গ্রেট ব্রিটেনের লোটন অঞ্চলের ৭ বছর বয়সী মেয়ে মারিয়া পবিত্র কোরআন মুখস্থ করে বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছিলো গতবছরই । তাকে নিয়ে ব্রিটেনভিত্তিক ওয়েবসাইট ইলমফিড.কম একটি অনুপ্রেরণামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো সেসময় । মারিয়া যুদ্ধ কবলিত সিরিয়ার জন্য অর্থ সংগ্রহের লক্ষে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় সূরা ইয়াসিনের প্রতিযোগিতার অংশ নেয়। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ৫ বছর।
৭ বছর বয়সী কোরআনের হাফেজ মারিয়া
সে ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দ্রুততম সময়ে সূরা ইয়াসিন মুখস্থ করে ফেলে। তার মুখস্থ করার অসাধারণ দক্ষতার প্রেক্ষিতে তাকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করা হয়। এখানে সে মাত্র দুই বছরে পুরো কোরআন অত্যন্ত সুন্দরভাবে মুখস্থ করতে সক্ষম হয়। মারিয়ার মায়েরও লক্ষ্য ছিল, সে যেন দ্রুত কোরআন মুখস্থ করতে সক্ষম হয়। তাই মারিয়াকে হাফেজ বানানোর জন্য তাকে গাইড করতে থাকে।
এতো গেলো পৃথিবীর অন্যদেশের কথা। এবার ৭ বছর বয়সী পবিত্র কোরআনের ক্ষুদে হাফেজ মারিয়ার সেই রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন রেকর্ডের জন্ম দিলেন বাংলাদেশের মাত্র ৬ বছর ৮ মাস বয়সী এক ছোট্ট শিশু কন্যা।
মাত্র ৬ বছর ৮ মাস বয়সে কম বয়সে পবিত্র কুরআনুল কারিম হিফজ সম্পন্ন করে এবার সবাইকে রীতিমত অবাক করে দিয়েছেন শিশু আয়েশা সিদ্দিকা সুহাইমা। গতকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শিশু সুহাইমার অভাবনীয় এই কৃতিত্বকে অভিবাদন জানিয়ে হাজারো মানুষ তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
হাফেজা আয়িশা সিদ্দিকা সুহাইমা পিতা-মাতার পরিচালিত প্রতিষ্ঠান রাজধানীর টিকাটুলীতে অবস্থিত মারকাজুল হাফেজাহ ইন্টারন্যাশনালের শিশুশ্রেনীর ছাত্রী ছিলেন।
মুলতঃ বাবা-মায়ের কাছে থেকেই অনুপ্রেরণা সৃষ্টি হয় ছোট্ট সুহাইমার । খুব ছোট বেলা থেকে সুহাইমার আগ্রহ দেখে বাবা-মা দুজনেই স্থীর করেন মেয়েকে পবিত্র কোরআন হিফজ করাবেন তারা। সেই লক্ষে প্রায় দুবছর আগে থেকেই পিতা-মাতার নিবিড় তত্ত্বাবধানে এতো অল্প বয়সেই পবিত্র কুরআন হিফজ করতে সক্ষম হয় সুহাইমা ।
ক্ষুদে হাফেজ আয়িশা সিদ্দিকা সুহাইমার বাবা কারী সালামাতুল্লাহ মারকাজুল হাফেজাহ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এবং মা হাফেজ আবিদা সুলতানা এ মাদরাসার শিক্ষক। তাদের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজার জেলার মহেশখালী থানার মুন্সিরডেইল গ্রামে।
মা হাফেজ আবিদা সুলতানা জানিয়েছেন , ‘সে (সুহাইমা) যদিও কোরআনের অর্থ উপলব্ধি করে না, কিন্তু সে খুব ভালোভাবে মুখস্থ করতে পারে। কোরআনের অর্থ ও ব্যাখ্যা বুঝার জন্য অনেক সময় রয়েছে। কিন্তু এখন সে মুখস্থ করুক। এ ধারণা থেকেই আমি তাকে মুখস্থ করার প্রতি বেশি জোড় দেই। যদিও কাজটি খুব সহজ ছিল না। আমাদের এজন্য অনেক পরিশ্রম ও ধৈর্যধারণ করতে হয়েছে। আমি মহান আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞ যে, আমাদের আবেগ অবশেষে সফলতার মুখ দেখেছে।’
সুহাইমার বাবা কারী সালামাতুল্লাহ জানিয়েছেন, হাফেজ আয়িশা সিদ্দিকা সুহাইমা সবার দোয়া প্রার্থী। আল্লাহ তাআলা এ ক্ষুদে হাফেজকে কুরআনের খেদমতে যেন কবুল করেন এবং পবিত্র কুরআনের বাণী মানুষের নিকট পৌঁছে দেয়ার তাওফিক দান করেন সেজন্য সবার দোয়া চেয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য যে, এ মাদরাসা থেকে এ বছর ৮ জন ছাত্রী হিফজ সম্পন্ন করেছে। আগামী ৩১ মার্চ জাতীয় হিফজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হবে বলে জানা গেছে ।