ঢাকা ০৭:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
যাত্রী আন্দোলনের মুখে সিলেট থেকে ঢাকাগামী পারাবত এক্সপ্রেসে সিলেট থেকে হরষপুর পর্যন্ত আন্দোলন করলেও মৌলভীবাজার লাভবান হবিগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন পেলেন সৈয়দ মো. ফয়সল মাধবপুরে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মচারীর বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি-চুরির মামলা চাঞ্চল্যকর জিয়া হত্যা: দীর্ঘ এক বছর পর আপন ভাই বাবুল গ্রেফতার, পরিবারের দিকেই সন্দেহের তীর গোপশহর প্রবাসী ট্রাস্ট ইউকে’র দ্বীবার্ষিক সম্মেলন ও নতুন কার্যকরী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত রেলের টিকেট ঘরে বসে বুকিং আর নয়, স্টেশনে গেলেই “দৈত্যের” হাতে মিলবে রেলের টিকিট! আমিরাতে লটারি জিতে একসঙ্গে ভাগ্য খুলে গেল দুই বাংলাদেশির মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের নতুন হাইকমিশনার মঞ্জুরুল করিম ১২ কর্মকর্তাকে ঢাকায় না থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অফিস করার নির্দেশ সড়ক উপদেষ্টার “সিলেট পলিটেকনিকে দিনব্যাপী স্কিলস এন্ড ইনোভেশন কম্পিটিশন সম্পন্ন”

বিতর্কিত’ পাইপলাইনের অনুমোদন দিলেন ট্রাম্প


পাইপলাইন প্রকল্পে স্বাক্ষর করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
পাইপলাইন প্রকল্পে স্বাক্ষর করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
অপরিশোধিত তেল পরিবহনে ‘বিতর্কিত’ দু’টি পাইপলাইনের অনুমোদন দিলেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) কিস্টোন এক্সএল ও ডাকোটা অ্যাকসেস প্রকল্প দু’টিতে স্বাক্ষরের মাধ্যমে তিনি এই অনুমোদন দিয়েছেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশটির পরিবেশ আন্দোলনকারীরা। বুধবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, এর আগে ২০১৫ সালের শেষের দিকে ওবামা প্রশাসন কানাডা থেকে টেক্সাসে অপরিশোধিত তেল পরিবহনে কিস্টোন এক্সএল পাইপলাইন স্থাপন স্থগিত করেছিলেন। স্থানীয় আদিবাসীদের বিক্ষোভের মুখে মার্কিন ডাকোটা পাইপলাইনের জন্যই বিকল্প রুট অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন সেনাবাহিনী।
কিন্তু মঙ্গলবার মার্কিন সময় সকালে হোয়াইট হাউজে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, দু’টি প্রকল্পই নতুন করে নির্ধারিত শর্তাবলীর অধীনে বাস্তবায়িত হবে। এর মধ্যে কিস্টোন এক্সএল প্রকল্পে স্বাক্ষরের সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, এই প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান তৈরি হবে। তবে এসব প্রকল্পের বিরোধীরা বলছেন, কর্মসংস্থানের প্রায় সবই অস্থায়ী। প্রকল্পের নির্মাণ শেষ হলে খুব কমসংখ্যক মানুষই এখানে কর্মরত থাকবেন।
অন্যদিকে, ডাকোটা অ্যাকসেস প্রকল্পের পাইপলাইন তৈরিতে মার্কিন ইস্পাত ব্যবহৃত হবে বলে জানা গেছে। এই প্রকল্প প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘এখন থেকে আমরা যুক্তরাষ্ট্রে পাইপলাইন তৈরি করতে থাকব, ঠিক যেমনটি আমরা পুরোনো দিনে করেছি।’
কিস্টোন এক্সএল ও ডাকোটা অ্যাকসেস প্রকল্পে ট্রাম্পের অনুমোদনে তীব্র ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশটির পরিবেশ রক্ষাকারী আন্দোলকারীরা। গ্রিনপিসের পরিচালক অ্যানি লিওনার্ড বলেছেন, পাইপলাইনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান তৈরি হবে এমন ভুয়া দাবি করা বাদ দিয়ে ট্রাম্পের উচিত হবে আমেরিকার ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে মনোযোগী হওয়া।
সিয়েরা ক্লাবের পরিচালক মাইকেল ব্রুন বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প চার দিন হলো অফিস করছেন এবং এরই মধ্যে তিনি আমাদের জলবায়ুর ক্ষেত্রে বিপদজনক হুমকি হিসেবে প্রমাণিত হতে শুরু করেছেন, যেমনটি আমরা আশঙ্কা করেছিলাম।’
‘বিতর্কিত’ দুই পাইপলাইনের মধ্যে ডাকোটার পাইপলাইনটি আদিবাসীদের সংরক্ষিত এলাকার মধ্য দিয়ে যাবে। এই প্রকল্পের বিরোধিতাকারী ও ডাকোটার আদিবাসীদের অভিযোগ, অপরিশোধিত তেল পরিবহনের জন্য নর্থ ডাকোটা থেকে শিকাগোর পরিশোধনাগার পর্যন্ত প্রস্তাবিত পাইপলাইন স্থাপিত হলে তা আদিবাসী গোষ্ঠীর জীবনযাপন ও পরিবেশের ওপর প্রভাব ফেলবে। আদিবাসী গোষ্ঠীর নেতারা বলছেন, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত ‘আইন ও আদিবাসী চুক্তি’র লঙ্ঘন। তারা এর বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়েরও ঘোষণা দিয়েছেন। আদিবাসী গোষ্ঠীটির চেয়ারম্যান ডেভ আর্জামবল্ট দ্বিতীয় এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমেরিকানরা জানে যে এই পাইপলাইন অন্যায্যভাবে আমাদের গোষ্ঠীর ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তা আমাদের না জানিয়েই করা হয়েছে।’
মার্কিন তেল খাত অবশ্য ট্রাম্পের এই উদ্যোগকে স্বাগতই জানিয়েছে। তাদের পক্ষে রয়েছেন কিছু রিপাবলিকানও। টেক্সাসের সিনেটর জন করনিন বলেন, ‘আজকের এই খবর মুক্ত বাতাসে শ্বাস নেওয়ার মতো। এটা প্রমাণ করে যে, আমেরিকার কর্মীদের জন্য যা সবচেয়ে ভালো হবে তা বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কোনও বিশেষ স্বার্থ নিয়ে কাজ করা উগ্রবাদী দলকে বাধা হয়ে দাঁড়াতে দেবেন না।’
কিস্টোন এক্সএলের পাইপলাইনকে জন্য দীর্ঘদিন ধরে সমর্থন জানিয়ে আসছিল কানাডাও। কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হার্পারের সময় থেকেই এই পাইপলাইনের পক্ষে কানাডা। তার উত্তরসূরি জাস্টিন ট্রুডোর সরকারও এই পাইপলাইনের পক্ষে। এই পাইপলাইনের প্রকল্পে ট্রাম্পের স্বাক্ষরের পর তাই কানাডার প্রাকৃতিক সম্পদবিষয়ক মন্ত্রী ট্রাম্পের এই উদ্যোগের প্রশংসাই করেছেন।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

যাত্রী আন্দোলনের মুখে সিলেট থেকে ঢাকাগামী পারাবত এক্সপ্রেসে সিলেট থেকে হরষপুর পর্যন্ত আন্দোলন করলেও মৌলভীবাজার লাভবান

বিতর্কিত’ পাইপলাইনের অনুমোদন দিলেন ট্রাম্প

আপডেট সময় : ০৬:৪৮:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০১৭


পাইপলাইন প্রকল্পে স্বাক্ষর করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
পাইপলাইন প্রকল্পে স্বাক্ষর করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
অপরিশোধিত তেল পরিবহনে ‘বিতর্কিত’ দু’টি পাইপলাইনের অনুমোদন দিলেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) কিস্টোন এক্সএল ও ডাকোটা অ্যাকসেস প্রকল্প দু’টিতে স্বাক্ষরের মাধ্যমে তিনি এই অনুমোদন দিয়েছেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশটির পরিবেশ আন্দোলনকারীরা। বুধবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, এর আগে ২০১৫ সালের শেষের দিকে ওবামা প্রশাসন কানাডা থেকে টেক্সাসে অপরিশোধিত তেল পরিবহনে কিস্টোন এক্সএল পাইপলাইন স্থাপন স্থগিত করেছিলেন। স্থানীয় আদিবাসীদের বিক্ষোভের মুখে মার্কিন ডাকোটা পাইপলাইনের জন্যই বিকল্প রুট অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন সেনাবাহিনী।
কিন্তু মঙ্গলবার মার্কিন সময় সকালে হোয়াইট হাউজে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, দু’টি প্রকল্পই নতুন করে নির্ধারিত শর্তাবলীর অধীনে বাস্তবায়িত হবে। এর মধ্যে কিস্টোন এক্সএল প্রকল্পে স্বাক্ষরের সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, এই প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান তৈরি হবে। তবে এসব প্রকল্পের বিরোধীরা বলছেন, কর্মসংস্থানের প্রায় সবই অস্থায়ী। প্রকল্পের নির্মাণ শেষ হলে খুব কমসংখ্যক মানুষই এখানে কর্মরত থাকবেন।
অন্যদিকে, ডাকোটা অ্যাকসেস প্রকল্পের পাইপলাইন তৈরিতে মার্কিন ইস্পাত ব্যবহৃত হবে বলে জানা গেছে। এই প্রকল্প প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘এখন থেকে আমরা যুক্তরাষ্ট্রে পাইপলাইন তৈরি করতে থাকব, ঠিক যেমনটি আমরা পুরোনো দিনে করেছি।’
কিস্টোন এক্সএল ও ডাকোটা অ্যাকসেস প্রকল্পে ট্রাম্পের অনুমোদনে তীব্র ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশটির পরিবেশ রক্ষাকারী আন্দোলকারীরা। গ্রিনপিসের পরিচালক অ্যানি লিওনার্ড বলেছেন, পাইপলাইনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান তৈরি হবে এমন ভুয়া দাবি করা বাদ দিয়ে ট্রাম্পের উচিত হবে আমেরিকার ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে মনোযোগী হওয়া।
সিয়েরা ক্লাবের পরিচালক মাইকেল ব্রুন বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প চার দিন হলো অফিস করছেন এবং এরই মধ্যে তিনি আমাদের জলবায়ুর ক্ষেত্রে বিপদজনক হুমকি হিসেবে প্রমাণিত হতে শুরু করেছেন, যেমনটি আমরা আশঙ্কা করেছিলাম।’
‘বিতর্কিত’ দুই পাইপলাইনের মধ্যে ডাকোটার পাইপলাইনটি আদিবাসীদের সংরক্ষিত এলাকার মধ্য দিয়ে যাবে। এই প্রকল্পের বিরোধিতাকারী ও ডাকোটার আদিবাসীদের অভিযোগ, অপরিশোধিত তেল পরিবহনের জন্য নর্থ ডাকোটা থেকে শিকাগোর পরিশোধনাগার পর্যন্ত প্রস্তাবিত পাইপলাইন স্থাপিত হলে তা আদিবাসী গোষ্ঠীর জীবনযাপন ও পরিবেশের ওপর প্রভাব ফেলবে। আদিবাসী গোষ্ঠীর নেতারা বলছেন, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত ‘আইন ও আদিবাসী চুক্তি’র লঙ্ঘন। তারা এর বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়েরও ঘোষণা দিয়েছেন। আদিবাসী গোষ্ঠীটির চেয়ারম্যান ডেভ আর্জামবল্ট দ্বিতীয় এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমেরিকানরা জানে যে এই পাইপলাইন অন্যায্যভাবে আমাদের গোষ্ঠীর ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তা আমাদের না জানিয়েই করা হয়েছে।’
মার্কিন তেল খাত অবশ্য ট্রাম্পের এই উদ্যোগকে স্বাগতই জানিয়েছে। তাদের পক্ষে রয়েছেন কিছু রিপাবলিকানও। টেক্সাসের সিনেটর জন করনিন বলেন, ‘আজকের এই খবর মুক্ত বাতাসে শ্বাস নেওয়ার মতো। এটা প্রমাণ করে যে, আমেরিকার কর্মীদের জন্য যা সবচেয়ে ভালো হবে তা বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কোনও বিশেষ স্বার্থ নিয়ে কাজ করা উগ্রবাদী দলকে বাধা হয়ে দাঁড়াতে দেবেন না।’
কিস্টোন এক্সএলের পাইপলাইনকে জন্য দীর্ঘদিন ধরে সমর্থন জানিয়ে আসছিল কানাডাও। কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হার্পারের সময় থেকেই এই পাইপলাইনের পক্ষে কানাডা। তার উত্তরসূরি জাস্টিন ট্রুডোর সরকারও এই পাইপলাইনের পক্ষে। এই পাইপলাইনের প্রকল্পে ট্রাম্পের স্বাক্ষরের পর তাই কানাডার প্রাকৃতিক সম্পদবিষয়ক মন্ত্রী ট্রাম্পের এই উদ্যোগের প্রশংসাই করেছেন।