সিরিয়ার কুর্দি বিদ্রোহীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৫১:৪৭,অপরাহ্ন ১০ জানুয়ারি ২০১৯ | সংবাদটি ২৪৭ বার পঠিত
নিউজ ডেস্ক:: সিরিয়ার কুর্দি বিদ্রোহীদের সুরক্ষা নিশ্চিতের অঙ্গীকার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। বুধবার ইরাক সফরকালে দেশটির আধা-স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চল সফরকালে তিনি এ অঙ্গীকার করেন।
মধ্যপ্রাচ্য সফরের অংশ হিসেবে বাগদাদ সফরের পর ইরাকি কুর্দিস্তানের রাজধানী ইরবিলে পৌঁছান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সফরে সিরিয়া থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের ট্রাম্পের ঘোষণার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের আশ্বস্ত করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাগদাদ সফরে ইরাকের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মাইক পম্পেও। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সফরের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।ইরাকের প্রেসিডেন্ট বাহরাম বলেন, কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সহায়তা পাচ্ছে বাগদাদ। ফলে তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর একটি ভালো সুযোগ।
মঙ্গলবার জর্ডানের রাজধানী আম্মানে এক সংবাদ সম্মেলনে পম্পেও বলেন, এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর মধ্যে রয়েছে ইরান ও আইএসকে পরাজিত করা।মধ্যপ্রাচ্যে ইরান বিরোধী জোট গঠনও এ অঞ্চলের আট দেশে পম্পেও’র সফরের অন্যতম লক্ষ্য। জর্ডান, ইরাক ছাড়াও এ সফরে মিসর, বাহরাইন, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান ও কুয়েত যাওয়ার কথা রয়েছে তার।
এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর অঘোষিত সফরে ইরাক যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই সফরে বাগদাদের আল আসাদ বিমানঘাঁটিতে মার্কিন সেনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেও ইরাকের নেতাদের সঙ্গে দেখা করেননি। বিষয়টি নিয়ে তখন ইরাকের অভ্যন্তরে এবং দেশটির পার্লামেন্টে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
এদিকে সিরিয়ার কুর্দি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ওয়াইপিজি’র সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠতার কঠোর সমালোচনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তাদের (ওয়াইপিজি) ভালোভাবে চেনেও না। এই সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো আমার কুর্দি ভাইদের প্রতিনিধিত্ব করে না।
আমেরিকা যদি মনে করে থাকে যে, এই দলগুলো আমার কুর্দি ভাইদের প্রতিনিধিত্ব করে তাহলে তারা মারাত্মক ভুল করছে।’ মঙ্গলবার তুর্কি ক্ষমতাসীন দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির নেতাদের উদ্দেশে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি ইসরায়েল সফররত যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন বলেছেন, সিরিয়া ছাড়ার আগে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে ওয়াশিংটন। তার এ মন্তব্যের সমালোচনা করে এরদোয়ান বলেন, ইসরায়েল থেকে জন বোল্টন যে বার্তা দিয়েছেন তা আমরা গ্রহণ করতে পারি না। এসব বলে তুরস্কের সঙ্গে প্রবঞ্চনা করা যাবে না।
অন্যদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে লেখা এক নিবন্ধে সিরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এরদোয়ান। তবে সতর্কতার সঙ্গে এবং সঠিক সঙ্গীদের সঙ্গে নিয়ে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে বলে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেন তিনি। কলামে সিরিয়া থেকে আইএস-সহ অন্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে পরাজিত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এরদোয়ান।
তিনি বলেন, সিরিয়া থেকে সেনা প্রতাহ্যারের ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত একটি সঠিক পদক্ষেপ। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং সিরিয়ার জনগণের স্বার্থ রক্ষায় সতর্কতার সঙ্গে এবং সঠিক অংশীদারদের সহযোগিতা নিয়ে এটি কার্যকর করতে হবে।এরদোয়ান বলেন, ন্যাটোতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক সেনা পাঠানো তুরস্ক হচ্ছে একমাত্র দেশ যাদের সেই এই কাজ সম্পাদনের শক্তি এবং অঙ্গীকার রয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা