রাষ্ট্রপতি আবারও প্রমাণ করলেন তিনি আওয়ামীলীগের রাষ্ট্রপতি। দেশের নয়, জনগণের নয়। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন শুধু জাতীয় দাবি নয়, আন্তর্জাতিক দাবিতে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘ থেকে শুরু করে ইইউ, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য বারবার সবদলের কাছে গ্রহণযোগ্য সার্চ কমিটি গঠনের আহ্বান ও সে লক্ষ্যে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে আসছে। সব রাজনৈতিক দলও নিরপেক্ষ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য সার্চ কমিটি গঠনের দাবি রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরে। কিন্তু, অবৈধ রাষ্ট্রপতি অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঠানো সার্চ কমিটি ঘোষণা করেছে।
নিরপেক্ষ সার্চ কমিটির পরিচিতি:
১. সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি। ১৯৯৬
সালে আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি
বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ পেয়েছিলেন।
এবার ক্ষমতায় আসার পর তিনি আপিল বিভাগে
নিয়োগ পান। উনি দালাল শ্রেণি কিনা সেইটা প্রমাণে তার ডিএনএ টেস্ট করার প্রয়োজন
নাই। বিভিন্ন মামলায় তিনি দলকানার
পরিচয় রেখেছেন।
২. মুহাম্মদ সাদিক।
তিনি বৃহত্তর সিলেটের লোক।
আপাদমস্তক আওয়ামী লীগার। ১৯৯৬ সালে
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাঁর চাকরি
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যাস্ত করা হয়েছিল।
শেখ হাসিনার সরকার দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর তাকে নির্বাচন কমিশনের সচিব
হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়। নির্বাচন
কমিশনের সচিব হিসাবে তিনি ২০১৪ সালের ৫
জানুয়ারি জাতিকে একটি নির্বাচন উপহার
দিয়েছেন। সেই নির্বাচনের পুরস্কার হিসাবে
তাকে সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়। বর্তমানে তিনি
সেই পদে রয়েছেন।
৩. বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহিন।
শেখ হাসিনার সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব
গ্রহণের পর তাকে হাইকোর্ট বিভাগের
বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৯৯৬
সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে তাকে
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনোনীত করেছিলেন। তার রাজনৈতিক পরিচয় হচ্ছে
তিনি বাকশাল ছাত্রলীগের সেক্রেটারি
ছিলেন। তার বড় ভাই সাজ্জাদুল হাসান
বর্তমানে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিএস।
২০১৪ সালের ৭ জানুয়ারি জামায়াতের নায়েবে আমীর একেএম ইউসুফের রায়ের সময় তিনি বলেন, ‘‘আল্লাহর পরে প্রধানমন্ত্রী, তারপরে ট্রাইবুনালের অবস্থান।’’ এবার বুঝলেনতো???
৪. সৈয়দ মঞ্জরুল হাসান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের
শিক্ষক সৈয়দ মঞ্জরুল হাসান। মাঝে মধ্যে
প্রথম আলা পত্রিকায় আওয়ামী লীগের পক্ষে
কলাম লিখেন। একজন আপাদমস্তক আওয়ামী
লীগার হিসাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ে তার পরিচিতি। তার লেখা গুলো পাঠ করলেই বুঝতে
পারবেন সবাই তিনি কোন পন্থি লোক। সোজা
কথায় তিনি হলেন আওয়ামী পন্থি
বুদ্ধিবেশ্যা।
৫. চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি
শিরিন আখতার। আওয়ামী আমলে কাদের ভিসি প্রোভিসি
বানানো হয়েছে তা সবাই জানেন। তার পিতা
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এবং কক্সবাজার
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠানা সভাপতি ছিলেন।
নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের গঠিত ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্ট নাগরিকরা। আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এর আগে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সার্চ কমিটিরও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মাহমুদ হোসেন।
গঠিত কমিটি আগামী ১০ কার্যদিবসে মহামান্য রাষ্ট্রপতির বরাবরে সুপারিশ করবে। নিয়মানুযায়ী, এখন এই ছয় সদস্যের কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে ইসি গঠনের জন্য নাম প্রস্তাব করবে। রাষ্ট্রপতি তাদের মধ্য থেকে একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং বাকি কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন।
যদিও সার্চ কমিটি নিয়ে শুধু হতাশা নয়, ক্ষোভও প্রকাশ করেছে বিএনপি।
এদিকে, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যত বড় বড় ব্যক্তি দিয়ে করেন না কেন, এই ভোট চুরির রাজনীতিতে যে দলীয় সরকার থাকবে, সে যদি ভোট চুরি করতে চায়, তাহলে তা ফেরানোর ক্ষমতা কোনো নির্বাচন কমিশনের নাই।’