মায়েদের চোখের সামনেই মারা যাচ্ছে অনাহারী শিশুরা
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:১১:৪৯,অপরাহ্ন ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | সংবাদটি ১৯ বার পঠিত
আমার জন্য এ যেন এক কিয়ামত। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। আমার শিশুসন্তানদের চোখের সামনে মারা যেতে দেখেছি। আমি কোন অবস্থার মধ্য দিয়ে গেছি, তা কি আপনি কল্পনা করতে পারেন?’ কথাগুলো বলছিলেন আফগানিস্তানের আমিনা নামের এক নারী।
আমিনা এরই মধ্যে তাঁর ছয় শিশুসন্তানকে হারিয়েছেন। তাদের সবার বয়স তিন বছরের কম ছিল। আরেক কন্যাসন্তান বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করছে। সাত মাস বয়সী ওই শিশুর নাম বিবি হাজেরা। এই বয়সেও তাকে দেখে নবজাতক মনে হয়। তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা শিশুটি পূর্ব আফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশের জালালাবাদ আঞ্চলিক হাসপাতালে ভর্তি।
নিজের সন্তানদের এই দুর্দশার কারণে চরম ক্ষোভ র
য়েছে আমিনার মনে। প্রায় চিৎকার করতে করতে তিনি বলছিলেন, ‘দারিদ্র্যের কারণে আমার শিশুসন্তানেরা মারা যাচ্ছে। তাদের আমি শুকনো রুটি আর সূর্যের তাপে গরম করা পানি ছাড়া কিছু খাওয়াতে পারি না।’
আফগানিস্তানে ৩২ লাখ শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। বিবি হাজেরা তাদেরই একজন। দেশটিতে ৪০ বছর ধরে চলা যুদ্ধ ও দারিদ্র্যের কারণেই দেখা দিয়েছে অপুষ্টির এই সমস্যা। বর্তমানে সমস্যাটি নজিরবিহীন অবস্থায় পৌঁছেছে। জালালাবাদ আঞ্চলিক হাসপাতালের একটি কক্ষ থেকে এই বিপর্যয় সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায়।
হাসপাতালের ওই কক্ষে সাতটি শয্যায় ১৮টি শিশু রয়েছে। এমন নয় যে বিশেষ কোনো সময়ে সেখানে রোগীর সংখ্যা বাড়ে। বরং হাসপাতালটিতে দিনের পর দিন এই অবস্থাই চলছে। কক্ষটিতে কোনো কান্নাকাটি বা কোলাহল নেই। শোনা যায় কেবল শিশুদের হৃৎস্পন্দন মাপার যন্ত্রের ‘টিক টিক’ শব্দ। নীরবতার কারণ এই নয় যে শিশুরা ঘুমাচ্ছে বা অক্সিজেন মাস্ক পরে আছে। অধিকাংশ শিশুই জাগ্রত। তবে নড়াচড়া বা শব্দ করার মতো শক্তি তাদের শরীরে নেই।