বাংলাদেশে বিগত দিনের জাতীয় সব নির্বাচন হিসেবে রেখে গত দুইটি নির্বাচনের দিকে তাকালে দেখা যায়, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫৪ জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। সুষ্ঠু ভোটের কোনো পরিবেশ ছিল না। ক্রিয়াশীল অধিকাংশ দল সেই ভোটে অংশ নেয়নি। আর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট? অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে অধিকাংশ জায়গায় দিনের ভোট ‘আগের রাতে’ সম্পন্ন হওয়ার নতুন রেকর্ড দেখেছে দেশবাসী, বিশ্ববাসী। অথচ গঠিত হয়ে গেল আওয়ামী লীগ সরকার।
অথচ দেশের সংবিধানে স্পষ্ট করে বলা আছে ‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ।’ জাতীয় সংসদকে সংবিধানের বিধানাবলী সাপেক্ষে প্রজাতন্ত্রের আইনপ্রণয়ন-ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী ‘প্রত্যক্ষ নির্বাচনের’ মাধ্যমে সংসদ সদস্য নির্বাচনের কথাও বলা আছে। অর্থাৎ জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মধ্য দিয়ে তো সরকার নির্বাচিত হওয়ার কথা। কিন্তু আজকে দেশের একজন সাধারণ মানুষ তিনি তার ভোটের অধিকারের অপেক্ষায় থাকেন।
কেননা সরকার আজ সম্পূর্ণভাবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে বেআইনিভাবে গণতন্ত্রকে ধবংস করে ফেলেছে, গণতন্ত্রের সব সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে ফেলেছে।
শুধু তাই-ই নয়, বৈধ আয়ের পথ ছাড়াই রাতারাতি বিত্তশালী বনে যাওয়া আওয়ামী ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা আজ দেশের বড় আপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের বেপরোয়া কর্মকান্ড দেশ ও সমাজের সর্বস্তরে অসম পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে, ঘটাচ্ছে সীমাহীন বিশৃঙ্খলা। সমাজে কোন্দল-সংঘাত, জবরদখলদারি, একচ্ছত্র আধিপত্যের সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠাসহ লাগামহীন অপরাধ-অপকর্মের নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা। তাদের মধ্যে শুরু হয়েছে শাসন-শোষণের মাধ্যমে রাতারাতি সম্পদ বৃদ্ধির প্রতিযোগিতা। ফলে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, তদবিরবাজি থেকে শুরু করে সব ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে বাধাহীনভাবে।
আর দেশ চলে গেছে অন্ধকারে।
এমতাবস্থায় দেশকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজন ‘গণতন্ত্র’। আর এই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় রয়েছে দেশের প্রতিটি মানুষের নৈতিক দায়িত্ব।
সুতরাং, সেই নৈতিক দায়বদ্ধতা থেকেই দেশের প্রতিটি সচেতন জনগণকে আওয়ামী অপশক্তির বিরুদ্ধে জেগে উঠতে হবে, কারণ ‘গণতান্ত্রিক অধিকার’ আদায় করে নিতে হয়, এবং সেখানে প্রতিটি জনগণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আর সেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনেই পূর্ণতা পাবে বঞ্চিত মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের গৌরব।
পরিশেষে বলতে চাই, শক্ত হাতে জেগে উঠা জনগণের সচেতনতা, সংগঠিত শক্তি সমাবেশই পারে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীকে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে বাধ্য করে জনগণের ভোটাধিকারের নিশ্চয়তা দিতে।
‘জেগে উঠো বাংলাদেশ’
ডালিয়া লাকুরিয়া
প্রচার-সম্পাদক
যুক্তরাজ্য, বিএনপি।