সিলেট অফিস: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শাহ আরেফিন টিলা কেটে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের সময় টিলা ধসে মৃতের সংখ্যা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এ পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
তবে সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (গণমাধ্যম) সুজ্ঞান চাকমা বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে পেরেছি। তাদের একজনের নাম আল হাদী, অপরজনের নাম আবদুল কাদির।
সোমবার বিকেলে তিনি বলেন, দুজনের নাম জানতে পারলেও একটি মরদেহ এখন পর্যন্ত আমরা পাইনি। ওই এলাকাটা দুর্গম। আর ঘটনা ঘটেছে ভোরে। পুলিশ যাওয়ার আগেই মরদেহ সরিয়ে ফেলেছে।
শাহ আরেফিন টিলাটির অবস্থান উপজেলার পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নে। এই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন দুইজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। তবে কেউ কেউ বলছেন, নিহতের সংখ্যা ৬ জন। এ দুর্ঘটনায় আরও কয়েকজন আহত হতে পারে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার ভোরে শাহ আরেফিনের টিলার মটিয়ার টিলা কেটে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা সকলেই পাথর শ্রমিক। আঞ্জু মিয়া নামের স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শ্রমিক দিয়ে টিলা কেটে পাথর উত্তোলন করাচ্ছিলেন।
টিলা ধসে হতাহতের সংবাদ পেয়ে সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে যান, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী আব্দুল হাছিব।
সোমবার বিকেলে তিনি ফিরে এসে জানান, ছয়জনের মৃত্যুর খবর স্থানীয়দের কাছে তিনি শুনেছেন। তবে তিনজনের মরদেহ তিনি দেখেছেন।
এ ছাড়া ছয়জনের মৃত্যুর খবর শুনেছেন বলে জানিয়েছেন পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়ের গত নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল আহমদও।
নিহতের সংখ্যার মতো তাদের নাম ঠিকানা নিয়েও রয়েছে বিভ্রান্তি। নিহতদের মধ্যে তিনজনের বাড়ি নেত্রকোনা জেলায় বলে ঘটনাস্থল থেকে ঘুরে এসে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সহকারী আব্দুল হাছিব। নিহতদের দুইজনের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র।
এ ব্যাপারে ভাটিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. শাহাজাহান কাজী বলেন, আমাদের ইউনিয়নের অনেক লোক কোম্পানীগঞ্জে পাথর উত্তোলনের কাজ করে। সোমবার দুর্ঘটনায় তাদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন। তবে প্রকৃতপক্ষে কয়জন মারা গেছেন সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত হতে পারিনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, টিলা থেকে পাথর উত্তোলন করতে গত ছয় মাসে অন্তত আটবার টিলা ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব ঘটনা ধামাচাপা দেন পাথর উত্তোলনে নিয়োজিত প্রভাবশালী পাথর ব্যবসায়ীরা।
কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বায়েছ আলম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। তারা এখনো ফিরে আসেনি। আসলে নিশ্চিতভাবে নিহতের সংখ্যা জানাতে পারবো।