সংগ্রাম এবং জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য নতুনদের নেতৃত্ব দেওয়া উচিত বলে দাবী করেন। এ প্রতিবেদককে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি জানান, আগামী দিনের আন্দোলনের জন্য নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে ঢেলে সাজানো উচিত। আর ঢেলে সাজানোর জন্য জেলা, মহানগর এবং প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে নতুন নেতৃত্ব সাজানো দরকার। যারা দলের নিবেদিত এবং রাজপথের নেতকর্মী আছেন, তাদের দিয়েই এই ঢেলে সাজানো উচিত।
তিনি আরো বলেন, নতুন নেতৃত্বে মাধ্যমেই সামনের আগামী যে নির্বাচন এবং আন্দোলন সংগ্রাম রয়েছে সেই সংগ্রামে কাঙ্খিত ফলাফল পাওয়া সম্ভব। বর্তমান জেলা কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। সারা দেশে জেলা কমিটি হচ্ছে এবং নারায়ণগঞ্জেও নতুন কমিটিন গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। আমরা আশাকরি নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমেই দলকে শক্তিশালী করা হবে।
অপরদিকে উক্ত বিষয় নিয়ে তৈমুর আলমের বক্তব্যকে প্রত্যক্ষান করেছেন তৃণমূল বিএনপি। তারা মনে করেন, জেলা সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকার দলের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টিতে আগ্রহী নয় বিধায় সাংবাদিকদের এমন বক্তব্য দিয়েছেন। জেলা বিএনপিতে কোন্দলের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে তা বর্তমান প্রেক্ষাপটের মাধ্যমেই বিবেচ্য। তাই তৃণমূলের অনেক নেতাই নারায়ণগঞ্জের মাটিতে বিএনপি বিলিন হবার আগেই নতুন নেতৃত্বকে দিয়ে হাল ধরিয়ে দেওয়ার আহবান জানান বর্তমান জেলা বিএনপির নেতাদের প্রতি।
সংবাদ শিরোনাম ::
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে নতুন নেতৃত্ব চায় তৃণমূল
-
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময় : ০৪:২৫:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
- 1586
ট্যাগস :