ক্রীড়া প্রতিবেদক

ছবি: মহানায়ক কোহলির মলিন উপাখ্যান।
শুধুই কি ক্রিকেটার তিনি? মনে হয় না। সুনীল গাভাস্কার, শচীন টেন্ডুলকারের পর সিংহাসনটা অলংকৃত করার দাবিদার কেবল তিনিই। দুর্দান্ত দক্ষতা আর জাদুকরী নৈপুণ্যে খুব অল্প সময়ে সবার নজর কেড়েছেন কোহলি। এই নায়কের উঠে আসার গল্পটা যে কতটা বেদনা-বিদুর। শুনলে দীর্ঘশ্বাস ধরে রাখতে পারবেন না।
ক্রিকেটের জন্য কতটা বিসর্জন দিয়েছেন কোহলি। পারবে আর কেউ? ইতিহাস ঘাঁটলে চোখে পড়বে না এমন দ্বিতীয় কল্পকথা। যে আগুন বুকে নিয়ে ২২ গজে পথচলা শুরু করেন কোহলি। সেটি আজও হয়তো নেভেনি।
বয়স তখন ১৮ ছুঁইছুঁই। দিল্লির হয়ে রঞ্জি ম্যাচ খেলছেন কোহলি। হঠাৎ ভোর রাতে খবর এলো, তাঁর বাবা আর নেই। চলে গেছেন পরোপারে। আচমকা খবরটা শোনার পর সারা পৃথিবী বোধ হয় কোহলির শরীরে চেপে বসল। চোখের পানিও ধরে রাখতে পারলেন না।
একদিকে পিতৃ হারানোর ক্ষত, আরেকদিকে তাঁর দলের যায়যায় অবস্থা। কোহলি ছিলেন অপরাজিত ব্যাটসম্যান। তাঁর সতীর্থরা বলেছিলেন, ‘খেলতে হবে না তোকে। তোর বাবার কাছে থাক।’
কথা শুনেননি কোহলি। বাবাকে একনজর দেখে কাক ডাকা ভোরেই চলে এলেন ক্লাবে। তখনও চোখের পানি টলটল করছে। চোখ মুচে নেমে গেলেন ক্রিজে। অপরাজিত ৯০ রান করে দিল্লিকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুললেন তিনি। রক্ষা করলেন হারের কবল থেকে। এরপর বাড়ি ফিরে বাবার সৎকারে যোগ দিলেন কোহলি।
১৮ থেকে ২৮। এক দশকের যাত্রা। দীর্ঘ যাত্রাপথে অসংখ্য চড়াই-উৎরাইকে মাড়িয়ে ক্রিকেট বিশ্বে এক নন্দিত মহাতারকা হয়ে উঠেছেন কোহলি। ২০০৮ সালে ভারতের জার্সি গায়ে জড়ান তিনি। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি কোহলিকে।
দ্রুততম ব্যাটসম্যান হিসাবে একদিনের ক্রিকেটে ঝুলিতে পুরেন ৬ হাজার রানের তকমা। ২০১২ সালে নির্বাচিত হন ‘আইসিসি ওয়ান ডে ক্রিকেটার অফ দ্য ইয়ার’। একের পর এক হাতে ওঠে অসংখ্য খেতাব। আজ বিশ্ব তাকে চেনে এক নামে।
বাবার হাত ধরে গলির ক্রিকেট থেকে রাজকুমার শর্মার কোচিং সেন্টারে ভর্তি হওয়া। অনুশীলনের জন্য ঘুমন্ত শহর ছেড়ে দূর-দূরান্তে পাড়ি জমানো। দলের জন্য বাবার মৃত্যুর খবরকে জলাঞ্জলি দেয়া। এমন অতীতকে কি করে ভুলবেন কোহলি।
প্রতিনিধির নাম 










