যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডস
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:০৭:০৬,অপরাহ্ন ০৪ ডিসেম্বর ২০২২ | সংবাদটি ১৩৩ বার পঠিত
স্পোর্টস ডেস্ক
গ্রুপপর্বে নিজেদের সেভাবে মেলে ধরতে পারেনি টোটাল ফুটবলের জনক নেদারল্যান্ডস। তবে নকআউট পর্বে এসে ছন্দ খুঁজে পেল লুইস ফন গালের শিষ্যরা। শনিবার রাতে শেষ ষোলোর ম্যাচে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ফ্লাইং ডাচম্যানরা। সবশেষ ২০১৪ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল তারা। সেবার অবশ্য সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়ে তৃতীয় হয়েছিল তারা।
এরপর ২০১৮ বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতেই ব্যর্থ হয় তিনবারের ফাইনালিস্টরা। কিন্তু ২০২২ বিশ্বকাপে আবার এসে শেষ আটে জায়গা করে নিলো তারা। অন্যদিকে ফাইনাল পর্যন্ত যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এসে শেষ ষোলোতেই থেমে গেল যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বকাপ যাত্রা।
এদিন অবশ্য দারুণ খেলেছে যুক্তরাষ্ট্র। ম্যাচের ৫৮ শতাংশ বলের দখল ছিল তাদের কাছে। শুধু কি তাই? আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণেও এগিয়ে ছিল দ্য ইয়াঙ্কসরা। এদিন তারা ১৭টি শট নিয়েছিল গোলপোস্টের দিকে। তার মধ্যে ৮টি ছিল অন টার্গেটে। সেখান থেকে গোল হয় মাত্র ১টি। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডস ১১টি শট নিয়েছিল। তার মধ্যে অন টার্গেটে ছিল ৬টি। গোল হয় ৩টি।
এদিন অবশ্য ম্যাচের ৩ মিনিটেই গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিস্টিয়ান পুলিসিক। টাইলার অ্যাডামসের বাড়িয়ে দেওয়া বল ডি বক্সের মধ্যে পেয়ে যান তিনি। তখন তার সামনে ছিলেন কেবল নেদারল্যান্ডসের গোলরক্ষক অ্যান্ড্রিস নপারট। পুলিসিক কাছের পোস্ট দিয়ে গোল করার চেষ্টা করতে গিয়ে বল তার বাম পায়ে মেরে দেন। তাতে নিশ্চিত গোলের সুযোগ মিস হয়। অথচ দুই পায়ের ফাঁকা দিয়ে পর্যাপ্ত জায়গা ছিল বল বের করার।
তবে ১০ মিনিটের মাথায় মেম্ফিস ডিপায়ের গোলে লিড নেয় নেদারল্যান্ডস। এ সময় পাল্টা আক্রমণে যায় ডাচরা। ডানদিক থেকে ডিপায়েকে বল বাড়িয়ে দেন ডেনজেল ডামফ্রিজ। বক্সের মধ্যে বল পেয়েই দূরের পোস্টে শট নেন ডিপায়ে। তার বুলেট গতির শট যুক্তরাষ্ট্রের গোলরক্ষক ম্যাট টার্নার ধরার সুযোগই পাননি (১-০)।
এটা ছিল জাতীয় দলের জার্সি গায়ে সবশেষ ১৭ ম্যাচে ডিপায়ের ১৫তম গোল। আর সব মিলিয়ে ৪৩তম। এর মধ্য দিয়ে নেদারল্যান্ডসের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় তিনি দুইয়ে অবস্থান নেন। তার সামনে আছেন রবিন ফস পার্সি। যিনি ১০২ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ৫০টি।
এরপর প্রথমার্ধের শেষ দিকে ডাচদের দ্বিতীয় গোলটি করেন ডেলি ব্লাইন্ড। এ সময় ডানদিকে থ্রো-ইন পায় তারা। সেখান থেকে সতীর্থের পা ঘুরে বল পান ডামফ্রিজ। তিনি বক্সের মধ্যে বল বাড়িয়ে দেন ব্লাইন্ডকে। তিনি ডান পায়ের শটে বল জালে পাঠান। তাতে নেদারল্যান্ডস এগিয়ে যায় ২-০ গোলে। এই ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় ফন গালের শিষ্যরা।
বিরতির পর গোল শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র। একাধিক খেলোয়াড় বদল করে আক্রমণের ধারও বাড়ায়। তাতে ফলও পায় তারা। ৭৬ মিনিটের মাথায় ডানদিক থেকে ক্রিস্টিয়ান পুলিসিক বল বাড়িয়ে দেন হাজী রাইটকে। তিনি বল পেয়ে ডানদিক থেকে কোণাকুনি শট নেন। বল উড়ে গিয়ে দূরের পোস্ট দিয়ে জালে প্রবেশ করে।
অবশ্য ৮১ মিনিটে ডামফ্রিজ গোল করে আবার ব্যবধান বাড়ান। যুক্তরাষ্ট্রকে ম্যাচে ফেরার সুযোগ থেকে দূরে ঠেলে দেন। এ সময় বামদিক থেকে ক্রসে বক্সের মধ্যে বল বাড়িয়ে দেন ডেলি ব্লাইন্ড। সেটাতে বাম পায়ের দারুণ ভলিতে দূরের পোস্ট দিয়ে জালে পাঠান ডামফ্রিজ।
বাকি সময়ে অবশ্য আর কোনো গোল হয়নি। তাতে ৩-১ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মেম্ফিস-ডামফ্রিজরা। আর গোটা স্টেডিয়ামে শুরু হয় কমলা রঙের উৎসব। এই উৎসবের রঙ বিশ্বকাপের কতোদূর পর্যন্ত যায় দেখার বিষয়।