মনজুরুল হক, কাপাসিয়া (গাজীপুর)
শীতলক্ষ্যায় পাওয়া জীপের মালিক কে? গাজীপুরের কাপাসিয়ায় শীতলক্ষ্যা নদীতে পাওয়া বিলাসবহুল প্রাডো জীপের খোঁজ নিতে এখনো কেউ আসেনি। এক নজর দেখার জন্য নানা শ্রেণীর মানুষ থানায় ভিড় করছেন। ছবিও তুলছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা অবদি কেউ খোঁজ করতে আসেনি। পুলিশ খোঁজ নিয়েও এসময়ের মধ্যে কোনো তথ্য উদঘাটন করতে পারেনি। বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের সাথে শনিবার যোগাযোগের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
কাপাসিয়া থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক জানান, গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন নাম্বারের সূত্র ধরে ঢাকার মিরপুর থানা এলাকার একটি ঠিকানা পাওয়া গেছে। রীনা বেগম নামে ওই নারীর বাসা ২/এইচ, ৯/১৪। কিন্তু ওই নামে ওই বাসায় কাউকে পাওয়া যায়নি। গাড়িটি উদ্ধারের পর সারাদিন কেউ কোনো রকম খোঁজ-খবর নিতে আসেনি।
ওসি বলেন, কাপাসিয়া থানায় গাড়ি উদ্ধার সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে। সাধারণ ডায়রিতে পরিত্যাক্ত অবস্থায় জীপটি পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইঞ্জিনের সাথে গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন নাম্বার এর কোনো রকম ভিন্নতা আছে কিনা তাও আমরা দেখব। যদি কোনো রকম ভিন্নতা থাকে যাচাই-বাছাইয়ের পর এটি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গাড়িতে চাবি লাগানো ছিল। পানিতে ডুবে জীপটির বিভিন্ন অংশে মরিচা পড়েছে। তবে গাড়ীর রং অনেকটাই সাদা। গাড়িটির পেছনে এক্সট্রা চাকাও রয়েছে। নিচের চারটি চাকার মধ্যে তিনটি চাকার মধ্যে হাওয়া রয়েছে। দুই পাশের জানালার গ্লাসগুলো নামানো ছিল। তবে এর নাম্বার প্লেটে লেখা ছিল ঢাকা মেট্রো ঘ ১১-২০২৯।
প্রসঙ্গত, এলাকাবাসীর খবরের ভিত্তিতে এবং সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে গাজীপুরের কাপাসিয়া শীতলক্ষ্যা (বানার) নদী থেকে একটি প্রাডো জীপ উদ্ধার করে পুলিশ।
সরেজমিনে কাপাসিয়া থানায় ঢুকতেই বাম পাশে গাড়িটি দেখা গেছে। থানার নির্মাণাধীন ভবনের রডের কাজ করছেন চাঁদপুরের রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, গাড়ির খোঁজ নিতে সারাদিন কাউকে আসতে দেখিনি।
কৌতুহল নিয়ে সাংবাদিকদের দিকে ছুটে আসা রিকশাচালক উজ্জল মিয়া বলেন, উদ্ধার করা গাড়ির খোঁজ-খবর নিতে কাউকে আসতে দেখিনি। কেউ কেউ আবার গাড়িটি দেখে মোবাইল ফোনে ছবি উঠিয়ে আবার চলে যাচ্ছে।
থানা গেটের সামনের পানের দোকানদার মো. তারেক মিয়া বলেন, গাড়িটি ঢাকার একজন মহিলার বলে মানুষকে বলতে শুনেছি। অনেককে গাড়ির ব্যাপারে কিছু জানার জন্য বলা হলে তারা এড়িয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ সাংবাদিকদের কাছেও জানার জন্য পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন।
কাপাসিয়া থানার এসআই মো. দুলাল হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় লোকজন মাছ ধরার জন্য নদীতে জাল দিয়ে ঘের তৈরী করে। দুপুরে ঘের দেখতে গিয়ে জীপটি দেখতে পেয়ে তারা পুলিশে খবর দেয়। পরে শিকল লাগিয়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় জীপটি পানি থেকে উঠানো হয়। গাড়ির গ্লাসগুলো অক্ষত, তবে কিছু কিছু জায়গায় কাদা লেগে আছে। আমি নিজে বাদী হয়ে এ ব্যাপারে থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছি। শনিবার বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে যাব।