ঢাকা ০২:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রবাসে স্বৈরাচারের দোসরদের আস্ফালন, ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারের দাবি নাসিম আহমদ চৌধুরীর বিজয়নগরে স্কুল শিক্ষিকাকে বেধড়ক পিটিয়ে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার লুটপাট “লন্ডনে ‘প্রবাসীদের ক্ষমতায়ন: অধিকার, স্বীকৃতি ও জাতি গঠন – একটি এনআরবি প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক সেমিনার ও ইফতার মাহফিল অনুষ্টিত বিশ্বনাথে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, যুবক গ্রেপ্তার সুনামগঞ্জে চলন্ত সিএনজিতে কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টা, আটক ২ ‘মানুষের উন্নয়নে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বারবার রক্ষা করেছেন খালেদা জিয়া’ জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকঃ দ্রুত নির্বাচনের দাবি বিএনপির “যুক্তরাজ্য যুবদলের সভাপতি আফজাল হোসেনকে ইলিয়াস পত্নী তাহসিনা রুশদির লুনার অভিনন্দন” বায়ান্নের ভাষা শহীদদের প্রতি নর্থইষ্ট বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদন প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে জয় লাভ করেন সোয়াবই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বালিকারা

‘সপ্তাহে ২ দিন অন্ধ বাবার সাথে ভিক্ষা, বাকি দিনগুলোতে স্কুলে যায় শিশু হোসনা’


সাইদুর রহমান রাজু,

বাবা তারিকুল ইসলাম (৪০) জন্মান্ধ ও শারীরিক প্রতিবন্ধী। পরিবারে মা নিয়ে সদস্য সংখ্যা রয়েছে পাঁচজন। পরিবারের বড় সন্তান হয়ে স্কুল-শৈশব-সহপাঠিদের ছেড়ে ভিক্ষাবৃত্তির মতো পেশার সঙ্গী হয়েছে হালুয়াঘাট উপজেলার গোবরাকুড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী হোসনা আক্তার (১০), শ্রেণী রোল- ৯।

যে বয়সে এই হাতে বই-খাতা আর কলম নিয়ে বিদ্যাপীঠে থাকার কথা! অথচ সেই শিশু বয়সেই কোমল হাত দিয়ে নিতে হচ্ছে ভিক্ষাবৃত্তির মত অভিশাপের গ্লানি। সর্বত্র শিশুটির চোখে ছল ছল করে অভাব-অনটনের ছাপ। বাবা তারিকুল ইসলামের পাশাপাশি মৃদুস্বরে মেয়েটি বলছে ‘আমার অন্ধ বাবাকে কিছু সাহায্য করুন’।

unnamedঅভাবের তাড়নায় মানুষের দেয়া সেই পয়সাগুলো হাত পেতে নিচ্ছে হোসনা। আবার অনেকেই সাহায্য না করেও প্রস্তাব দিয়েছেন লেখাপড়া পরিত্যাগ করে বাসা-বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতে। এসব বাক্য শুনেও প্রতিবাদের ভাষা যেখানে নি®প্রভ সেখানে লেখাপড়া করে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশায় দিন গুনছে হোসনা।

হোসনা জানায়, বাবা অন্ধ হওয়ায় কোনো কাজ করতে পারেন না। এ কারণে সে সপ্তাহে ২ দিন বাবার সাথে ভিক্ষা করতে বের হই। বাকি দিনগুলোতে স্কুলে পড়াশুনা করতে যায়।

বাবা তারিকুল ইসলাম বলেন, জন্ম থেকেই শারীরিক ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জন্ম গ্রহণ করেন। টাকা সংগ্রহ না হওয়ায় দৃষ্টিশক্তি ফেরাতে চোখের অপারেশন করানো হয়নি। চোখের অপারেশন করতে লক্ষাধিক টাকার প্রয়োজন। সেটাও দুই বছর আগের কথা। সরকারীভাবে যৎ সামান্য প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে থাকেন।

শিশুটির মা বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটি অন্ধ হওয়ায় দুই মেয়ে ও এক ছেলে কে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন পার করছেন। শিশুটির বাবার বাড়তি কোন প্রকার আয়ের উৎস না থাকায় সংসারের বড় সন্তান হিসেবে কাজটুকু করাতে হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হাশিম সময়ের কন্ঠস্বর কে জানায়, হোসনা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় একটু মেধাবী বলে অত্যন্ত স্নেহ করেন। বাবার প্রতিবন্ধকতার কারণে মাঝে মধ্যে স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে হাটে-বাজারে যায়। স্কুল থেকে সরকারী উপবৃত্তির সুবিধাটুকুই দেওয়া হয়।

আর্থিক দৈন্যতার করালগ্রাস শিক্ষাজীবনের প্রাথমিক গন্ডি পেরুনোর আগেই হোসনা শিক্ষা গ্রহণ করছে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মুখে অন্ন যোগাবার তাগিদে বাবাকে সহযোগিতা করার প্রাণান্ত চেষ্টা। শত বাধা পেরিয়েও শিক্ষার প্রতি হোসনার মননশীলতা সত্যিই অবাক করার মত। উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে ডাক্তার হবে, বাবাকে সুস্থ করবে দু’চোখ ভরা কত রঙীন স্বপ্ন খেলা করছে।

শিশু হোসনার বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে বা এই অসহায় পরিবারের পাশে কেহ দাঁড়াতে চাইলে ০১৯১১১৭৬৮১৬ এই নাম্বারে আমাদের হালুয়াঘাট প্রতিনিধি সাইদুর রহমান রাজুর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রবাসে স্বৈরাচারের দোসরদের আস্ফালন, ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারের দাবি নাসিম আহমদ চৌধুরীর

‘সপ্তাহে ২ দিন অন্ধ বাবার সাথে ভিক্ষা, বাকি দিনগুলোতে স্কুলে যায় শিশু হোসনা’

আপডেট সময় : ১০:২৬:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০১৭


সাইদুর রহমান রাজু,

বাবা তারিকুল ইসলাম (৪০) জন্মান্ধ ও শারীরিক প্রতিবন্ধী। পরিবারে মা নিয়ে সদস্য সংখ্যা রয়েছে পাঁচজন। পরিবারের বড় সন্তান হয়ে স্কুল-শৈশব-সহপাঠিদের ছেড়ে ভিক্ষাবৃত্তির মতো পেশার সঙ্গী হয়েছে হালুয়াঘাট উপজেলার গোবরাকুড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী হোসনা আক্তার (১০), শ্রেণী রোল- ৯।

যে বয়সে এই হাতে বই-খাতা আর কলম নিয়ে বিদ্যাপীঠে থাকার কথা! অথচ সেই শিশু বয়সেই কোমল হাত দিয়ে নিতে হচ্ছে ভিক্ষাবৃত্তির মত অভিশাপের গ্লানি। সর্বত্র শিশুটির চোখে ছল ছল করে অভাব-অনটনের ছাপ। বাবা তারিকুল ইসলামের পাশাপাশি মৃদুস্বরে মেয়েটি বলছে ‘আমার অন্ধ বাবাকে কিছু সাহায্য করুন’।

unnamedঅভাবের তাড়নায় মানুষের দেয়া সেই পয়সাগুলো হাত পেতে নিচ্ছে হোসনা। আবার অনেকেই সাহায্য না করেও প্রস্তাব দিয়েছেন লেখাপড়া পরিত্যাগ করে বাসা-বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতে। এসব বাক্য শুনেও প্রতিবাদের ভাষা যেখানে নি®প্রভ সেখানে লেখাপড়া করে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশায় দিন গুনছে হোসনা।

হোসনা জানায়, বাবা অন্ধ হওয়ায় কোনো কাজ করতে পারেন না। এ কারণে সে সপ্তাহে ২ দিন বাবার সাথে ভিক্ষা করতে বের হই। বাকি দিনগুলোতে স্কুলে পড়াশুনা করতে যায়।

বাবা তারিকুল ইসলাম বলেন, জন্ম থেকেই শারীরিক ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জন্ম গ্রহণ করেন। টাকা সংগ্রহ না হওয়ায় দৃষ্টিশক্তি ফেরাতে চোখের অপারেশন করানো হয়নি। চোখের অপারেশন করতে লক্ষাধিক টাকার প্রয়োজন। সেটাও দুই বছর আগের কথা। সরকারীভাবে যৎ সামান্য প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে থাকেন।

শিশুটির মা বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটি অন্ধ হওয়ায় দুই মেয়ে ও এক ছেলে কে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন পার করছেন। শিশুটির বাবার বাড়তি কোন প্রকার আয়ের উৎস না থাকায় সংসারের বড় সন্তান হিসেবে কাজটুকু করাতে হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হাশিম সময়ের কন্ঠস্বর কে জানায়, হোসনা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় একটু মেধাবী বলে অত্যন্ত স্নেহ করেন। বাবার প্রতিবন্ধকতার কারণে মাঝে মধ্যে স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে হাটে-বাজারে যায়। স্কুল থেকে সরকারী উপবৃত্তির সুবিধাটুকুই দেওয়া হয়।

আর্থিক দৈন্যতার করালগ্রাস শিক্ষাজীবনের প্রাথমিক গন্ডি পেরুনোর আগেই হোসনা শিক্ষা গ্রহণ করছে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মুখে অন্ন যোগাবার তাগিদে বাবাকে সহযোগিতা করার প্রাণান্ত চেষ্টা। শত বাধা পেরিয়েও শিক্ষার প্রতি হোসনার মননশীলতা সত্যিই অবাক করার মত। উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে ডাক্তার হবে, বাবাকে সুস্থ করবে দু’চোখ ভরা কত রঙীন স্বপ্ন খেলা করছে।

শিশু হোসনার বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে বা এই অসহায় পরিবারের পাশে কেহ দাঁড়াতে চাইলে ০১৯১১১৭৬৮১৬ এই নাম্বারে আমাদের হালুয়াঘাট প্রতিনিধি সাইদুর রহমান রাজুর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।