ঢাকা ০৭:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচির লিফলেট বিতরন শুরু ব্রিটেনে চলতি বছরের শেষ দিকে নির্বাচন হতে পারে: এনএইচকেকে প্রধান উপদেষ্টা হবিগঞ্জে হাসপাতাল থেকে আসামি পালানোর ঘটনায় ২ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত মেহের আফরোজ শাওন গ্রেপ্তার বহিষ্কৃত নেতা সাংগঠনিক টিম প্রধান! বাংলাদেশী সংস্কৃতির বিকাশ বইমেলা আয়োজনের বিকল্প নেই : মিফতাহ্ সিদ্দিকী ওয়েলস কুলাউড়া সোসাইটি ইউকের উদ্দোগে কার্ডিফে মরহুম ফিরুজ আলীর মৃত্যুতে শোক সভা ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত নো-ভিসা ফি বৃদ্ধি ও ম্যানচেস্টার থেকে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট বন্ধের পায়তারার দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা নতুন দল গঠন নিয়ে বিএনপি হিংসা করে না: মির্জা আব্বাস

মুস্তাফিজের অজানা বিস্ময়কর গল্প

স্টাফ রিপোর্টার,
372
বিস্ময় জাগানো বাংলাদেশী তরুণ পেসার মুস্তাফিজুর রহমান বাঁহাতি। ছোটবেলা থেকেই শান্তশিষ্ট ও কথা বলেন কম। বড় তিন ভাই ও বাবা-মাকে কখনও তাকে নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়নি। ছোটবেলা থেকেই তিনি বাঁহাতি। এক সময় খাওয়া-দাওয়াও করতেন বাঁ হতে। কিন্তু পরে ডান হাতে খাওয়া শুরু করেন। আর এর পেছনে রয়েছে দারুণ এক গল্প। ‘ক্রিকইনফো’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে আমি সব কাজই বাঁ হাত দিয়ে করতাম। এমন নি খাওয়া-দাওয়াও। কিন্তু আমার মা একদিন আমাকে গ্রামের একটা জায়গায় নিয়ে যান। সেখান থেকে ফিরে আমি ডান হাত দিয়ে খাওয়া শুরু করি। আর কখনও বাঁ হাত দিয়ে খেতে পারিনি। সত্যিই তখন থেকে আমি আর বাঁ হাত দিয়ে খেতে পারতাম না। কিন্তু বাকি সব কাজ আগের মতো বাঁ হাত দিয়েই করি।’ বাংলাদেশী ক্রিকেট ভক্তদের জন্য এটা ভালই হয়েছে। খাবার খাওয়ার মতো অন্যান্য কাজেও যদি মুস্তাফিজ ডানহাতি হয়ে যেতেন তাহলে আজ আমরা তাকে এমন বোলার হিসেবে পেতাম কি-না!
মুস্তাফিজ শুধু পরিবারের ছোট সন্তান নয় বরং বাংলাদেশ জাতীয় দলের সবচেয়ে ছোট সদস্য। মুস্তাফিজের এমন ক্রিকেটার হয়ে ওঠার পেছনে তার সেজো ভাইয়ের অবদান অনেক সেটা তিনি আগেই জানিয়েছেন। আর তার আদর্শ বোলার পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ আমির সেটাও জানা কথা। কিন্তু বাবা আবুল কাসেম গাজির কাছ থেকেই ক্রিকেট বোঝা শুরু করেছেন বলে এবার জানালেন তিনি। বাবাও ছিলেন পাকিস্তানের কয়েকজন ক্রিকেটারের ভক্ত। খেলা হলে তার বাবা টিভির সামনে থেকে উঠতেন না বলে জানালেন মুস্তাফিজ। বলেন, ‘আমার বাবা পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরামের বোলিং দেখতে অনেক পছন্দ করতেন। এছাড়া পাকিস্তানের সাঈদ আনোয়ার ও মোহাম্মদ ইউসুফের ব্যাটিং তার অনেক পছন্দের। তখন আমি টিভিতে খুব বেশি ক্রিকেট দেখতাম না। তবে পরে ভিন্ন অভ্যাস হয়ে যায়। খুব ভোরে খেলা থাকলে আমি আগে আগে ঘুম থেকে উঠে টিভির সামনে বসে থাকতাম। খেরা দেকা তখন অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়।’
ক্রিকেটার হয়ে ওঠার পেছনের আরও গল্প জানালেন মুস্তাফিজ। আসলে তার পরিবারের সদস্যদের রক্তেই ক্রিকেট মিশে আছে। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনও টিভি পুরস্কার দিয়ে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়। মুস্তাফিজের ভাইয়েরা সাতক্ষীরায় তাদের এলাকায় এমন টুর্নামেন্টের জন্য একটি দল কেনে। যাতে তাদের ২০ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। বাইরে থেকে বড় খেলোয়াড় ভাড়া করার পেছনেই যার বেশিরভাগ টাকা খরচ হয়ে যায়। কিন্তু ২০ হাজার টাকা খরচ করে তাদের পুরস্কার ছিল ৩ হাজার টাকার টেলিভিশন সেট। আর এমন এক টুর্নামেন্টের প্রস্তুতিতে মুস্তাফিজের প্রতিভা ধরা পড়ে। তবে দলের খেলোয়াড় হিসেবে নয়। মুস্তাফিজ বলেন, ‘আমি তখন অনেক ছোট। ভাইয়েরা এমন টুর্নামেন্টের আয়োজন করতো। আমাদের দলে বাইরে থেকে খেলোয়াড় ভাড়া করে আনা হয়েছিল একবার। তাদের মধ্যে মিলন ও আফতার নামে দারুণ দু’জন ব্যাটসম্যান ছিলেন। খেলার আগে আমি তাদের বিপক্ষে অনুশীলনে বল করি। আমার বল দেখে তারা আমার ভাইকে বলেন- আমার বল তাদের খুব পছন্দ হয়েছে। আমি খুব ভাল বল করি। সাতক্ষীরায় বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে তারা আমাকে ডাকবেন বলে আশ্বাস দেন।’ এভাবেই শুরু হয় মুস্তাফিজের পথচলা। পুরোটা বর্ণনা দিয়ে তিনি বরেন, ‘আমি তখন সাতক্ষীরা শহর চিনতাম না। বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট এলে তারা আমাকে ডাকলেন। তারা আমার দাঁত দেখে (বয়স পরীক্ষার জন্য) আমাকে দলে বিবেচনা করে। তখন অনূর্ধ্ব-১৬ দলের সঙ্গে আমি অনুশীলন শুরু করি। এই প্রথম আমি আসল ক্রিকেট বল দেখি। তারা ৫১ জন ছেলেকে ওই টুর্নামেন্টের বাছাই করে। সেখান থেকে এক পর্যায়ে ১৪ দলের দলে নেমে আসে। আমি ওই টুর্নামেন্টে জেলার হয়ে খেলি। এরপর আস্তে আস্তে বিভাগভিত্তিক খেলায় সুযোগ পাই।’
নিজের এমন উত্থানের পেছনে তিনি আল্লাহর রহমত দেখছেন। আল্লাহর রহমত ছাড়া এমন করা সম্ভব নয় বলে তার বিশ্বাস। ২০১৪ সালের মে মাসের মুস্তাফিজ ও ২০১৫ সালের আগস্ট মাসের মুস্তাফিজের মধ্যে তুলনা করতে বলা হলে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ আমাকে এমন ভাল সময় দিয়েছেন। কোনোকিছু করতে আল্লাহর সাহায্য আপনার অনেক প্রয়োজন। আমি জাতীয় দলের নেটে বল করার সময় এই পর্যায়ের বোলার ছিলাম না। আমি ভাল করার চেষ্টা করতাম। ভাল করতে পারলে কোনো এক জায়গায় সুযোগ হবে এটাই ভাবতাম। কিন্তু জাতীয় দলে ডাক পাবো তা ভাবিনি।’
পেস বোলাররা সাধারণত মাঠে আগ্রাসী মেজাজে থাকেন। কিন্তু মুস্তাফিক এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। কোনো প্রতিক্রিয়া দেখান না বলেলেই চলে। ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে মহেন্দ্র সিং ধোনির আঘাত খেয়েও তিনি ছিলেন একেবারে চুপ। ফিরেও তাকাননি ধোনির দিকে। মুস্তাফিজের প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেট ছিল পাকিস্তানের শহিদ আফ্রিদি। তবে এটা ছিল তার ভাগ্য সহায়ক উইকেট। মুস্তাফিজের বল আফ্রিদির ব্যাট না ছুঁয়েই উইকেটরক্ষকের হাতে জমা পড়ে। বোলার ও ফিল্ডাররা আবেদন করলে আম্পায়ার আঙ্গুল তুলে দেন। বিষয়টি নিয়ে মুস্তাফিজ বলেন, ‘সে (আফ্রিদি) বল মরেনি। কিন্তু আমার মনে হয়েছিল বল তার ব্যাটে লেগেছে। আমার কাজ ছিল আবেদন করা, আর সেটাই করেছিলাম। আমরা কেউ জানতাম না, কী হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত উইকেটটা পেয়ে গেলাম।’ মুস্তাফিজ কখনও সেøজিং করেন না। তবে ইতিমধ্যে সেøজিংয়ের শিকার হয়েছেন। ভারতের ব্যাটসম্যানরিাট কোহলি তাকে সেøজিং করেন বলে মুস্তাফিজ নিজেই জানালেন। বলেন, ‘আমি কখনও সেøজিং করি না। এমন কি পছন্দও করিনা। অনেকে বলেন, পেস বোলারদের সেøজিং করতে হয়। কিন্তু আমার মনে ব্যাটসম্যানের কাজ ব্যাটসম্যান করবে আর আমার কাজ আমি করবো। আমি ভারতের বিপক্ষে বিরাট কোহলির উইকেট পাইনি। তবে তার উইকেট পেলে খুবই মজা পেতাম। কোনো এক ওভারে সে আমাকে চার কিংবা ছক্কা মেরে বলেছিল, তুমি এতো সেøা বল করো কেন? আমি তাকে কিছুই বলিনি। মুস্তাফিজ ক্যারিয়াররে প্রথম ১১ ম্যাচে ২৫ উইকেট নিয়েছেন। ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টেস্ট এবং ওয়ানডে অভিষেকে ম্যাচসেরা খেলোয়াড় হওয়ার গৌরব তার দখলে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচির লিফলেট বিতরন শুরু ব্রিটেনে

মুস্তাফিজের অজানা বিস্ময়কর গল্প

আপডেট সময় : ১০:০৩:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ অগাস্ট ২০১৫

স্টাফ রিপোর্টার,
372
বিস্ময় জাগানো বাংলাদেশী তরুণ পেসার মুস্তাফিজুর রহমান বাঁহাতি। ছোটবেলা থেকেই শান্তশিষ্ট ও কথা বলেন কম। বড় তিন ভাই ও বাবা-মাকে কখনও তাকে নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়নি। ছোটবেলা থেকেই তিনি বাঁহাতি। এক সময় খাওয়া-দাওয়াও করতেন বাঁ হতে। কিন্তু পরে ডান হাতে খাওয়া শুরু করেন। আর এর পেছনে রয়েছে দারুণ এক গল্প। ‘ক্রিকইনফো’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে আমি সব কাজই বাঁ হাত দিয়ে করতাম। এমন নি খাওয়া-দাওয়াও। কিন্তু আমার মা একদিন আমাকে গ্রামের একটা জায়গায় নিয়ে যান। সেখান থেকে ফিরে আমি ডান হাত দিয়ে খাওয়া শুরু করি। আর কখনও বাঁ হাত দিয়ে খেতে পারিনি। সত্যিই তখন থেকে আমি আর বাঁ হাত দিয়ে খেতে পারতাম না। কিন্তু বাকি সব কাজ আগের মতো বাঁ হাত দিয়েই করি।’ বাংলাদেশী ক্রিকেট ভক্তদের জন্য এটা ভালই হয়েছে। খাবার খাওয়ার মতো অন্যান্য কাজেও যদি মুস্তাফিজ ডানহাতি হয়ে যেতেন তাহলে আজ আমরা তাকে এমন বোলার হিসেবে পেতাম কি-না!
মুস্তাফিজ শুধু পরিবারের ছোট সন্তান নয় বরং বাংলাদেশ জাতীয় দলের সবচেয়ে ছোট সদস্য। মুস্তাফিজের এমন ক্রিকেটার হয়ে ওঠার পেছনে তার সেজো ভাইয়ের অবদান অনেক সেটা তিনি আগেই জানিয়েছেন। আর তার আদর্শ বোলার পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ আমির সেটাও জানা কথা। কিন্তু বাবা আবুল কাসেম গাজির কাছ থেকেই ক্রিকেট বোঝা শুরু করেছেন বলে এবার জানালেন তিনি। বাবাও ছিলেন পাকিস্তানের কয়েকজন ক্রিকেটারের ভক্ত। খেলা হলে তার বাবা টিভির সামনে থেকে উঠতেন না বলে জানালেন মুস্তাফিজ। বলেন, ‘আমার বাবা পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরামের বোলিং দেখতে অনেক পছন্দ করতেন। এছাড়া পাকিস্তানের সাঈদ আনোয়ার ও মোহাম্মদ ইউসুফের ব্যাটিং তার অনেক পছন্দের। তখন আমি টিভিতে খুব বেশি ক্রিকেট দেখতাম না। তবে পরে ভিন্ন অভ্যাস হয়ে যায়। খুব ভোরে খেলা থাকলে আমি আগে আগে ঘুম থেকে উঠে টিভির সামনে বসে থাকতাম। খেরা দেকা তখন অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়।’
ক্রিকেটার হয়ে ওঠার পেছনের আরও গল্প জানালেন মুস্তাফিজ। আসলে তার পরিবারের সদস্যদের রক্তেই ক্রিকেট মিশে আছে। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনও টিভি পুরস্কার দিয়ে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়। মুস্তাফিজের ভাইয়েরা সাতক্ষীরায় তাদের এলাকায় এমন টুর্নামেন্টের জন্য একটি দল কেনে। যাতে তাদের ২০ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। বাইরে থেকে বড় খেলোয়াড় ভাড়া করার পেছনেই যার বেশিরভাগ টাকা খরচ হয়ে যায়। কিন্তু ২০ হাজার টাকা খরচ করে তাদের পুরস্কার ছিল ৩ হাজার টাকার টেলিভিশন সেট। আর এমন এক টুর্নামেন্টের প্রস্তুতিতে মুস্তাফিজের প্রতিভা ধরা পড়ে। তবে দলের খেলোয়াড় হিসেবে নয়। মুস্তাফিজ বলেন, ‘আমি তখন অনেক ছোট। ভাইয়েরা এমন টুর্নামেন্টের আয়োজন করতো। আমাদের দলে বাইরে থেকে খেলোয়াড় ভাড়া করে আনা হয়েছিল একবার। তাদের মধ্যে মিলন ও আফতার নামে দারুণ দু’জন ব্যাটসম্যান ছিলেন। খেলার আগে আমি তাদের বিপক্ষে অনুশীলনে বল করি। আমার বল দেখে তারা আমার ভাইকে বলেন- আমার বল তাদের খুব পছন্দ হয়েছে। আমি খুব ভাল বল করি। সাতক্ষীরায় বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে তারা আমাকে ডাকবেন বলে আশ্বাস দেন।’ এভাবেই শুরু হয় মুস্তাফিজের পথচলা। পুরোটা বর্ণনা দিয়ে তিনি বরেন, ‘আমি তখন সাতক্ষীরা শহর চিনতাম না। বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট এলে তারা আমাকে ডাকলেন। তারা আমার দাঁত দেখে (বয়স পরীক্ষার জন্য) আমাকে দলে বিবেচনা করে। তখন অনূর্ধ্ব-১৬ দলের সঙ্গে আমি অনুশীলন শুরু করি। এই প্রথম আমি আসল ক্রিকেট বল দেখি। তারা ৫১ জন ছেলেকে ওই টুর্নামেন্টের বাছাই করে। সেখান থেকে এক পর্যায়ে ১৪ দলের দলে নেমে আসে। আমি ওই টুর্নামেন্টে জেলার হয়ে খেলি। এরপর আস্তে আস্তে বিভাগভিত্তিক খেলায় সুযোগ পাই।’
নিজের এমন উত্থানের পেছনে তিনি আল্লাহর রহমত দেখছেন। আল্লাহর রহমত ছাড়া এমন করা সম্ভব নয় বলে তার বিশ্বাস। ২০১৪ সালের মে মাসের মুস্তাফিজ ও ২০১৫ সালের আগস্ট মাসের মুস্তাফিজের মধ্যে তুলনা করতে বলা হলে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ আমাকে এমন ভাল সময় দিয়েছেন। কোনোকিছু করতে আল্লাহর সাহায্য আপনার অনেক প্রয়োজন। আমি জাতীয় দলের নেটে বল করার সময় এই পর্যায়ের বোলার ছিলাম না। আমি ভাল করার চেষ্টা করতাম। ভাল করতে পারলে কোনো এক জায়গায় সুযোগ হবে এটাই ভাবতাম। কিন্তু জাতীয় দলে ডাক পাবো তা ভাবিনি।’
পেস বোলাররা সাধারণত মাঠে আগ্রাসী মেজাজে থাকেন। কিন্তু মুস্তাফিক এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। কোনো প্রতিক্রিয়া দেখান না বলেলেই চলে। ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে মহেন্দ্র সিং ধোনির আঘাত খেয়েও তিনি ছিলেন একেবারে চুপ। ফিরেও তাকাননি ধোনির দিকে। মুস্তাফিজের প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেট ছিল পাকিস্তানের শহিদ আফ্রিদি। তবে এটা ছিল তার ভাগ্য সহায়ক উইকেট। মুস্তাফিজের বল আফ্রিদির ব্যাট না ছুঁয়েই উইকেটরক্ষকের হাতে জমা পড়ে। বোলার ও ফিল্ডাররা আবেদন করলে আম্পায়ার আঙ্গুল তুলে দেন। বিষয়টি নিয়ে মুস্তাফিজ বলেন, ‘সে (আফ্রিদি) বল মরেনি। কিন্তু আমার মনে হয়েছিল বল তার ব্যাটে লেগেছে। আমার কাজ ছিল আবেদন করা, আর সেটাই করেছিলাম। আমরা কেউ জানতাম না, কী হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত উইকেটটা পেয়ে গেলাম।’ মুস্তাফিজ কখনও সেøজিং করেন না। তবে ইতিমধ্যে সেøজিংয়ের শিকার হয়েছেন। ভারতের ব্যাটসম্যানরিাট কোহলি তাকে সেøজিং করেন বলে মুস্তাফিজ নিজেই জানালেন। বলেন, ‘আমি কখনও সেøজিং করি না। এমন কি পছন্দও করিনা। অনেকে বলেন, পেস বোলারদের সেøজিং করতে হয়। কিন্তু আমার মনে ব্যাটসম্যানের কাজ ব্যাটসম্যান করবে আর আমার কাজ আমি করবো। আমি ভারতের বিপক্ষে বিরাট কোহলির উইকেট পাইনি। তবে তার উইকেট পেলে খুবই মজা পেতাম। কোনো এক ওভারে সে আমাকে চার কিংবা ছক্কা মেরে বলেছিল, তুমি এতো সেøা বল করো কেন? আমি তাকে কিছুই বলিনি। মুস্তাফিজ ক্যারিয়াররে প্রথম ১১ ম্যাচে ২৫ উইকেট নিয়েছেন। ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টেস্ট এবং ওয়ানডে অভিষেকে ম্যাচসেরা খেলোয়াড় হওয়ার গৌরব তার দখলে।