মো: জাফর আহমদ, গ্রেটার ম্যানচেষ্টার, যুক্তরাজ্য.
অফুরন্ত স্নেহ, মায়া-মমতা, প্রেম-ভালোবাসা,বিবেক-বুদ্ধি সবকিছু দিয়েই তো আল্লাহ আমাদের কে সৃষ্টির সেরা হিসাবে সৃষ্টি করেছেন.পার্থিব জীবনের মোহ আর পরকালের কঠিন শাস্তির বিধান রেখেই পৃথিবীতে আমাদের আগমন. প্রশ্ন থেকে যায় ? আমারা কোনটাকে বেশী প্রধান্য দিব? চীরস্থায়ী সুখের জন্য আমাদের সোনালী জীবন যৌবন কে কি ভাবে ব্যায় করব ?
আসুন ধরে নিলাম —-
আপনার স্ত্রী,আপনাকে প্রানের চেয়ে
বেশি ভালোবাসে, মনে করেন রাত সাতটায় আপনি মারা গেলেন, আপনার আত্নীয় স্বজন সবাই সিদ্বান্ত নিলেন কবর দিবে পরের দিন বাদ
যোহর,কেউ যদি আপনার স্ত্রীকে এসে বলে, কবর দিতেতো অনেক দেরি হবে,এখন অনেক
রাত হয়েছে, আমরা সবাই একটু ঘুমিয়ে
আসি,সকালে দেখা হবে,,,
আর লাশ এখন বিছানাতেই থাকুক, আর
আপনিও ঘুমিয়ে থাকুন, আর এইটাতো
আপনাদেরি বিছানা, আমরা গেলাম,
আপনি ঘুমিয়ে যান,,,
আপনার মোহাব্বতের স্ত্রী কি আপনার
সাথে আর ঘুমাবে…??
না কখনোই না, যত মোহাব্বত করুক না
কেন…!
আপনি এখন লাশ, আপনার
চ্যাপ্টারক্লোজ,,,!!!
এবার ভেবে দেখুন, সারা জীবনে
আপনি কার জন্য ব্যয় করলেন?
বজ্রপাতের আওয়াজ হলে,
ভয়ে চিৎকার দিয়ে আপনার বুকের পাজর
আকড়ে ধরে মিশে যেত,আপনাকে জড়িয়ে ধরার পরে তার ভয় কাটতো, স্ত্রীর ইচ্ছা , আকাংখা পুর্ন করার জন্য কতই কষ্ট সাধন করেছেন. (ছেলে-মেয়ে লালন পালন থেকে শুরু করে, পড়া -লেখা, জীবনে তাদেরকে প্রতিষ্টিত করে দেওয়ার জন্য কতই না ত্যাগ -তিতীক্ষা স্বীকার করেছেন) কিন্তু আজ আপনি মরার পরে, আপনার সাথে থাকবেনা কেন ?
কারণ আপনাকে এখন সে ভয় পায়,
কারণ শুধু একটাই, আপনি এখন লাশ,,,!!
আপনার বোঝা আপনাকে বহন করতেই হবে, ভেবে দেখুন আপনি কত বড় অসহায়—–!!
যেখানে ঘোর অন্ধকার, সেখানে নাই
আলো বাতাস, নাই বেরিয়ে যাওয়ার
কোন পথ, যেখানে আপনার গায়ের
উপরে
দিয়ে বিষাক্ত বিচ্ছু,বিষাক্ত সাপ বেয়ে
যাবে অনবরত, যেখানে আপনার চোখের
সামনে দেখবেন, বিরাট লম্বা এক সাপ,
আপনার নাকের ছিদ্র দিয়ে প্রবেশ
করছে,কান দিয়ে বের হচ্ছে, আপনার
হাতে তখন কোন ক্ষমতা থাকবেনা চুল
পরিমাণ নাড়ানোর, ধারালো
দাঁতওয়ালা বড় বড় পোকা আপনার পেট
কামড়ে
নাড়ি ভুঁড়ি বের করে খাচ্ছে,আপনার
চোখে কামড়ে ধরে টেনে
হেচরে,একটা চোখ খুলে ফেলেছে,
যেখানে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করলে ও
কেউ শুনবে না, কেউ বাঁচাতে আসবেনা,
সেই জায়গার নাম হল ( কবর )
রোদ আর বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাওয়ার
জন্য ছাদ কিংবা টিনের চালা লাগাতে
হয়,চোর ডাকাতের ভয়ে দরজা জানালা
বানাতে হয়, অঙ্গ ঢাকার
জন্য কাপড় পরিধান করতে হয়, বাইক
চালানোর সময় মাথার সুরক্ষার জন্য
হেলমেট পরতে
হয়, প্রাইভেট কারে ভ্রমণ করলে
কিংবা নিজে ড্রাইভিং করলে,এক্সিডেন্ট
করলে বা হার্ড ব্রেক করলে, যেন বড়
ধরনের কোন ক্ষতি না হয় তাই
সিটবেল্ট বেঁধে রাখে,ক্ষনস্থায়ী
দুনিয়াতে অল্পকিছু সময় বসবাস
করার জন্য,আমার যে কত কিছু করি, দুনিয়া
ক্ষনস্থায়ী এই কথা সবাই জানে, তবু
আমরা এই ক্ষণস্থায়ী সুখশান্তির
জন্য,জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট
করি,আমাদেরকে যেখানে চিরস্থায়ী
রাখার ব্যবস্থা করেছে, সেখানে
চিরস্থায়ী থাকতে হলে, বাজার সদাই
আগেভাগে করে নিতে হবে, খালি
পেটে কি আর থাকা যায় নাকি! দুনিয়ার
মালকে ভালবাসলে, পরকালে এই মাল
আপনার সবচেয়ে বড় কাল হয়ে দাঁড়াবে,
এই মালের হিসাব দিতে গিয়ে, আগুনের
মাঝে ঝাঁপ দিতে হবে!তাই মাল কে নয়
বরং আমল কে ভালবাসুন! মালের পিছে না ছুটে আমলেরপিছে ছুটেন,মাল না আমল সঞ্চয় করেন,মাল সাথে যাবেনা,আমল সাথে যাবে!
ঢাল তলোয়ার ছাড়া যুদ্ধে গেলে ফিরে
আসবে লাশ,পরকালে ঈমান আমল ছাড়া
গেলে হবে সর্বনাশ!তাই আমাদের ঈমান ও
আমল,জাহান্নামের আযাব থেকে
আমাদেরকে রক্ষা করার জন্য ঢাল
তলোয়ার হিসেবে কাজে লাগবে!
তাকেই সবচেয়ে বেশি
ভালবাসুন,যাকে ভালবাসলে আখিরাতে
তার বিনিময় পাওয়া যাবে জান্নাত।
আমরা আদমের সন্তান , আমরা জান্নাত থেকেই এসেছি সুতারাং আমাদেরকে জান্নাতেই ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে..