লন্ডনে সমাবেশ: মাহমুদুর রহমান জাতিকে আশার আলো দেখাচ্ছেন
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:১৪:২৪,অপরাহ্ন ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | সংবাদটি ২২৩৪ বার পঠিত
লন্ডনে সমাবেশ: মাহমুদুর রহমান জাতিকে আশার আলো দেখাচ্ছেন
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও দৈনিক আমার দেশ খুলে দেয়ার দাবীতে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশ হচ্ছে একটি উম্মুক্ত কারাগার। যেখানে মানুষের কোন স্বাধীনতা নেই। কেউ নিজের অধিকারের কথাও বলতে পারে না। এর মাঝে দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান জাতিকে আশার আলো দেখাচ্ছেন। তাঁকে বাংলার নেলসন ম্যান্ডেলা আখ্যায়িত করে বক্তারা বলেন, জেল-জুলুম নির্যাতন করে মানুষের অধিকার বেশিদিন দাবিয়ে রাখা যায় না। মাহমুদুর রহমান মানুষের অধিকার ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যেই সংগ্রামের আহ্বান জানিয়েছেন দেশের এতে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন।
মাহমুদুর রহমান মুক্তিপরিষদ ইউকে’র উদ্যোগে পূর্ব লন্ডনের ওডহাম সেন্টারে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা এ কথা বলেন। বক্তরা অবিলম্বে আমার দেশসহ বন্ধ করে দেওয়া গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবী জানান।
যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ ও বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক কে এম এ মালিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, মাহমুদুর রহমান মুক্তি আন্দোলন ইউকে’র আহ্বায়ক কমিউনিটির প্রবীন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সাংবাদিক কে এম আবু তাহের চৌধুরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ইউরোপের সভাপতি প্রফেসর আবদুল কাদির সালেহ, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টা ব্যারিষ্টার এম এ সালাম, বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিষ্টার নাজির আহমদ, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ড. এম এ আজিজ, সাংবাদিক ও রাজনীতিক শেখ মহিউদ্দিন আহমদ, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব মাওলানা রফিক আহমদ রফিক, সাংবাদিক শামসুল আলম লিটন, সাবেক ছাত্র নেতা শরিফুজ্জামান চৌধুরী তপন, জাতীয়তবাদী আইনজীবী ফোরামের সাবেক সভাপতি ব্যারিষ্টার ইকবাল হোসেন, আইনজীবী ফোরামের সাবেক সাধারন সম্পাদক ব্যারিষ্টার তমিজ উদ্দিন, আইনজীবী ফোরামের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিষ্টার আলিমুল হক লিটন, সাবেক ছাত্রনেতা এমদাদ হোসেন টিপু, সাংবাদিক ও কবি শিহাবুজ্জামান কামাল, সাংবাদিক খান জামাল মো: নূরুল ইসলাম, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের ইভেন্ট সেক্রেটারি তৌহিদ আহমদ, সাংবাদিক আফসার উদ্দিন, রাজনীতিক সিরাজুল ইসলাম শাহিন, অ্যাডভোকেট নাসের খান অপু, সাবেক ছাত্র নেতা জাকির কাবেরী, যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি নাসির আহমদ শাহিন, অ্যাডভোকেট নাসরিন আক্তার, অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম তোহা, সাবেক ছাত্র নেতা হাসনাত চৌধুরী, সাংবাদিক সূফি বর্ষন প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার লন্ডন নির্বাসিত সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান। অনুষ্ঠন পরিচালনা করেন মাহমুদুর রহমান মুক্তি আন্দোলনের সদস্য সচিব সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান। অনুষ্ঠানের বিভিন্ন শ্রেনী ও পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে এখন চলছে ফ্যাসিবাদের আগ্রাসন। ইন্ডিয়ান সা¤্রাজ্যবাদ ও ফ্যাসিবাদ এখন একাকার হয়ে গেছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তির পরথ হচ্ছে জনগনকে সাথে নিয়ে গণবিপ্লব। বক্তারা বলেন, এই গণবিপ্লবের জন্য দরকার হচ্ছে দৃঢ় ও দেশপ্রেমিক সাহসী নেতৃত্ব। বক্তরা বলেন, মাহমুদুর রহমান কারামুক্তির পর প্রথম এবং দ্বিতীয় বক্তব্যের মাধ্যমে দেশবাসীকে সেই পথের দিশা দিয়েছেন। এখন প্রয়োজন হচ্ছে তাঁর বক্তব্যকে ধারন করে রাজনৈতিক নেতৃত্বের এগিয়ে আসা।
মাহমুদুর রহমানকে বাংলাদেশের ম্যান্ডেলা আখ্যায়িত করে বক্তারা বলেন, ন্যালসন ম্যান্ডেলা তাঁর জাতিকে মুক্তির লক্ষ্যে সংগ্রাম করতে গিয়ে নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলা করতে হয়েছে। বছরের পর বছর জেল ও জুলুমের শিকার হয়েছেন। তারপরও হাল ছাড়েননি। তাঁর দৃঢ় নেতৃত্বের ফলে জাতির মুক্তি মিলেছিল। মাহমুদুর রহমান রাজনীতিক না হয়েও জাতিকে মুক্তির পথ দেখাতে গিয়ে নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। ফ্যাসিবাদের চুড়ান্ত রুপে পুলিশি হামলায় পত্রিকা বন্ধ করে দেয়ার মাধ্যমে তাঁর কলম কেড়ে নেয়া হয়েছে। তাঁর উপর শারিরীক ওমানসিক নির্যাতন হয়েছে। দুই দফায় দীর্ঘ পাঁচ বছর তাঁকে কারাগারে থাকতে হয়েছে। এখনো তাঁর জীবন ঝুকির মধ্যে রয়েছে। তারপরও তিনি জাতির মুক্তির লক্ষ্যে বলে যাচ্ছেন।
সভাপতির বক্তব্যে ড.কে এম এ মালিক বলেন, আমাদের দেশ এখন ইন্ডিয়ান আগ্রাসনের শিকার। ফ্যাসিবাদী শাসনকে জিয়ে রেখে ইন্ডিয়া তাঁর আধিপত্যকের সম্প্রসারিত করতে চায়। এটা আমাদের সবাইকে আগে বুঝতে হবে। নতুবা মুক্তির পথ খুজে পাওয়া যাবে না। ওষুধের জায়গা খুজে বের না করতে পারলে রোগ যেমন ভাল হয় না, তেমনি রাজনৈতিক সঙ্কটেরও কারন খুজে বের করতে হবে। সেই অনুযায়ী অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করতে হবে। মাহমুদুর রহমান সেই কাজটি করেছেন। কারন খুজে বের করে অ্যাকশন প্ল্যান কি হওয়া উচিত সেটা তিনি বলে দিয়েছেন।
কে এম আবু তাহের চৌধুরী বলেন, আমাদের এখন আর বসে থাকার সময় নেই। প্রবাসে আমরা কথা বলার সুযোগ পাচ্ছি। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ আজ নরকের যন্ত্রনায় ভুগছে। দেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই। ভিন্নমতের সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেল জোর করে বন্ধ রাখা হয়েছে। এই অবস্থার বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর সময় অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে।
প্রফেসর আবদুর কাদির সালেহ বলেন, আমাদের সামনে দুইটা পথ রয়েছে। হয় আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদকে গ্রহন করা অথবা তার বিরুদ্ধে লড়াই করে জাতিকে মুক্ত করা। মাহমুদুর রহমান সেই বিষয়টা তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে পরিস্কার করে দিয়েছেন। এখন জাতির নেতৃত্ব দিতে যারা আগ্রহী তাদেরকে সেই ঝান্ডা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। নতুবা ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না।
ব্যারিষ্টার নাজির আহমদ বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মাহমুদুর রহমান অমর হয়ে থাকবেন। তাঁকে এখন চিকিৎসার জন্য বৃটেনের ভিসা দেয়া হয়নি। এটা মানবাধিকার ও বৃটিশ ঐতিহ্যের পরিপন্থি। মাহমুদুর রহমানের সুচিকিৎসার দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানবাধিকারের জন্য প্রবাসীরা লড়াই করতে হবে।
ব্যারিষ্টার এম এ সালাম বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতীক হচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। তাদের নেতৃত্বে দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত গণবিপ্লবের জন্য মানুষ প্রস্তুত রয়েছে।