খুলনাকে হেসেখেলে হারিয়ে ঢাকার টানা দ্বিতীয় জয়
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৫২:২৯,অপরাহ্ন ০৮ জানুয়ারি ২০১৯ | সংবাদটি ৩১৯ বার পঠিত
স্পোর্টস ডেস্ক:: কাগজে-কলমে এবারের আসরের অন্যতম শক্তিশালী দল ঢাকা ডায়নামাইটস। টুর্নামেন্টে খেলতে নেমেও সে কথারই প্রমাণ দিলো তারা। নিজেদের শুরুর দুই ম্যাচেই প্রতিপক্ষকে স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে ঢাকা।
প্রথম ম্যাচে রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে ৮৩ রানে জয়ের পর আজ (মঙ্গলবার) নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে খুলনা টাইটানসকে ১০৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। ঢাকার করা ১৯২ রানের জবাবে খুলনার ইনিংস থেমেছে মাত্র ৮৭ রানে।
ব্যাট হাতে ঢাকার পক্ষে আবারো বাজিমাত করেছেন আফগান ওপেনার হযরতউল্লাহ জাজাই। মাত্র ২৫ বলে করেছেন আসরে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি। ৩ চারের সঙ্গে ৫ ছক্কার মারে খেলেছেন ৫৭ রানের ইনিংস। পরে বল হাতে ভেলকি দেখিয়েছেন দুই স্পিনার সুনিল নারিন এবং সাকিব আল হাসান। অধিনায়ক সাকিব নিয়েছেন ৩ উইকেট, নারিনের ঝুলিতে গিয়েছে ২টি উইকেট।
রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই খুলনাকে চেপে ধরে ঢাকা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই আগের ম্যাচে ফিফটি করা পল স্টার্লিংকে ফেরান সাকিব। আক্রমণাত্মক মেজাজে শুরু করা জুনায়েদ সিদ্দিকীকে আউট করেন নাইরন। মাত্র ১৬ বলে ৩১ রান করেন জুনায়েদ।
এরপর আর কেউই তেমন বলার মতো রান করতে পারেননি। নাজমুল হোসেন শান্ত ১৩ এবং আরিফুল হক অপরাজিত ১৯ রান ব্যতীত আর কেউ দুই অঙ্কেও যেতে পারেননি। আমেরিকান পেসার আলি খান ইনজুরিতে পড়ায় ১৩ ওভার শেষে ৮৭ রানের মাথায় ৯ম উইকেট হারাতেই থেমে যায় খুলনার ইনিংস।
টসে হেরে খুলনার অধিনায়কের আমন্ত্রণে ব্যাট করতে নামে ঢাকা ডায়নামাইটস। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভার থেকেই শুরু হয় দুই ওপেনারের মারমুখী ব্যাটিং। তরুণ পেসার শরীফুল ইসলামের করা ওভার থেকে নারিন-জাজাই মিলে নেন ১৬ রান।
শুরুর কয়েক বল দেখেশুনে খেললেও খানিক পরই আবারো মিরপুরে দেখা দেয় ‘জাজাই ঝড়’। খুলনার বোলারদের তুলোধুনো করে মাত্র ২৫ বলে ৩ চারের সাথে ৫টি বিশাল ছক্কার মারে আসরে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি পূরণ করেন জাজাই। আগের ম্যাচে নিজের হাফসেঞ্চুরি করতে জাজাই খেলেছিলেন ২২টি বল।
তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে মাত্র ৯ ওভারেই দলীয় শতক পূরণ করে ঢাকা। বাঁহাতি পেসার শরীফুল ইসলামের করা ইনিংসের চতুর্থ ওভার থেকেই জাজাই ৩ চার ও ২ ছক্কায় নেন ২৭ রান।
ইনিংসের নবম ওভারের পঞ্চম বলে খুলনার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে মিডউইকেটের উপর দিয়ে বিশাল ছক্কার মারে আসরের নিজের দ্বিতীয় ফিফটি পূরণ করেছেন জাজাই। সে ছক্কার মারেই দলীয় শতকও পূরণ হয় ঢাকার। কিন্তু ফিফটির পর আর বেশিদূর যেতে পারেননি তিনি।
ইনিংসের ১২তম ওভারে তুরুপের তাস হিসেবে অনিয়মিত স্পিনার পল স্টার্লিংয়ের হাতে বল তুলে দেন মাহমুদউল্লাহ। কাজে লেগে যায় সে চাল। ওভারের দ্বিতীয় বলেই জাজাইকে সাজঘরে পাঠিয়ে দেন স্টার্লিং। আউট হওয়ার আগে ৩৬ বলে ৫৭ রান করেছেন জাজাই। তার আগে সুনিল নারিন ১৯ এবং রনি তালুকদার সাজঘরে ফিরে যান ১৭ বলে ২৮ রান করে।
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর বাজিটা আরও বেশি কার্যকর হিসেবে আবির্ভূত হয় যখন ঠিক পরের বলেই ঢাকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকেও সাজঘরের পথ দেখিয়ে দেন স্টার্লিং। অফস্টাম্পের বাইরের বল কভারের উপর দিয়ে খেলার চেষ্টা করেন সাকিব। কিন্তু ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে ক্যাচ উঠে যায় পয়েন্টে। গোল্ডেন ডাক সঙ্গী করে সাজঘরে ফেরেন ঢাকার অধিনায়ক।
এক ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় ঢাকা। পঞ্চম উইকেটে জুটি বাধেন দুই ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল এবং কিরন পোলার্ড। দুজন মিলে ৩৩ বলে যোগ করেন ৫৫ রান। কিন্তু ১৭তম ওভারের শেষ বলে পোলার্ড এবং ১৮তম ওভারের পঞ্চম বলে রাসেল আউট হয়ে দুইশ করার স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় ঢাকার।
আউট হওয়ার আগে ২টি করে চার-ছক্কার মারে ১৬ বলে ২৭ করেন পোলার্ড, ৩ ছক্কার মারে ২২ বল থেকে ২৫ রান আসে রাসেলের ব্যাট থেকে। শেষদিকে শুভাগত হোম ৭ বলে ১১ ও নুরুল হাসান সোহান ৬ বলে ৯ রান করলে ১৯২ রানে থামে ঢাকার ইনিংস।