শেখ হাসিনা কি এখন জামায়াত-শিবিরের কাছে ক্ষমা চাইবেন ?
প্রকাশিত হয়েছে : ১:০০:৩৫,অপরাহ্ন ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | সংবাদটি ১১৩৮ বার পঠিত
দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক প্রধানমন্ত্রী নিজে । আওয়ামীলীগ দলীয় এমপি লিটন নিহত হওয়ার পর পরই কে হত্যাকারী তা জানিয়ে দেন । লিটন হত্যার জন্য জামায়াতসহ স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে দায়ী করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সঙ্গতকারণেই আওয়ামী লীগের টপ টু বটম সকলের মনেই এই ধারণাটিই গেঁথে যায় । জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন , এমপি লিটনকে হত্যা করেছে জঙ্গি ও জামায়াত । ডেপুটি স্পিকার জানান , জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসের ধারাবাহিকতায় লিটন খুন, খুনের তদন্তে অগ্রগতি ।
লিটনের স্ত্রীও একই ধরণের বিবৃতি দেয় । জামায়াত-শিবির চক্র তার স্বামীকে হত্যা করেছে বলে জানান লিটনের স্ত্রী ।
কিন্তু লিটনের ভাইবোন এই ধরনের দোষারূপ থেকে বিরত থাকেন । তারা এই ধরনের দোষারূপ বন্ধ রেখে প্রকৃত খুনীকে বের করার জন্যে চাপ প্রয়োগ করেন । মূলত লিটনের ভাইবোনের দৃঢ়তাতেই সরকার চাপে পড়ে যায় । প্রকৃত খুনীকে বের করার উদ্যোগ নিতে বাধ্য হয় ।
এখন মনে হচ্ছে , অল্পের উপর দিয়েই গেছে । আরো মারাত্মক কিছু বের হয়ে যেতে পারতো । মানুষের আশংকা আরো ভয়ংকর ছিল । সেই আশংকাকে ধামা চাপা দিতে মাঝামাঝি অবস্থান থেকে জাতীয় পার্টির প্রাক্তন এমপিকে এস্কেইপ গোট বানানো হচ্ছে কি না , সেই সম্ভাবনাও নাকচ করা যাচ্ছে না । এটাও কি আরেকটি নাটক কি না সেটাও পর্যবেক্ষকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে । বিশেষ করে লিটনের বাড়ি থেকে পুলিশ প্রহরা প্রত্যাহার এবং ঘটনার সময়ে সঙ্গী সাথীদের কেউ না থাকা – কাদের খানের গ্রেফতারের পরেও এই প্রশ্নগুলির কোনও সুরাহা হচ্ছে না ।
মানুষের মনে এই ধরনের সন্দেহ সৃষ্টির জন্যে সরকার এবং বিশেষ করে সরকার প্রধানই দায়ী । সরকার পুরো বিচারব্যবস্থাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে মানুষ আর এই সরকারের লেফরাইটের উপর আস্থা রাখতে পারছে না । নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াকে ব্যবহার করে ঢাকায় বসে সিনেমার কাহিনীর মত কাহিনী সাজানো হয় । পরিস্থিতির মতিগতি বুঝে ঘটনা প্রচার করা হয় ।
প্রকৃত অপরাধীকে ধরার পরিবর্তে অপছন্দের মানুষকে ফাঁসানোর এই প্রবণতা সত্যি ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে । এর ফলে প্রকৃত ঘাতকরা নিজেদের আড়াল করে ফেলে ।
সরকারের এই ভয়ংকর খেলা কোথা গিয়ে শেষ হবে , তা একমাত্র আল্লাহই জানেন ।
এখন যদি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ও প্রাক্তন এমপি কাদের খাঁনই মূল হত্যাকারী হন , তবে প্রধানমন্ত্রী কেন কোনরূপ অনুসন্ধান ব্যতিরেকে জামায়াত শিবিরকে দোষারূপ করেছিলেন ?
এজন্যে কি প্রধানমন্ত্রী কোনও লজ্জা পাচ্ছেন ?
তিনি কি জামায়াত শিবিরের কাছে ক্ষমা চাইবেন ?
দেশের সুশীল সমাজ ও মিডিয়া কি প্রধানমন্ত্রীকে এই ক্ষমা চাওয়ার জন্যে কোনওরূপ চাপ প্রয়োগ করতে পারবে ?
এই জাতির বিবেক বলে কি আদৌ কিছু আছে যেখানে আজ এই প্রশ্নটি রাখা যাবে ?
আসলে আমরাই আমাদের এই দেশটিকে ভয়ংকর এক জনপদ বানিয়ে ফেলছি । যে কেউ যে কোনও সময় এর করুণ শিকার হয়ে পড়তে পারে । আমাদের মধ্যে কেউ হবে লিটন , কেউ হবে নন্দঘোষ , কেউ হবে স্কেইপ গোট আর কেউ হবে কাদের খাঁন । বিএনপি জামায়াতকে নন্দঘোষ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব না হলে গৃহপালিত বিরোধী দল থেকে কাউকে বলির পাঠা বানানো হবে ।
লেখক মিনার রশিদ