লাগাতার ধর্মঘটের ডাক শিক্ষার্থীদের
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:৪৮:১৮,অপরাহ্ন ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ | সংবাদটি ৩৩৫ বার পঠিত
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার না করায় লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল পৃথক দুটি সংবাদ সম্মেলন থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন। আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত স্ব স্ব ক্যাম্পাসে ধর্মঘট ও অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে রাজধানীর স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে শনি থেকে সোমবার পর্যন্ত তিন দিনের ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী এ ঘোষণা দেন। ইস্ট ওয়েস্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর থেকে বাড়তি করের বোঝা সরানোর দাবিতে ‘নো ভ্যাট অন এডুকেশন’ স্লোগানে আন্দোলন চলবে। রোববার থেকে লাগাতার ধর্মঘট পালন করবে ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি। এ সময় তারা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বক্তব্যেরও প্রতিবাদ জানান। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, শুধু শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে নয়, শিক্ষা খাত থেকেই ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে। এ জন্য তারা রোববার থেকে নিজ নিজ ক্যাম্পাসে লাগাতার ধর্মঘট পালন করবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে। শিক্ষার্থীরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, সেটাকে ধন্যবাদ জানান। সেই সঙ্গে ‘শিক্ষার্থীরা ভ্যাট দেবে না, ভ্যাট দেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ’- প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রত্যাখ্যানেরও ঘোষণা দেন তারা।
অন্যদিকে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র ধর্মঘটের ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফরম ‘নো ভ্যাট অন এডুকেশন’ এর অন্যতম সমন্বয়ক জ্যোতির্ময় চক্রবর্র্তী। তিনি বলেন, অবিলম্বে টিউশন ফির ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার ও বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) মাধ্যমে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য টিউশন ফি নির্ধারণের নীতিমালা প্রণয়নের দাবিতে আমরা আজ শনি থেকে আগামী সোমবার পর্যন্ত ছাত্র ধর্মঘট পালন করবো। বাংলাদেশের সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে এই ধর্মঘট পালিত হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। এ সময় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি), ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ), মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। পরে ধানমন্ডি এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলও করেন তারা। বাড়তি ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়কে মশাল মিছিল করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি’র ওপর সাড়ে ৭ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপের প্রতিবাদে গত কয়েক মাস ধরেই আন্দোলন চালিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা।
গত বুধবার রামপুরায় ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির মধ্যে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে এর প্রতিবাদে এবং ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে এরপর দিন অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাস্তায় নামে আন্দোলনকারীরা। ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক আটকে বিক্ষোভ করলে এতে কার্যত অচল হয়ে পড়ে রাজধানী। এতে স্মরণকালের চরম দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ যাত্রীরা। তবে ভ্যাট প্রত্যাহারের বিষয়ে দৃশ্যত অনমনীয় সরকার এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করেই তৎপর হয়ে ওঠে। ওইদিন দুপুরে সরকারের এক তথ্য বিবরণীতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে (এনবিআর) একটি ব্যাখ্যা দেয়া হয়। এতে এনবিআর জানায়, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করার জন্য নতুন করে ভ্যাট আরোপ করা হয়নি। বিদ্যমান টিউশন ফি’র মধ্যে ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ভ্যাট বাবদ অর্থ পরিশোধ করার দায়িত্ব সম্পূর্ণরূপে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের, কোনক্রমেই শিক্ষার্থীদের নয়। এই ভ্যাট ‘বিদ্যমান টিউশন ফি’র মধ্যে ভ্যাট ‘অন্তর্ভুক্ত থাকায়’ নতুন করে টিউশন ফি বাড়ার কোন ‘সুযোগ নেই’ বলেও এতে উল্লেখ করা হয়। এরপর বিকালে সিলেটে এক সংবাদ সম্মেলনে আবুল মাল আবদুল মুহিতও বলেন, এ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দিতে হবে। তারা যে হারে টাকা আদায় করে সে হারে এটা দিতেই পারে। তবে কোন ফি বাড়াতে পারবে না। এরপর রাতে সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন, এই ভ্যাট তো ছাত্রদের দিতে হবে না। এটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দিতে হবে। এটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে। তবে সরকারের এ আশ্বাসে সন্তুষ্ট নন জানিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী বলেন, সরকারের বা এনবিআরের ব্যাখ্যা ‘অতি চতুরতার্পূণ’। শিক্ষা মৌলিক অধিকার। এর ওপর আমরা কোন ধরনের ভ্যাট চাই না। ওই ভ্যাট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেবে বলা হলেও ভবিষ্যতে বিভিন্ন সার্ভিস চার্জ ও টিউশন ফি’র ওপর টাকা বাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকেই ওই ভ্যাট আদায় করবে বলে আশঙ্কা করেন ওই শিক্ষার্থী। ভ্যাটের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মালিক সমিতি। সংগঠনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন শুক্রবার বিকালে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ট্রাস্টের মাধ্যমেই চলে। ট্রাস্ট ভ্যাটের আওতায় থাকে না। কিন্তু এনবিআর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভ্যাট দেবে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ কোথা থেকে ভ্যাট দেবে? তারপরও তারা যদি বলে আমাদের ভ্যাট দিতে বলে, তাহলে দিতে হবে। এনবিআর আইন দেখে ব্যবস্থা নিক। কিন্তু বিষয়টি সরকার পুনর্বিবেচনা করবে বলে আমরা আশা করছি।
ভ্যাট নিয়ে বিতর্ক, আশ্বস্ত হতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা
সরকার বলছে ভ্যাট দেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ভ্যাট আরোপের পর থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই ভ্যাট আদায় করে আসছে। অবশ্য এখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা ভ্যাট দেবেন। এ নিয়ে আন্দোলন করার প্রয়োজন নেই। তবে ভ্যাট আসবে কোথা থেকে এ বিষয়ে স্পষ্ট না হওয়ায় সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে ভরসা পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখন আশ্বাস দিলেও শেষতক ভ্যাটের বোঝা চাপবে তাদের ঘাড়েই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাট নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই গতকাল শিক্ষার্থীরা বিচ্ছিন্নভাবে ধর্মঘট পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।
গতকাল রাজধানীতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মালিক সমিতি এক বৈঠক শেষে সংগঠনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন সাংবাদিকদের জানান, এনবিআররের প্রজ্ঞাপন ও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর ভ্যাট এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর বর্তায়। এখানে আর ছাত্রদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। তবে এনবিআর যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, তা পুনরায় চিন্তা করে দেখতে পারে, কারণ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভ্যাট প্রযোজ্য কি না। কারণ, এই প্রতিষ্ঠানগুলো ট্রাস্টের অধীনে চলে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এখানে ভ্যাট প্রযোজ্য কি না। কারণ, আমরা ভোক্তা নই, সেবা গ্রহণ করি না। যারা সেবা গ্রহণ করে তারাই কেবল ভ্যাটের আওতায় আসে। বিষয়টি সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।
তবে শিক্ষার্থীরা সরকার ও মালিকদের আশ্বাসকে অতি চতুরতা আখ্যায়িত করে আগামী রোববার থেকে তিন দিনের ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। গতকাল রাজধানীর ইস্ট ওয়েস্ট ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আলাদা আলাদাভাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন ঘোষণা দেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, চলতি বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট ধার্য করার পরই শিক্ষার্থীদের ওপর টিউশন ফি বাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভ্যাটের টাকা সংগ্রহ শুরু করে। প্রতি সেমিস্টারে গড়ে একজন শিক্ষার্থীর টিউশন ফির সঙ্গে ভ্যাট টাকা দিতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, একজন শিক্ষার্থী যে কোন ধরনের লেনদেন করেছে সেখানে ভ্যাট দিতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার আন্দোলনের পর একটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া ভ্যাট ফেরত দেয়ার কথা জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জুলাই মাসে বাজেটে ভ্যাটের ঘোষণা আসার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের কাছ থেকে সব ধরনের সারচার্জের ওপর সাড়ে ৭% ভ্যাট আদায় শুরু করে। যদিও সরকার বলছিল এ টাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেবে। শিক্ষার্থী নয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের ওপর এ ভ্যাট চাপিয়ে দেয়। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ টাকা না দিতে বেঁকে বসেন। এই অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাধ্য হয়ে তাদের আন্দোলনে নামতে বাধ্য করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের বুঝান, ভ্যাট প্রত্যাহার না হলে তাদেরই ভ্যাট দিতে হবে।
বাজেটে প্রথমে ১০ ভাগ ভ্যাট আরোপ করা হলে পরে তা সাড়ে ৭ ভাগে নামিয়ে আনা হয়। এরপর মালিক, শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে আন্দোলন করেন ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে।
গত বধুবার ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনে নামেন। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবারে রাজধানীসহ আরও দুটি বিভাগীয় শহরের আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিক্ষা মৌলিক অধিকার। এখানে কোন ভ্যাট চলবে না। সরকার ভ্যাট প্রত্যাহার না করলে আন্দোলন চলবে। কারণ সরকার যতই বলুক বিশ্ববিদ্যালয়কে ভ্যাট দিতে হবে প্রকারান্তরে এই ভ্যাট আমাদেরই দিতে হবে।
আসলে ভ্যাট কে দেবে এমন প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান মানবজমিনকে বলেন, এটি আমাদের বিষয় না। এটি আদায় করবে রাজস্ব বোর্ড। দেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কার কাছে থেকে নেবে, কে দেবে সেটি ওই দুপক্ষের বিষয়। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার সিলেটে এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আগের মতো সাফ জানিয়েছেন, কোন অবস্থায় ভ্যাট প্রত্যাহার হবে না। একই দিনে রাজস্ব বোর্ড এক বিবৃতিতে বলেন, এই ভ্যাটে ফলে শিক্ষার্থীদের বিদ্যমান টিউশন ফি’র ওপর কোন অতিরিক্ত চাপ পড়বে না। কারণ এই ভ্যাট দেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আসলে কে দেবে, জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর এ কে আজাদ চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, এটা তো পরিষ্কার এই ভ্যাট শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যাবে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনুমোদন দেয়া হয়। এই ইন্স্যুতে মালিকরা ভ্যাট দেবে না। আর সরকার যদি চাপিয়ে দেয় তবে অন্য কোন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এ ভ্যাটের টাকা আদায় করবে কর্তৃপক্ষ।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার প্রথমে টিউশন ফির ওপর ভ্যাট বসাবে বলেছে। পরে বলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব চার্জে ভ্যাট বসবে। এখন তারা বলছে ভ্যাট দেবে বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কখন ভ্যাট দেয়া হবে না। কারণ, এটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান।
একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, কোন অলাভজনক প্রতিষ্ঠান থেকে ভ্যাট কিংবা ট্যাক্স আদায় করা যায় না। তার পরও যদি সরকার আদায় করতে চায় সেটি শিক্ষার্থীদের বহন করতে হবে। তিনি বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক, গবেষণা, বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন এবং একাডেমিক প্রয়োজনের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের ফি নির্ধারণ করা হয়। এখন যদি ভ্যাট দিতে হয় তাহলে সেটা কোথা থেকে আসবে?
এদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মালিক সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন গতকাল দুপুরে বলেন, ভ্যাট আরোপ না করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু সরকার তা শোনেনি। বিশ্ববিদ্যালয় কি নিজেদের তহবিল থেকে ভ্যাট দেবে। আসলে এটা দিতে হবে শিক্ষার্থীদেরই। এনবিআর যেটা বলেছে, সেটাকে বোকা বোঝানো বলে। শিক্ষার্থীদের ওপরেই এ দায় চাপবে। আর বিশ্ববিদ্যালয় একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত। এখনও সময় আছে, এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।