ঢাকা : নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের তোড়জোড়ের মধ্যে দল ও জোটের নেতাদের সিরিজ বৈঠক ডেকেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গতরাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক দিয়ে শুরু হওয়া এ সিরিজ বৈঠক চলবে আগামী ১২ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সবগুলো বৈঠকই হবে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন ও আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এ সিরিজ বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ।
তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করতে বিএনপি চেয়ারপারসন এসব বৈঠক ডেকেছেন। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর আজ রাত ৯টায় ভাইস চেয়ারম্যানদের নিয়ে বৈঠক করবেন খালেদা জিয়া। একইভাবে ১১ই ফেব্রুয়ারি রাত ৯টায় দলের উপদেষ্টা পরিষদ ও ২১শে ফেব্রুয়ারি ২০দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তিনি। প্রেসিডেন্ট নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে এবং সার্চ কমিটি প্রেসিডেন্টের কাছে তাদের নাম প্রস্তাবের দিন থেকে এ বৈঠক শুরু করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। উল্লেখ্য, নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগে সার্চ কমিটির আহ্বানে সাড়া দিয়ে নাম প্রস্তাব করতে দলের নীতিনির্ধারকদের ফোরামের সঙ্গে সর্বশেষ ৩১শে জানুয়ারি বৈঠক করেছেন খালেদা জিয়া।
সে বৈঠকের পর তিনি প্রেসিডেন্টের সংলাপে দাওয়াতপ্রাপ্ত জোটের সাত দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও একটি বৈঠক করেন। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল নেতা জানান, প্রেসিডেন্টের কাছে শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য ইসি প্রত্যশা করে আসছে বিএনপি। তেমন ইসি না হলে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হবে। এদিকে নির্বাচন কমিশন গঠন ইস্যুতে গতকাল দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক করেছেন খালেদা জিয়া। তারই সভানেত্রীত্বে গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাত নয়টায় এ বৈঠক শুরু হয়। সংশ্লিষ্ট কয়েকজন নেতা জানান, নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
প্রেসিডেন্ট নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের পর দ্রুততম সময়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এ অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে প্রেসিডেন্ট, সরকার ও সার্চ কমিটির প্রতিটি পদক্ষেপ; সিইসি ও কমিশনার হিসেবে রাজনৈতিক দল প্রস্তাবিত ব্যক্তিদের মধ্যে কাদের নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে এবং তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়ে পর্যালোচনা করা হয় বৈঠকে। নেতারা জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নতুন নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতার ওপর ভিত্তি করে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করা হবে।
সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতার বিচারে তুলনামূলক ইতিবাচক হলে খালেদা জিয়ার বক্তব্যে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশন শক্তিশালীকরণসহ নানা পরামর্শ থাকবে। অন্যদিকে গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হলে নতুন নির্বাচন কমিশন প্রত্যাখ্যান করতে পারে বিএনপি। সেই সঙ্গে কমিশন পুনর্গঠনের প্রস্তাবনাসহ জনমত গঠনে নিয়মতান্ত্রিক কিছু কর্মসূচিও ঘোষণা করতে পারেন। এছাড়া, সার্বিকভাবে নির্বাচন কমিশন গঠনকে কেন্দ্র করে আগামী দিনের কর্মকৌশল প্রণয়ন নিয়ে গতরাতের বৈঠকে প্রাথমিক আলোচনা হয়। পরে দলের ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা ও জোটের শরিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবেন।
টিলারসনকে বিএনপির অভিনন্দন :
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনকে অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছে বিএনপি। বিএনপির বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় বারিধারায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের পলিটিক্যাল বিভাগের প্রধানের কাছে বার্তাটি হস্তান্তর করেন। তিনি বলেন, দলের পক্ষ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি আমি দূতাবাসে পৌঁছে দিয়েছি। তিনি জানান, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সন্ত্রাসবাদ দমন প্রশ্নে বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একযোগে কাজ করার প্রত্যয়ের কথা টিলারসনের কাছে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে।