নিউজ ডেস্ক:: গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে আজ বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে বকশিবাজারের আলিয়া মাদ্রাসার অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালতে নেওয়া হতে পারে। গতকাল বুধবার আদালত সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে একই আদালতে হাজির করা হয়েছিল। ওইদিন খালেদা জিয়া আদালতে বসা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। বিচারকের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন- আমাকে সাজা দিতে চাইলে দিয়ে দেন, আমি আর এই আদালতে আসব না।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ গ্লোবাল অ্যাগ্রো ট্রেড কোম্পানিকে (গ্যাটকো) পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
মামলার তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক জহিরুল হুদা। তাদের মধ্যে ছয় আসামি মারা গেছেন।
২৪ আসামির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভুইয়া, সাবেক মন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রাহমান কোকো, এমকে আনোয়ার, সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেম এর মৃত্যুর পর এই মামলায় বর্তমান আসামির সংখ্যা ১৭ জন।
অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের (প্রয়াত) স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং একেএম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক সদস্য একে রশিদ উদ্দিন আহমেদ এবং গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লি. (গ্যাটকো) এর পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন।
পরে দুদকের দেওয়া ওই চার্জশিটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মামলা বাতিল চেয়ে রিট করেছিলেন খালেদা জিয়া। ওই রিটের কারণে প্রায় ৮ বছর নিম্ন আদালতে মামলার বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এরপরে রিট খারিজ করে ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে দুই মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। উচ্চ আদালতের নির্দেশে ওই বছরের ৫ এপ্রিল আত্মসমর্পণ করে জামিন পান খালেদা জিয়া।