শাস্তির ভয় করি না; অন্যায়ের প্রতিবাদ করবই: ব্র্যাথওয়েট
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৫৫:১৯,অপরাহ্ন ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ | সংবাদটি ৩১০ বার পঠিত
স্পোর্টস ডেস্ক:: আম্পায়ার তানভীর আহমেদের দুটি ভুল সিদ্ধান্তের কারণে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ক্রিকেটাঙ্গণ। গতকালের সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে এই উত্তাপ মানিয়ে নিতে না পেরে হেরে গেছে বাংলাদেশ। এই আম্পায়ারের ‘নো বলের’ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছেন উইন্ডিজ অধিনায়ক কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। মিনিট দশেক খেলা বন্ধ ছিল। এই আম্পায়ারের সঙ্গে তর্ক করে এই সিরিজেই জরিমানা গুনেছেন সাকিব আল হাসান। শাস্তি হতে পারে ব্র্যাথওয়েটের। কিন্তু উইন্ডিজ অধিনায়ক সেসব শাস্তি নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজী নন।
গণমাধ্যমের কাছে নিজের সব ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘শাস্তি আসবে-যাবে, তবে যদি ন্যায়ের পক্ষে না দাঁড়ান, তার মানে হলো আপনি অন্যায়কে সমর্থন দিলেন। আমাকে যদি কোনো শাস্তি দেওয়া হয়, আনন্দের সঙ্গে তা মাথা পেতে নেব। আমার সতীর্থদের এটার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো উচিত ছিল। কিন্তু যেহেতু আমি ওদের অধিনায়ক, আমার উচিত ছিল সতীর্থদের জন্য প্রতিবাদ করা। আমি জানিনা ম্যাচ রেফারি কী সিদ্ধান্ত নেবেন।’
ফিল্ড আম্পায়ারদের সঙ্গে ব্র্যাথওয়েটের বিবাদ মেটাতে ম্যাচ রেফারিকে ছুটে আসতে হয় ডাগ আউটে। নষ্ট হয় ১০ মিনিট। তবে উইন্ডিজ অধিনায়কের দাবি, তিনি ইচ্ছা করে সময় নষ্ট করেননি, ‘আমার তখন মনে হয়েছিল, ওই সিদ্ধান্তটা আমাদের পক্ষে না গেলে ম্যাচটা বদলে যেতে পারে। আমরা ইচ্ছে করে ম্যাচের ছন্দ প্রতিহত করিনি। এখন পেছনে ফিরে তাকালে মনে হচ্ছে, খেলায় যে বিরতি পড়েছিল, তাতে হয়তো ফলাফলে ওপর প্রভাব পড়েছে। যদিও আমি নিশ্চিত নই। তখন শুধু এটা মনে হয়েছিল, আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত পেতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমত আমরা বুঝতে চেয়েছি, এমন সিদ্ধান্ত কেন দেওয়া হলো। এরপর বুঝতে চেয়েছি আইন কী বলে। যদি আইনের বদলে বিবেচনাবোধ দিয়ে সিদ্ধান্তটা যদি বদলানো যেত, তাতেই আমরা খুশি হয়ে ম্যাচটা শেষ করতাম। যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। আমরা যে অভিযোগ করেছি, তা শেষ পর্যন্ত ধোপে টেকেনি। অবশ্য আমাদের দলও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েনি।’
তবে এক্ষেত্রে নিজে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন বলে মনে করেন ব্র্যাথওয়েট, ‘দলের সকলের হতাশ হওয়াই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু তা হয়নি। অধিনায়ক হিসেবে আমার দায়িত্ব ছিল দলের পাশে দাঁড়ানো। শুধু নিজের জন্য নয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের জন্যই আমাকে একটি শক্ত অবস্থান নিতেই হতো। আমরা সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, এর পর প্রতিটা বলেই আমরা নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে লড়াই করব। আজকের ম্যাচ দেখিয়েছে যে আমরা যদি আবেগ দিয়ে মাঠে সঠিক কাজগুলো করতে পারি, অনেক কিছুই পক্ষে আসে।’
দলকে কীভাবে উদ্বুগ্ধ করেন, সে ব্যাপারে ব্র্যাথওয়েট বলেন, ‘সে সময় আমি ম্যাচ রেফারির কাছে ৫ মিনিট সময় চেয়েছিলাম যেন ছেলেদের শান্ত করতে পারি, বিতর্ক ভুলে মাঠে মনোযোগ ফেরাতে পারি। ধন্যবাদ জানাতে হবে, সময়টা আমাদের দেওয়া হয়েছে। আমি সুযোগ পেয়েছি সতীর্থদের সঙ্গে কথা বলার। ব্যাপারটি ছিল আমরা বনাম বাকি সবাই। একসঙ্গে বৃত্তে দাঁড়িয়ে একমাত্র আমিই কথা বলেছি। তার পর সবাই সাড়া দিয়েছে, সবাই বলেছে এই ম্যাচ আমাদের জিততেই হবে। এরপর দেখেছেন, ম্যাচে কি হয়েছে।’
ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ৫০ রানে জিতে নিয়েছে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সিরিজও গেছে তাদের ঘরে। নিজের সম্ভাব্য শাস্তি নিয়ে ব্র্যাথওয়েট বলেন, ‘আমি তরুণদের নিয়ে গড়া আমার দলটির জন্য লড়েছি। ওরা যাতে কোনো ভুল ইঙ্গিত না পায়। ভেঙে না পড়ে। এজন্য শাস্তি আমার হতেই পারে। তবে, এটা সত্য যে আমার সতীর্থ, দেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মানুষের জন্য আজকেও যেমন দাঁড়িয়েছি, ভবিষ্যতেও দাঁড়াব।’