ঢাকা ০৩:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচির লিফলেট বিতরন শুরু ব্রিটেনে চলতি বছরের শেষ দিকে নির্বাচন হতে পারে: এনএইচকেকে প্রধান উপদেষ্টা হবিগঞ্জে হাসপাতাল থেকে আসামি পালানোর ঘটনায় ২ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত মেহের আফরোজ শাওন গ্রেপ্তার বহিষ্কৃত নেতা সাংগঠনিক টিম প্রধান! বাংলাদেশী সংস্কৃতির বিকাশ বইমেলা আয়োজনের বিকল্প নেই : মিফতাহ্ সিদ্দিকী ওয়েলস কুলাউড়া সোসাইটি ইউকের উদ্দোগে কার্ডিফে মরহুম ফিরুজ আলীর মৃত্যুতে শোক সভা ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত নো-ভিসা ফি বৃদ্ধি ও ম্যানচেস্টার থেকে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট বন্ধের পায়তারার দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা নতুন দল গঠন নিয়ে বিএনপি হিংসা করে না: মির্জা আব্বাস

বীরশ্রেষ্ঠের ছেলের মানবেতর জীবন

স্টাফ রিপোর্টার,
434
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন। মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী বীর সেনানী। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য রাষ্ট্র তাকে দেয় সর্বোচ্চ সম্মান। অথচ সাত বীরশ্রেষ্ঠের অন্যতম রুহুল আমিনের পরিবার এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। তার ছেলে শওকত আলী মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন স্থানে। শওকত আলী কখনো হকার, কখনো দিনমজুর। কোনরকমে বেঁচে আছেন তিনি।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার বাগপাচরা গ্রামে কথা হয় শওকতের স্ত্রী রাবেয়া আক্তারের সঙ্গে। যে গ্রামটি এখন পরিচিত আমিননগর নামে। শওকতের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার জানান, সরকার থেকে প্রাপ্ত ভাতার একটি অংশ তারা পেয়ে থাকেন। এই টাকা দিয়ে তাদের সংসার চলে না। এরশাদের আমলে সরকার তাদের একটি পাকাঘর নির্মাণ করে দিয়েছিল। কিন্তু সেই ঘরের এখন জীর্ণদশা। পলেস্তারা খসে পড়েছে। বৃষ্টি হলে পানি পড়ে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদের উদ্যোগে তাদের বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা করে দেয়া হয়। বাড়ির সামনে একটি মিউজিয়ামও নির্মাণ করা হয়েছে। তবে রাবেয়া আক্তারের অভিযোগ দুঃসহ জীবনযাপন করলেও কেউ তাদের খবর রাখেন না। তিনি বলেন, আমরা সরকারের কাছ থেকে তেমন কোন সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমার স্বামী দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালায়। অর্থের অভাবে স্বামীর চিকিৎসা চলছে না।
জানা গেছে, গত বুধবার নোয়াখালীর পুলিশ সুপার ইলিয়াছ শরীফ তার কার্যালয়ে শওকতকে ডেকে নেন। এ সময় শওকতের সঙ্গে ছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্মৃতি জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়ক আলাউদ্দিন। এখানে তারা উভয়ে দুপুরের খাওয়া খান। এ সময় শওকত পুলিশ সুপারের কাছে একটি মোটরসাইকেল ও একটি দোকানের ব্যবস্থা করার দাবি জানান।
শওকতের চাচা আবুল খায়ের পাটোয়ারী জানান, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ছোট ছেলে শওকতকে ছোটবেলায় স্কুলে ও মাদরাসায় পাঠানো হয়। পরে তাকে কোরআনে হাফেজ বানানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। তখন সে ১৭/১৮ পারা কোরআন হেফজ করে। কিন্তু এরপর তার পড়ালেখা আর এগোয়নি। এখন সে অনেকটাই মানবেতর জীবনযাপন করছে। যখন যা খুশি তাই করছে। যেমন- ঠেলাগাড়ি চালানো, কচুরলতি, বোতল ইত্যাদি কুড়িয়ে নিয়ে বিক্রি করে। এতে যে যা দেয় তাই নেয় সে। তবে কেবল কর্মের বিনিময়েই নেয়। কোন দান সে গ্রহণ করে না। রুহুল আমিন স্মৃতি জাদুঘর সংলগ্ন স্থানে শওকতের দাদা সম্পর্কীয় একজন বুজুর্গ হাফেজের একটি রওজা রয়েছে। ঐ রওজার নাম হাফেজ আবদুল বারেক ওরফে তেলুয়া হাফেজের রওজা শরীফ। শওকত ঐ রওজা শরীফে প্রায়ই যিকির আজকার করেন। স্থানীয়রা বলেন, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ছেলের এই দুরবস্থা তাদেরকে ব্যথিত করছে। সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপারে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্যও বিভিন্ন কোটা ও বরাদ্দের ব্যবস্থা করছে। বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের পরিবারও ভাতা পাচ্ছে। কিন্তু তা তাদের জন্য যথেষ্ট নয়। বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের পরিবারের সম্মানজনক জীবনযাপন নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তারা সরকারের প্রতি দাবি জানান।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচির লিফলেট বিতরন শুরু ব্রিটেনে

বীরশ্রেষ্ঠের ছেলের মানবেতর জীবন

আপডেট সময় : ০১:৫২:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগাস্ট ২০১৫

স্টাফ রিপোর্টার,
434
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন। মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী বীর সেনানী। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য রাষ্ট্র তাকে দেয় সর্বোচ্চ সম্মান। অথচ সাত বীরশ্রেষ্ঠের অন্যতম রুহুল আমিনের পরিবার এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। তার ছেলে শওকত আলী মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন স্থানে। শওকত আলী কখনো হকার, কখনো দিনমজুর। কোনরকমে বেঁচে আছেন তিনি।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার বাগপাচরা গ্রামে কথা হয় শওকতের স্ত্রী রাবেয়া আক্তারের সঙ্গে। যে গ্রামটি এখন পরিচিত আমিননগর নামে। শওকতের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার জানান, সরকার থেকে প্রাপ্ত ভাতার একটি অংশ তারা পেয়ে থাকেন। এই টাকা দিয়ে তাদের সংসার চলে না। এরশাদের আমলে সরকার তাদের একটি পাকাঘর নির্মাণ করে দিয়েছিল। কিন্তু সেই ঘরের এখন জীর্ণদশা। পলেস্তারা খসে পড়েছে। বৃষ্টি হলে পানি পড়ে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদের উদ্যোগে তাদের বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা করে দেয়া হয়। বাড়ির সামনে একটি মিউজিয়ামও নির্মাণ করা হয়েছে। তবে রাবেয়া আক্তারের অভিযোগ দুঃসহ জীবনযাপন করলেও কেউ তাদের খবর রাখেন না। তিনি বলেন, আমরা সরকারের কাছ থেকে তেমন কোন সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমার স্বামী দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালায়। অর্থের অভাবে স্বামীর চিকিৎসা চলছে না।
জানা গেছে, গত বুধবার নোয়াখালীর পুলিশ সুপার ইলিয়াছ শরীফ তার কার্যালয়ে শওকতকে ডেকে নেন। এ সময় শওকতের সঙ্গে ছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্মৃতি জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়ক আলাউদ্দিন। এখানে তারা উভয়ে দুপুরের খাওয়া খান। এ সময় শওকত পুলিশ সুপারের কাছে একটি মোটরসাইকেল ও একটি দোকানের ব্যবস্থা করার দাবি জানান।
শওকতের চাচা আবুল খায়ের পাটোয়ারী জানান, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ছোট ছেলে শওকতকে ছোটবেলায় স্কুলে ও মাদরাসায় পাঠানো হয়। পরে তাকে কোরআনে হাফেজ বানানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। তখন সে ১৭/১৮ পারা কোরআন হেফজ করে। কিন্তু এরপর তার পড়ালেখা আর এগোয়নি। এখন সে অনেকটাই মানবেতর জীবনযাপন করছে। যখন যা খুশি তাই করছে। যেমন- ঠেলাগাড়ি চালানো, কচুরলতি, বোতল ইত্যাদি কুড়িয়ে নিয়ে বিক্রি করে। এতে যে যা দেয় তাই নেয় সে। তবে কেবল কর্মের বিনিময়েই নেয়। কোন দান সে গ্রহণ করে না। রুহুল আমিন স্মৃতি জাদুঘর সংলগ্ন স্থানে শওকতের দাদা সম্পর্কীয় একজন বুজুর্গ হাফেজের একটি রওজা রয়েছে। ঐ রওজার নাম হাফেজ আবদুল বারেক ওরফে তেলুয়া হাফেজের রওজা শরীফ। শওকত ঐ রওজা শরীফে প্রায়ই যিকির আজকার করেন। স্থানীয়রা বলেন, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ছেলের এই দুরবস্থা তাদেরকে ব্যথিত করছে। সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপারে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্যও বিভিন্ন কোটা ও বরাদ্দের ব্যবস্থা করছে। বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের পরিবারও ভাতা পাচ্ছে। কিন্তু তা তাদের জন্য যথেষ্ট নয়। বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের পরিবারের সম্মানজনক জীবনযাপন নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তারা সরকারের প্রতি দাবি জানান।