চাঁদপুর প্রতিনিধি : দুই সারিতে দাঁড়িয়ে হাতের ওপর একজন শিক্ষার্থীর শরীর বিছিয়ে দেয়া হয়েছে। তার উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারী।-চাঁদপুরে শিশু মানবসেতু পার হয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছেন এ উপজেলা চেয়ারম্যান। তবে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে শুধু তিনি নন, অতীতেও এমন শিশু মানবসেতু পার হয়েছেন ওই উপজেলার উল্লেখযোগ্য কর্তাব্যক্তিরা। স্কুল কর্তৃপক্ষ দাবি করছে এটা তাদের ঐতিহ্য।
নীলকমল উছমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় ফটোফ্রেমে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আবদুল মতিন শিশু মানবসেতু পার হওয়ার ছবি সাঁটানো রয়েছে। এছাড়া প্রায় ৮-১০ বছর আগে হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুখেশ চন্দ্র বিদ্যালয়টিতে প্রধান অতিথি হিসেবে এসে শিশু মানবসেতু পার হয়েছেন।
জানা গেছে, স্কুলটিতে প্রতিবছরই এমন মানবসেতু তৈরি করা হয় এবং ওই সেতু পার হন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির আসন গ্রহণকারী ব্যক্তিরা।
বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী সোহরাব হোসেন, দেলোয়ার হোসেনসহ আরো কয়েজন জানায়, এ বিদ্যালয়টি উপজেলার প্যারেড বা শারিরীক কসরত প্রদর্শনে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। আর প্রতিবছরই আমরা এমন মানবসেতু তৈরি করি। তারই অংশ হিসেবে গত ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিকে আমরা মানবসেতু পার হতে আমন্ত্রণ জানাই। তিনি মানবসেতু অতিক্রম করে আমাদের পাঁচ হাজার টাকা পুরস্কার দেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন জানান, আসলে তিনি পড়ে যাবেন বলে মানবসেতুতে উঠতে চাচ্ছিলেন না। আমরা অনেক অনুরোধ করার পর তিনি উঠেছেন। বিষয়টি আমরা শুধু মাত্র শারীরিক কসরত হিসেবে বিবেচনা করেছি। কিন্তু অন্যভাবে কখনো ভাবিনি।
এ ব্যাপারে নূর হোসেন পাটওয়ারী জানান, আসলে খেলাধূলায় নানান কিছু হয়। আমাকে তারা সেতু ইভেন্টে সদস্য হতে আমন্ত্রণ জানালে প্রথমে সাড়া দেইনি। কিন্তু অনেক জোরাজুরি করায় ওই সেতু পার হতে আমি বাধ্য হই। যদিও পরে তাদেরকে আমি পাঁচ হাজার টাকা পুরিস্কার দিই। তাদেরকে কষ্ট দেয়া বা বিলাসিতা করা আমার কোনো উদ্দেশ্য ছিলো না।