বৃষ্টিতে ক্রিকেটারদের শৈশব খুঁজে ফেরা
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:০২:১৬,অপরাহ্ন ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ | সংবাদটি ৩১০ বার পঠিত
স্পোর্টস রিপোর্টার
মিরপুর মাঠের প্রায় অনেকটা জুড়েই প্লাস্টিক কভার দিয়ে ঢাকা। টানা বৃষ্টিতে সেখনেও পানি জমে থৈ থৈ করছে। কিন্তু মাশরাফি বিন মুর্তজাকে দেখা গেল সেখানেই গড়াগড়ি খেতে। সঙ্গে সৌম্য সরকার, মুস্তাফিজুর রহমান, নাসির হোসেন, সোহাগ গাজী, রুবেল হোসেন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, শফিউল ইসলাাম, আল আমিন হোসেন, রনি তালুকদার এমনকি দলের সবচেয়ে গুরুগম্ভীর সাকিব আল হাসানও যোগ দিয়েছেন সেই গড়াগড়িতে। সেই মুহূর্তে হঠাৎই দুষ্টবুদ্ধিটা হয়তো খেলে যায় মাশরাফি বিন মুর্তজার মাথায়। শুরু হলো পিছল কাটার প্রতিযোগিতা। দূর থেকে দৌড়ে এসে সেই জমে থাকা পানিতে ঝাঁপ দিয়ে পিছল কেটে কে কার আগে যেতে পারে। শুরু হলো সেই ঝাঁপ দেয়ার খেলা। রেফারির ভূমিকাতে মাশরাফি। নির্ঘাত অনেকেই সেখান থেকে ছোটবেলার স্মৃতিতে চলে গেছেন। গ্রামের কাদায় ঝাঁপ দেয়ার সেই সুখ হয়তো খুঁজে পেয়েছেন মিরপুরের ঘাসের মাঠে। এর আগে অবশ্য কঠিন ট্রেনিং ক্যাম্প সেরে ফুটবল খেলায় মেতেছিলেন । তারপরই ঝম ঝম বৃষ্টি। সবাই যখন দৌড়ে বৃষ্টি থেকে বাঁচার চেষ্টা তখন জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সে কী আনন্দ! যেন শৈশবটাই খুঁজে ফিরছেন সেই ফুটবল খেলার মাঝে।
৯ দিন হলো চলছে এলিট ক্রিকেটারদের কন্ডিশনিং ক্যাম্প। মাঝে দু’টি দিন ছুটি ছিল। প্রথমদিনের ব্লিপ টেস্টে অনেকেরই থাকা হয়নি। কিন্তু গতকাল আবারও ট্রেইনার মারিও ব্লিপ টেস্টে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন ৫ জনকে। এর মধ্যে অন্যতম ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ও টেস্ট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। অন্য ৩ জন সাকিব আল হাসান, পেসার রবিউল ইসলাম শিবলু ও রনি তালুকদার। প্রথমদিনের মতো ফিটনেস নিয়ে খুব একটা সন্তুষ্ট হতে পারেননি ট্রেইনার। এমনকি দলের একজন সিনিয়র ক্রিকেটারের মুখেও ফিটনেস নিয়ে একটু হতাশার ছাপ। বলেই ফেললেন, ‘আমাদের সময় যে ফিটনেস ছিল এখন তার অর্ধেকটাও পারে না তরুণ ক্রিকেটাররা। আমি এখন যতটা পারি সেটাও না।’ তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ব্লিপ টেস্টে ১২ মাত্রা হলেই যথেষ্ট। পাঁচ জনের মধ্যে মুশফিক ১১ পয়েন্ট নিয়ে মোটামুটি ভালই ফিটনেসের প্রমাণ দিয়েছেন। মাশরাফি ১০ পয়েন্টের একটু বেশি, তবে রবিউল ইসলাম শিবলু ছিলেন ৮ লেভেলের নিচে। দলের একজন ট্রেইনার আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘এতে চিন্তিত হওয়ার কিছুই নেই। আশা করি দিন যত যাবে ততো উন্নতি করবে। আর শিবলু সব সময়ই এমন, এটাই ওর জন্য স্বাভাবিক। কিন্তু বোলিংয়ে এর কোন প্রভাব পড়বে না।’
অন্যদিকে দলের সঙ্গে খুব জোরেশোরেই অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন সোহাগ গাজী। প্রায় ১১ মাস জাতীয় দলের সঙ্গে ছিলেন না। তাই সেই ঘাটতি পুষিয়ে নিতেই ব্যাকুল তিনি। নিজের প্রত্যয় নিয়ে বলেন, ‘অনেকদিন ক্যাম্প করার তেমন সুযোগ ছিল না। আসলে এই ধরনের ক্যাম্পে না থাকলে নিজের ভুল-ত্রুটিগুলো শুধরে নেয়া যায় না। আমি চেষ্টা করছি যে অভাবটা ছিল সেটি পূরণ করতে। আমার মূল লক্ষ্য এখন ফিটনেস নিয়ে কাজ করা। আমি মনে করি ফিটনেস ঠিক রাখতে পারলে বোলিংটাও ভাল হবে।’ অন্যদিকে বিয়ের ছুটি কাটিয়ে অনুশীলন ফিরেছেন রনি তালুকদার। বৃষ্টিতে ফুটবল খেলে আর লম্বা ট্রেনিং সেশন করে ক্লান্ত। তবে ফুটবল খেলে যে আনন্দ পেয়েছেন তাতেই তার ক্লান্তি চলে গেছে। অনুশীলন নিয়ে বলেন, ‘এইতো তিন-চারদিন হলো ক্যাম্পে এসেছি। ছুটির সময়টাও ভাল কেটেছে। এখানেও ভাল কাটছে।’ অন্যদিকে জন্ডিসের শঙ্কা থাকলেও শেষ পর্যন্ত মাঠে ফিরেছেন স্পিনার তাইজুল ইসলামও।
পুরোদমেই ক্রিকেটাররা এখন ব্যস্ত। জাতীয় দলের মিশন অস্ট্রেলিয়া খুব দূরে নয়। আগামী মাসেই চলে আসছে অজিরা। তাই নিজেদের ঝালিয়ে নিতে ও দলে সুযোগ পাকাপোক্ত করতেই এখন ক্রিকেটাররা মরিয়া।