নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে দ. আফ্রিকার সিরিজ জয়
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৪৩:০৬,অপরাহ্ন ২৭ আগস্ট ২০১৫ | সংবাদটি ৩৪৪ বার পঠিত
খেলাধুলা প্রতিনিধি,
ডারবানে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৬২ রানে হারিয়েছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিলো প্রোটিয়ারা। তৃতীয় ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং-এ নেমে ৭ উইকেটে ২৮৩ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ৪ বল হাতে রেখেই ২২১ রানে অলআউট হয়ে ম্যাচে হারের স্বাদ পায় নিউজিল্যান্ড।
সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকা জিতলেও, দ্বিতীয় ম্যাচে জয় পায় নিউজিল্যান্ড। ফলে তৃতীয় ওয়ানডেটি রূপ নেয় সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে। সেখানে টস জিতেই ব্যাটিং-এর সিদ্বান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স। এ ম্যাচে শুরুটা ভালোই করেছেন প্রোটিয়া দুই ওপেনার মরনে ভ্যান উইক ও হাশিম আমলা। নিউজিল্যান্ড বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলে ২০ ওভারে দলের স্কোর ৮৯ রানে নিয়ে যান তারা। তবে সেই স্কোর আরও বাড়তে পারতো। সেটি হয়নি হাশিম আমলার ভুলে। নিউজিল্যান্ডের মিডিয়াম পেসার গ্র্যান্ট ইলিয়টের স্লোয়ার ডেলিভারিতে বেকাদায় পড়ে আউট হন আমলা। ফলে ৫৫ বলে ৭টি বাউন্ডারিতে সাজানো ৪৪ রানের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে।
এরপর উইকেটে গিয়ে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি তিন নম্বরে নামা রিলি রোসৌ। মাত্র ৬ রান করেন তিনি। তবে দলের স্কোর বাড়ানোর দায়িত্বটা ভালোই করছিলেন ভ্যান উইক। তার সাথে ছিলেন ডি ভিলিয়ার্স। তবে এই জুটির কাছ থেকে ৩৮ রানের বেশি পায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। কারণ ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি তুলে প্যাভিলিয়নে ফিরেন ভ্যান উইক। ধীরস্থিরলয়ে ব্যাট করা ভ্যান উইকের ১০০ বলের ইনিংসে ৪টি চার ও ২টি ছক্কার মার ছিলো।
ভ্যান উইকের ধীরগতির ব্যাটিং-এ দলের রান রেটের অবস্থা ন্যাক্কারজনক হয়ে পড়ে। তার পতনের সময় দলের স্কোর ছিলো ৩০.৩ ওভারে ৩ উইকেটে ১৩৪ রান। তাতে চিন্তাটা বেশি বাড়ে অন্যপ্রান্তে ব্যাটিং-এ থাকা ডি ভিলিয়ার্সের। তাইতো ভ্যান উইকের বিদায়ের পর নিউজিল্যান্ড বোলারদের উপর চড়াও হন ডি ভিলিয়ার্স। তাতে চাপে পড়ে যায় সফরকারী বোলাররা। পাশাপাশি ওভারপ্রতি রান রেটও বেড়ে যায় স্বাগতিকদের। এর মাঝে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৭তম হাফ-সেঞ্চুরি ও ৮০০০ রান পূর্ণ হয় ডি ভিলিয়ার্সের। ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্রুত ৮০০০ পূর্ণ করে রেকর্ড বইয়ের প্রথমস্থানে নিজের নামও লেখান ডি ভিলিয়ার্স। শেষ পর্যন্ত ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৮ বলে ৬৪ রান করেন তিনি।
৪০.৩ ওভারে ২২০ রানে ডিভিলিয়ার্সের পতনের পর দলের স্কোর ৭ উইকেটে ২৮৩ রানে পৌছেছে ফারহান বেহারদিয়ানের ঝড়োগতির ইনিংসে। ২৮ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলেন বেহারদিয়ান। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে বেন ওয়েলার ৩টি ও ইলিয়ট ২টি উইকেট শিকার করেন।
জয়ের জন্য ২৮৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দলীয় ১৮ রানে ওপেনার মার্টিন গাপটিলকে হারায় নিউজিল্যান্ড। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান গাপটিল এবার আউট হন ১০ রান করে। এরপর দলকে ম্যাচ জয়ের পথে রাখেন আরেক ওপেনার টম লাথাম ও অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। দ্বিতীয় উইকেটে এ দু’জন যোগ করেন ১১৫ বলে ৮৪ রান। ১২ রানের ব্যবধানে উইলিয়ামসন ও লাথাম ফিরে গেলে চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। উইলিয়ামসন ৩৯ ও লাথাম ৫৪ রানে আউট হন।
তাদের বিদায়ের আর কোন ব্যাটসম্যান বড় ইনিংস বা বড় কোন জুটি গড়তে পারেননি। তাতেই নিউজিল্যান্ডের হারটা নিশ্চিত হয়ে যায়। মিডল-অর্ডারে ওয়ার্কারের ২১, ইলিয়টের ২০ ও মুনরোর ৩৫ রানে শুধুমাত্র হারের ব্যবধানটাই কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ২২১ রানে গুটিয়ে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৬২ রানের জয় উপহার দেয় নিউজিল্যান্ড। ম্যাচের সেরা হয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ডি ভিলিয়ার্স। আর সিরিজ সেরা হয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার আমলা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
দক্ষিণ আফ্রিকা : ২৮৩/৭, ৫০ ওভার (ডি ভিলিয়ার্স ৬৪, ভ্যান উইক ৫৮, ওয়েলার ৩/৭১)।
নিউজিল্যান্ড : ২২১/১০, ৪৯.২ ওভার (লাথাম ৫৪, উইলিয়ামসন ৩৯, ওয়াইস ৩/৫৮)।
ফল : দক্ষিণ আফ্রিকা ৬২ রানে জয়ী।
সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতলো দক্ষিণ আফ্রিকা।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : এবি ডি ভিলিয়ার্স (দক্ষিণ আফ্রিকা)।
ম্যান অব দ্য সিরিজ : হাশিম আমলা (দক্ষিণ আফ্রিকা)।