মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের নতুন হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী। সদ্যবিদায়ী হাইকমিশনার শামীম আহসানের স্থলাভিষিক্ত হয়ে আজ সোমবার (৬ অক্টোবর) তিনি নতুন হাইকমিশনার হিসেবে যোগ দিয়েছেন।
নতুন হাইকমিশনার ১৭তম বিসিএস (ফরেন অ্যাফেয়ার্স) ক্যাডারের কর্মকর্তা মঞ্জুরুল করিম ১৯৯৮ সালে কূটনৈতিক জীবনে প্রবেশ করেন। এরপর থেকে তিনি মায়ানমার, ইরানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মিশনে রাষ্ট্রদূত ছিলেন।
মঞ্জুরুল করিম ইস্তাম্বুল, লন্ডন, রোম ও বন্দর সেরি বেগাওয়ান মিশনে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া উইংয়ের মহাপরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন।
সিলেট হবিগঞ্জের জেলার মাধবপুর এর সন্তান প্রকৌশল পড়াশোনা শেষ করে রোমের ইউনিভার্সিটি লা সাপিয়েনজা থেকে ভূরাজনীতি ও বৈশ্বিক নিরাপত্তায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন—যা কূটনৈতিক ক্ষেত্রে তাকে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করেছে।
মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা আশা করছেন, নতুন হাইকমিশনার তার কূটনৈতিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে মালয়েশিয়ায় থাকা প্রবাসীদের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবেন।
নতুন কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়াও স্থবির হয়ে থাকা এসব ইস্যুতে দ্রুত ও কার্যকর সমাধান বের করা, শিক্ষা, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি ও কমিউনিটি উন্নয়নে হাইকমিশনকে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।
বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া বাংলাদেশের অন্যতম কৌশলগত পার্টনার। পাম তেল আমদানি থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ—দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক ক্রমেই গভীর হয়েছে। প্রবাসী ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, নতুন হাইকমিশনার বাংলাদেশের পণ্য বাজারজাতকরণ ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ তৈরি করবেন।
বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার সম্পর্ক শুধু শ্রম ও অর্থনীতিতে সীমাবদ্ধ নয়, এর রয়েছে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক গুরুত্বও। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র মালয়েশিয়া অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি), আসিয়ান এবং এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে। রোহিঙ্গা সংকটসহ মানবাধিকার ইস্যুতে মালয়েশিয়া বাংলাদেশকে সমর্থন জানিয়েছে, যা ভবিষ্যতেও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত তারা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছেন। নতুন হাইকমিশনারের কাছে তাদের প্রত্যাশা— দূতাবাস হবে প্রবাসীদের প্রকৃত সহায়স্থল এবং জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে দুই দেশের সম্পর্কের নতুন সেতুবন্ধন।