জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের ভরাডুবির কারণ কী?
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:১৯:৫০,অপরাহ্ন ০৬ নভেম্বর ২০১৮ | সংবাদটি ২৯০ বার পঠিত
স্পোর্টস ডেস্ক:: দেশের অষ্টম এবং বিশ্বের ১১৬তম ভেন্যু হিসেবে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফুটেছে টেস্ট ‘ফুল’। জাঁকজমকপূর্ণ আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে অভিষেক ঘটে এ মাঠের। ঐতিহাসিক প্রথা মেনে ঘণ্টা বাজিয়ে উদ্বোধন ঘোষণা করেন সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান।
তবে ক্রিকেটের অভিজাত সংষ্করণে সেখানে বাংলাদেশের অভিষেকটা হলো নিদারুণ বিরহের। খর্বাশক্তির জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ব্যাটিং ব্যর্থতায় দেড় দিন আগে এবং ১৫১ রানের বিশাল ব্যবধানে হারল স্বাগতিকরা। কিন্তু কেন এ চরম ভরাডুবি টাইগারদের? কৌতুহলী ক্রিকেটপ্রেমীদের এ প্রশ্নের জবাব দিতেই এ আয়োজন-
১. টেস্ট ফরম্যাটটা এখনো বুঝে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। ক্রিকেটের এ সংষ্করণে সেশন বাই সেশনে কেমন খেলা হচ্ছে তার ওপর ফলাফল নির্ভর করে। এক সেশনে ভালো খেললেও পরের সেশনে তা ধরে রাখতে পারেনি টাইগাররা। আবার উল্টোটিও ঘটেছে। প্রথম সেশনে বাজে খেললে দ্বিতীয় সেশনে ঘুরে না দাঁড়িয়ে হুড়মুড় করে গুটিয়ে গেছে।
২. টেস্ট খেলতে যে মেজাজ-মর্জির দরকার সেটা বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে নেই। এজন্য ঘরোয়া ক্রিকেটকে দায়ী করা যেতে পারে। এখানে তিনদিন বা চারদিনের যে ম্যাচগুলো খেলা হয়-তার মান অতি নিম্ন। বৈচিত্র্যপূর্ণ বোলিং আক্রমণের মুখোমুখি হতে হয় না ব্যাটসম্যানদের।
৩. টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে ফরম্যাটের মেজাজ থেকে বের হতে পারছেন না টাইগাররা। এ দুই ফরম্যাটে তেড়েফুঁড়ে মারার যে প্রবণতা তা টেস্টেও অনূদিত করছেন তারা। কিন্তু এখানে অযাচিত শট খেলা যাবে না। যথাসম্ভব ক্লাসিরে ওপর নির্ভর করতে হবে।
৪. সাম্প্রতিক সময়ে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে ফরম্যাটে অতি আত্মবিশ্বাসী ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ। সেই আত্মবিশ্বাসই টেস্টে কাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কারণ, লংগার ভার্সনে আত্মবিশ্বাসটা অন্যরকম হওয়া দরকার।
৫. সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিকেটের আদি ফরম্যাটে যাচ্ছেতাই অবস্থা বাংলাদেশের। শেষ ৯ ইনিংসের ৭টিতেই ৫০ ওভারের বেশি খেলতে পারেননি তারা। স্বাভাবিকভাবেই আত্মবিশ্বাস তলানিতে। তুলনামূলক কম শক্তির জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারের এটিও অন্যতম কারণ।
৬. সিলেট টেস্টে জয়ের জন্য চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের দরকার ছিল ৩২১ রান। ইতিহাস বলছে, এ রান তাড়া করে জিততে হলে অসাধ্য সাধন করতে হতো টাইগারদের। গড়তে হতো অনন্য রেকর্ড। নিজেদের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড নজির স্থাপন করতে হতো। আগের রেকর্ডটি ছিল ২১৫। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এ রান তাড়া করে জেতে টিম বাংলাদেশ। রেকর্ড রান তাড়া করে জেতার ভূতও বিপাকে ফেলেছে টাইগারদের।
৭. ক্রিকেটে বিবর্তন ঘটেছে। আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি কাযর্কর লেগ স্পিনার। বাংলাদেশে সেই মানের লেগি নেই। তাদের কিভাবে খেলতে হয় সেই অভিজ্ঞতাও নেই। এরই খেসারত গুনতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ব্রেন্ডন মাভুতাকে কোনোভাবেই পড়তে পারেননি ব্যাটাররা।
৮. এ টেস্টের আগে ফেভারিট ছিল বাংলাদেশ। এ তকমাও ডুবিয়েছে স্বাগতিকদের।
৯. ভালো খেলতে মুখিয়ে ছিল জিম্বাবুয়ে। তবুও নিশ্চুপ ছিল তারা। বরাবরই এগিয়ে রেখেছে স্টিভ রোডস শিষ্যদের। সাদা পোশাকে প্রতিপক্ষের নীরবতা কৌশলও গ্রাস করেছে তাদের।