যোগ্য ও দক্ষ ৯৪৩৯০ জন, অথচ তারা কর্মবিমুখ
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:১৭:২৪,অপরাহ্ন ২৯ আগস্ট ২০১৫ | সংবাদটি ৩৫৭ বার পঠিত
স্টাফ রিপোর্টার,
৯৪ হাজার ৩৯০ জন। তাদের বয়স ১৫ থেকে ৫৯ বছরের কোঠায়। শিক্ষাগত যোগ্যতা বা দক্ষতায় কোন কমতি নেই তাদের। কিন্তু, ঘাটতিটা ইচ্ছাশক্তিতে। তারা শ্রমবিমুখ। আছে অন্য কিছু কারণও। তাদের অধিকাংশই সৌদি আরবের নাগরিক। কর্মবিমুখদের ৬৫ দশমিক ২ শতাংশ সৌদি নাগরিক এবং বাকিরা বিদেশী নাগরিক বা প্রবাসী। শ্রমবিমুখদের ৭২ দশমিক ৭ শতাংশই নারী। সৌদি আরবের ‘সেন্ট্রাল ডিপার্টমেন্ট অব স্ট্যাটিস্টিকস অ্যান্ড ইনফরমেশন’ (সিডিএসআই) এ পরিসংখ্যান দিয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ। ২০১৫ সালের প্রথমার্ধে প্রতিষ্ঠানসমূহে শ্রমিক বা কর্মচারীর সংখ্যা ও বেকারের সংখ্যার তুলনামূলক বিশ্লেষণে প্রতিবেদনটি তৈরি করে সিডিএসআই। এতে বলা হচ্ছে, এ মানুষগুলো কাজ করতে সক্ষম এবং তারা বৃদ্ধ নন, তারা প্রতিবন্ধী বা অসুস্থ নন, কোন স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তারা প্রশিক্ষণ লাভ করছেন না।
শূরা কাউন্সিলের হিউম্যান রিসোর্সেস কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আল-খুনাইজি বলেছেন, শ্রমবিমুখতার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। তিনি বলেন, যারা কাজ করছেন না, প্রকৃতপক্ষে তাদের কাজের প্রয়োজন নেই। কারণ, তাদের পরিবারের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সম্পদ লাভ করেছেন। নগদ অর্থ বা সম্পত্তি তাদের এ সম্পদের উৎস। অর্থাৎ, তারা সচ্ছল। একই সঙ্গে বেড়ে ওঠার সময় পারিবারিক ও সামাজিক সংস্কৃতি তাদের শিখিয়েছে, কাজের একমাত্র আকর্ষণই হলো অর্থ, দেশের উন্নয়নের জন্য সামাজিক দায়বদ্ধতা নয়। পশ্চিমা সমাজ ও পরিবার ব্যবস্থায় যেমন যোগ্যতার বলে জীবনে নানা অর্জনের ভিত্তিতে তরুণদের সম্পত্তি দানের একটা প্রথা প্রচলিত আছে, সেটা সৌদি আরবে নেই।
চেম্বার্স’ কাউন্সিলের জব মার্কেট কমিটির প্রধান প্রকৌশলী মানসুর আল-শাথরি বলছিলেন, শ্রমবিমুখ বিদেশীরা নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক হুমকি সৃষ্টি করেন। কেউ কেউ অর্থের জন্য চুরি, মাদক চোরাকারবারি ও ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়েন। সৌদি নারীদের শ্রমবিমুখতার বিষয়ে আল-খুনাইজি বলছিলেন, অভিভাবকদের কাছ থেকে অর্থ লাভের ব্যাপারতো রয়েছেই। তাছাড়া, পরিবারে যে পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিকতায় অনেকেই বেড়ে ওঠেন, তার সঙ্গে কাজের পরিবেশ খাপ খায় না। কখনও কখনও যাতায়াতের অত্যধিক খরচ নারীদের চাকরি করার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। সন্তানের দেখাশোনার জন্য গৃহপরিচারিকাদের ওপর ভরসা না থাকায় এবং তাদের কর্মস্থলের পাশে শিশুদের রাখার জন্য কোন ডে-কেয়ার বা নার্সারির ব্যবস্থা না থাকায়ও অনেকে কাজে ভিড়ছেন না। এদিকে শ্রম মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেয়া নীতিমালা অনুযায়ী, প্রবাসী শ্রমিকদের ওপর তাদের পরিবারের নির্ভরশীল সদস্যরাও কাজের অনুমতি পাবেন না। ফলে, প্রবাসীদের অনেকের যোগ্যতা ও দক্ষতা থাকার পরও তারা কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন না।