হামিদুর রহমান,
কোয়েল খামার দিয়ে ডিম ও কোয়েল বিক্রি করে আলোর মুখ দেখছে সুজন। তার এই কোয়েল খামার এখন স্থানীয় বেকারদের মধ্যে সাড়া জাগিয়েছে। পারিবারিক ভাবে সাম্বলম্ভী হলেও ঘরে বসে না থেকে নিজে পরিশ্রম করে ভালো কিছু করার ইচ্ছে নিয়ে নেমে পড়েন কোয়েল পালনে। এখন প্রতিদিন স্থানীয় যুবকরা তার কাছে গিয়ে কোয়েল পালনের পরামর্শ নিচ্ছেন।
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের মঙ্গলপুর গ্রামের আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে সুজন মিয়া। ছোট বেলা থেকেই স্বাধীনচেতা। তাই বেশী দুর পড়াশুনা হয়নি। এক সময় যখন বেকার ঘুরাফেরা করছিল তখন পরিবারের লোকজন অনেকটা জোর করে তাকে পাঠিয়ে দেয় ওমান। সেখানে ৮ বছর কাটিয়ে দেশে ফেরেন।
আবারও বেকার হয়ে যান তিনি। কিন্তু দমে যাননি বা পরিবারের সদস্যদের হাতের দিকে না তাকিয়ে নিজে কিছু করার চেষ্টা চালাতে থাকেন। এক সময় তাকে পেয়ে বসে কোয়েল পাখির নেশা। বাড়ির পাশে একটি জমিতে ঘর তৈরী করে পালন করতে শুরু করেন কোয়েল। প্রায় ১ বছর পূর্বে সিলেট থেকে বাচ্চা এনে শুরু করেন পালন। কোয়েল পালনের উপর কোন প্রশিক্ষন না থাকলেও যে স্থান থেকে তিনি বাচ্চা কিনে আনতেন তাদের পরামর্শে এগিয়ে যেতে থাকেন। বর্তমানে তার খামার কোয়েলে ভরপুর। স্থানীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে কোয়েলের ডিম। এক হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়।
koyel-khamar-sujonসরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির পাশে একটি উচু জমিতে ঘর তৈরী করে তার চারপাশে নেট দিয়ে বেড়া দিয়ে তৈরী করেছেন কোয়েলের খামার। পরিচ্ছন্ন ঘর। আলো বাতাস লাগার সুবিধার্থে এই রকম ঘর তৈরী করা। সুজন মিয়া জানান, ওমান থেকে এসে কি করবে ভেবে না পেয়ে এক সময় তিনি শুরু করেন কোয়েল পালন। প্রথমে কম কোয়েল আনেন। কিন্তু এখন তার খামারে কয়েক হাজার কোয়েল পাখি রয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে কোয়েলের ডিম বির্ভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে। একটি কোয়েল ১৮ মাস পর্যন্ত ডিম দেয়। কোয়েলের মাংসও সুস্বাদু খাদ্য। কোয়েল গুলো যখন ডিম পারা বন্ধ করে দেয় তখন সেগুলো বাজারে বিক্রি করে দেওয়া হয়। কোয়েলের মাংস সুস্বাদু হওয়ায় চাহিদা বেশি। কোয়েল সাধারণত মোরগের খাবার খেয়ে থাকে। অন্য খাবারের প্রয়োজন হয় না।
এখন তিনি শুধু কোয়েল পালন করছেন না। সেই সাথে মাছ চাষও করছেন। ৬ টি পুকুর আছে তার। পুকুর গুলোতে তিনি বিদেশী মাছ চাষ না করে দেশীয় মাছ চাষ করছেন। এ গুলোর মধ্যে শিং, মাগুর উল্লেখযোগ্য।