সাকিবকে নিয়ে রংপুরের চমক
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৩৫:২৬,অপরাহ্ন ২৩ অক্টোবর ২০১৫ | সংবাদটি ৩০৫ বার পঠিত
নানা বিতর্কের পর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) তৃতীয় আসর নিয়ে ছিল নানা শঙ্কা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গতকাল ‘প্লেয়ার বাই চয়েস’-এর মধ্য দিয়ে সেই শঙ্কা কেটে গেল। বিপিএল’র ছয়টি দল লটারিতে টেনেছেন নিজেদের পছন্দের ক্রিকেটারদের। দেশী ১৩০ জন ও বিদেশী ১৪৮ ক্রিকেটার নিয়ে শুরু হয় ‘প্লেয়ার বাই চয়েস।’ এর মধ্যে দলগুলোর জন্য বাধ্যবাধকতা ছিল গভর্নিং কাউন্সিলের তালিকা থেকে দেশী ১০ জন ও বিদেশী ৩ জনকে দলে ভিড়ানোর। এর মধ্যে দেশী তালিকা থেকে ৫৭ জন ও বিদেশী ১৯ জন ক্রিকেটারকে দলে টেনেছে ফ্র্যাঞ্চাজিরা। প্লেয়ার বাই চয়েসের আগে থেকেই সব দল তালিকার বাইরেও বেশ কয়েকজন বিদেশী ক্রিকেটারকে দলে নিয়ে রেখেছিলো। তবে এখন পর্যন্ত দেশী ১৩ ও বিদেশী ১২ জন ক্রিকেটার নিয়ে ২৫ জনের দল পূর্ণ করতে পারেনি একটি দলও। আগামী ৭ দিনের মধ্যে অবশ্য চূড়ান্ত দল ও ক্রিকেটার চুক্তি পত্র গভর্নিং কাউন্সিলের কাছে জমা দিতে হবে দলগুলোর। লটারিতে দল গড়লেও ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চমক দেখিয়েছে রংপুর রাইডার্স। চারবার তারা লটাারিতে প্রথম হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। জাতীয় দলের তরুণ তারকা সৌম্য সরকারকে দিয়ে শুরু করে শেষ করেছে আইকন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে দলে নিয়ে। তাদের পরই লটারি ভাগ্যে তিনবার প্রথম হয়েছে সিলেট। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও বরিশাল বুলস ২ বার করে প্রথম হলেও ঢাকা ডাইনামাইটসের একবারও প্রথম হওয়ার সুযোগ হয়নি। দল গড়ার ভাগ্যে সব চেয়ে বেশি এগিয়ে রংপুর ও বরিশাল।
গতকাল রাজধানীর হোটেল রেডিসনে সকাল ১০টায় ‘প্লেয়ার বাই চয়েস’ শুর হওয়ার কথা থাকলেও শুরু হয় সাড়ে ১১টায়। প্লেয়ার ড্রাফটের কমিশনার হিসেবে ছিলেন বিসিবি’র সহ সভাপতি মাহবুবুল আনাম। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় ক্রিকেটার দলে ভেড়ানোর কার্যক্রম। বোর্ড সভাপতি শুরুতে বক্তব্যে বলেন, ‘বিপিএল থেকে অর্থ উপার্জন নয়, ক্রিকেটকে যারা ভালবাসে তাদেরকেই নেয়া হয়েছে। আশা করছি, দেশের স্বার্থ, ক্রিকেটের স্বার্থ, সবকিছু বিবেচনা করেই দল চালাবে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা। আর বিদেশী ক্রিকেটারদের একই হোটেলে রাখতে পারলে ভাল হবে। সেক্ষেত্রে নিরাপত্তা ভালভাবে দেওয়া যাবে। আশা করছি, ‘প্লেয়ার বাই চয়েসে’ সব দলই ভারসাম্যপূর্ণ হবে।’
তবে ‘প্লেয়ার বাই চয়েসে’র বাইরে দেশী ক্রিকেটার বৃহস্পতিবারের আগে দলে ভেড়ানো না গেলেও বিদেশী নামী ক্রিকেটারদের এ ধাপের বাইরে থেকেই নিয়েছে দলগুলো। তাদের তালিকাতেও রাখা হয়নি। কুমিল্লা যেমন শোয়েব মালিক, সুনিল নারাইন, আহমেদ শেহজাদ, মারলন স্যামুয়েলসকে আগেই দলে নিয়েছে। ঠিক তেমনি কুমার সাঙ্গাকারা, রায়ান টেন ডেসকাট, মোহাম্মদ ইরফান, ইয়াসির শাহ, নাসির জামশেদকে নিয়েছে ঢাকা। একইভাবে মোহাম্মদ আমির, চামারা কাপুগেদারা, এলটন চিগুম্বুরা, উমর আকমলকে চিটাগং; ক্রিস গেইল, ব্রেন্ডন টেইলর, কেভন কুপার, এভিন লুইসকে বরিশাল; শহীদ আফ্রিদি, রবি বোপারা, ব্র্যাড হজ, অজান্থা মেন্ডিসকে সিলেট; ড্যারেন স্যামি, থিসেরা পেরেরা, লেন্ডল সিমন্সকে রংপুর দলে ভিড়িয়েছে। এক সাকিব আল হাসানকে পেয়েই বাজিমাত করেছে রংপুর রাইডার্স। তাদের চাহিদা ছিল সাকিব। ভাগ্য এত ভাল যে, তাকেই পেয়েছে। এই বিষয়ে রংপুরের কর্ণধার মুস্তাফা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এইবার দল করবো চ্যাম্পিয়ান হওয়ার জন্যই। আর সাকিবকে পেয়ে সে আশা আরও উজ্জ্বল হয়েছে। আমরা এখন দলে বাকি যেসব ক্রিকেটার আনবো তাদের যেন দলকে চ্যাম্পিয়ন করার ক্ষমতা থাকে সেটিই হবে লক্ষ্যণীয়।
বরিশাল বুলস আগেই দলে ভিড়িয়েছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দানবখ্যাত ক্রিস গেইলকে। যদিও গেইল খেলতে পারবেন মাত্র ৫টি ম্যাচ। আইকন ক্রিকেটারদের দলে নেয়ার ক্ষেত্রে লটারিতে ৩ নম্বরে থাকে বরিশাল। প্রথমে সাকিব, দ্বিতীয়তে মাশরাফি দল পেয়ে যাওয়ায় সবার ধারণা ছিল, হয় তামিম নয়তো মুশফিককে নেবে বরিশাল। অথচ দেখা গেল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নিল তারা। সবাই তখন হতবাক! এ কী করলো বরিশাল। দলে সামঞ্জস্য আনতেই এমনটি করেছে তারা। তামিম ও মুশফিক শুধু ব্যাটিংটাই করতে পারবেন। মাহমুদুল্লাহ ব্যাটিং-বোলিং দু’টিই করতে পারবেন।
অন্যদিকে জাতীয় দলের একমাত্র লেগ স্পিনার যুবায়ের হোসেন এখনও কোন দল পাননি। আর তিনি শেষ পর্যন্ত কোন দল পাবেন কিনা তা নিয়েও রয়েছে সন্দেহ। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল ও বিসিবি’র পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়ছে এ বিষয়ে তাদের কিছু্ই করার নেই। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপরই নির্ভর করছে তার দল পাওয়া।
রংপুর রাইডার্স
আইকন : সাকিব আল হাসান
দেশী: সৌম্য সরকার, আরাফাত সানি, মো. মিঠুন, মুক্তার আলী, সাকলাইন সজীব, জহুরুল ইসলাম, আবু জায়েদ চৌধুরী রাহি, মুরাদ খান ও রাসেল আল মামুন।
বিদেশী: ড্যারেন স্যামি, থিসেরা পেরেরা, লেন্ডল সিমন্স, সচিত্রা সেনানায়েকে, মোহাম্মদ নবী ও ওয়াহাব রিয়াজ।
ঢাকা ডিনামাইটস
আইকন: নাসির হোসেন
দেশী: মুস্তাফিজুর রহমান, মোশাররফ হোসেন রুবেল, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, শামসুর রহমান, সৈকত আলী, ফরহাদ রেজা, নাবিল সামাদ, আবুল হাসান রাজু ও ইরফান শুক্কুর।
বিদেশী: কুমার সাঙ্গাকারা, রায়ান টেন ডেসকাট, মোহাম্মদ ইরফান, ইয়াসির শাহ, নাসির জামশেদ, সোহেল খান, ডেভিড মালান ও শাহজাইব হাসান।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
আইকন : মাশরাফি বিন মুর্তজা
দেশী: লিটন কুমার দাস, ইমরুল কায়েস, শুভাগত হোম, সানজামুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম রাব্বি, আরিফুল হক, মাহমুদুল হাসান, নাঈম জুনিয়র, আবু হায়দার রনি ও ধীমান ঘোষ।
বিদেশী: শোয়েব মালিক, সুনীল নারিন, আহমেদ শেহজাদ, মারলন স্যামুয়েলস, ড্যারেন স্টিভেন্স, নুয়ান কুলাসেকেরা, আন্দ্রে রাসেল ও লাহিরু থিরিমান্নে।
চিটাগাং ভাইকিংস
আইকন : তামিম ইকবাল
দেশী: এনামুল হক বিজয়, তাসকিন, জিয়াউর রহমান, ইলিয়াস সানি, নাঈম ইসলাম, এনামুল হক জুনিয়র, ইয়াসির আলী চৌধুরী, শফিউল ইসলাম, আসিফ আহমেদ রাতুল ও নাফিস ইকবাল খান।
বিদেশী: মোহাম্মদ আমির, চামারা কাপুগেদারা, এলটন চিগুম্বুরা, উমর আকমল, জীবন মেন্ডিস, সাঈদ আজমল ও রবিন পিটারসেন।
বরিশাল বুলস
আইকন : মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ
দেশী: সাব্বির রহমান রুম্মান, আল-আমিন হোসেন, সোহাগ গাজী, তাইজুল ইসলাম, শাহরিয়ার নাফিস, মেহেদী মারুফ, নাদিফ চৌধুরী, রনি তালুকদার, শরীফউল্লাহ ও সাজেদুল ইসলাম।
বিদেশী: ক্রিস গেইল, ব্রেন্ডন টেলর, কেভন কুপার, এভিন লুইস, সেকুগে প্রসন্নে, মোহাম্মদ সামি ও ইমাদ ওয়াসিম।
সিলেট সুপার স্টার্স
আইকন : মুশফিকুর রহিম
দেশী: রুবেল হোসেন, মুমিনুল হক সৌরভ, আব্দুর রাজ্জাক, নুরুল হাসান সোহান, মো. শহীদ, নাজমুল হোসেন অপু, জুনায়েদ সিদ্দিকী, নাজমুল হোসেন মিলন ও আবু সায়েম চৌধুরী।
বিদেশী: শহীদ আফ্রিদি, রবি বোপারা, ব্র্যাড হজ, অজান্থা মেন্ডিস, ক্রিস জর্ডান, জস কব ও সোহেল তানভীর।