খালেদা জিয়া আন্দোলনের ডাক দিলেই রাজপথে নেমে আসবো : শাম্মী আখতার
ওসমানীনগর থেকে : জনপ্রিয়তায় পিছিয়ে নেই কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার। বিগত ৪ বছর ধরে বিএনপির ডাকা রাজপথের আন্দোলনে পুলিশী নির্যাতন, জেল-জুলুমসহ বিভিন্নমুখী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এই নারী নেত্রী। হবিগঞ্জের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ ছিলেন। গাড়ি ভাংচুরে অভিযোগে বনানী থানার মামলায় গ্রেপ্তারের পর গত ২০১৪ সালে ২৬ ডিসেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। রিমান্ড এবং কারাগারে তারেক নানামূখী নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। প্রায় দেড় মাস ছিলেন কারান্তরীন অবস্থায়। রাজপথের লড়াকু সৈনিক হিসেবে খ্যাত এই নারী নেত্রী দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন। এমনকি কোন টক-শোতেও তাকে দেখা যায় না। এর কারন হিসেবে অনেকেই বলছেন তার যোগ্যতা, ত্যাগ অনুযায়ী দলে অভ্যন্তরে তাকে মূল্যায়ন করা হয়নি।
প্রশ্ন : আপনি কেমন আছেন?
শাম্মী আখতারঃ এক রকম আছি। বেশী ভালো না।
প্রশ্ন : কেন?
শাম্মী আখতার :এক জন জনপ্রতিনিধি কিংবা রাজনীতি বিদ হিসেবে জনগণ কে নিয়েই আমার কাজ কারবার। যেখান জনগণের ভোটাধিকার নেই। দেশ ও জনগণের পক্ষে কথা বলার অপরাধে দৈনিক আমারদেশ, চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি,ইসলামিক টিভি সহ গণমাধ্যম গুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমার দলের হাজার হাজার নেতা কর্মী মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দী। অনেকেই হামলা -মামলা, গুম – ক্রস ফায়ারের ভয়ে ঘর-সংসার ছেড়ে ফেরারী জীবন যাপন করছে। সেখানে তাদেরই একজন প্রতিনিধি কিংবা সহযোদ্ধা -সহকর্মী হিসেবে আমিও বেশী ভালো নেই।
প্রশ্ন :আপনারা কি দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবেন?
শাম্মী আআখতার :না! না!
প্রশ্ন : তাহলে আপনারা আগামীতে আবারও সরকার বিরোধী আন্দোলনে মাঠে নামবেন? আন্দোলনে সফল হওয়ার মতো সাংগঠনিক শক্তি কি আপনাদের আছে?
শাম্মী আখতারঃ প্রশাসন যেভাবে মরিয়া হয়ে সরকারের নির্দেশে গুলী চালাচ্ছে এতে বিএনপিকে সাংগঠনিক ভাবে একটু দুর্বল মনে হবে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্ত আদৌ বিএনপি দুর্বল নয়। আজকেই গুলী বন্ধ করুক দেখবেন রাজপথে একটা পিপড়া ঢোকার মতো জায়গা ফাঁকা থাকবেনা। বিএনপির কমিটি হয়তো নিয়মিত হয়না, কিন্ত এটা কর্মী সমৃদ্ধ দল। সাধারণ মানুষের ভালোবাসা আর কর্মীদের নিঃস্বার্থ পরিশ্রমের দ্বারাই চলে। বিএনপি গণ মানুষের ভালো বাসার দল।
প্রশ্ন :অতীতে আমরা দেখেছি পুলিশের জল কামান বুলেটের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জীবন বাজী রেখে আপনি ঢাকার রাজপথে আন্দোলন করেছেন কিন্ত এখন নিস্ক্রিয় কেন?
শাম্মী আআখতার : আমি ব্যক্তি গত ভাবে ফটোসেশনের রাজনীতি কিংবা ফেসবুক মুখী সক্রিয়তায় বিশ্বাসীনা বিধায় দলীয় কর্মসূচীতে উপস্থিতির ছবি গুলো ভার্চুয়াল মিডিয়ায় প্রচারে অনীহা র কারণে অনেকেই মনে করেন আমি নীরব নিস্ক্রিয়।
আমি রাজপথের আন্দোলন মুখী রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যখনই নির্দেশ দিবেন অতীতের মতো আবারো রাজপথে নামবো।
প্রশ্ন :আপনাকে টকশোতে দেখা যায়না কেন?
শাম্মী আখতারঃ টকশোর উপস্থাপক, সঞ্চালক রা যেখানে নিরপেক্ষতার বিপরীতে শাসকলীগের মুখপাত্রের ভূমিকায় সেখানে টকশোর প্রতি অনীহা আসাটাই স্বাভাবিক।
প্রশ্ন : তৃণ মূল কর্মী এবং পর্যবেক্ষক মহলের
অনেকেই মনে করেন ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে আপনাকে দলীয় ফোরামে অবমুল্যায়ন করা হয়েছে – পদ বঞ্চনার শিকার হয়েছেন? আপনার অভিমত কি?
শাম্মী আখতার : আমি এক জন বীর মুক্তিযোদ্ধা র সন্তান। মেজর জিয়ার ডাকে আমার বাবা অস্ত্র হাতে জীবন বাজী রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। কোনো লাভে কিংবা লোভে নয়। দেশ মাতৃকার টানেই লড়াই করেছিলেন। স্বাধীন দেশেও কোনো সুযোগ সুবিধার জন্য লবিং তদবির করেন নাই।
সুতরাং সেই বাবার সন্তান হিসেবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া র দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনে আমি আছি থাকবো। দেশনেত্রী বেগম খালেদাজিয়া ই আমাকে ছাত্রদলের সেন্ট্রাল কমিটিতে যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত করেছিলেন।
তিনিই আমাকে এমপি বানিয়েছেন। জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং স্তানীয় সরকার বিষয়ক সহ সম্পাদক মনোনীত করেছেন। সেই সুবাদে দেশ ও জনগণের পক্ষে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। দেশে-বিদেশে লাখো কোটি মানুষের দোয়া এবং ভালোবাসা পেয়েছি। সুতরাং তিনি আমাকে যেখানে যে পদবীতে ভালো মনে করবেন সেখানে রাখবেন। আমি সব সময় একটি কথাই ভাবি দল আমাদের কে অনেক দিয়ছে -দলকে আমরা কি দিলাম?
প্রশ্ন : আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ সময় দেয়ার জন্য।
শাম্মী আখতার : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ এবং আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ ।