প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আওয়ামী লীগ ঐতিহ্যগতভাবে গণতন্ত্র বিরোধী ও ষড়যন্ত্র নির্ভর রাজনৈতিক দল। সত্যিকথা বলতে শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামল থেকেই তাদের কর্তৃত্ববাদী আচরণ দিয়ে জনগণের ওপর জগদ্দল পাথর চাপিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা আর জুলুমের নিষ্ঠুরতায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে সুশাসন ও ন্যায়ের শাসনকে আড়াল করে তারা নিজেদের স্বার্থের বীজ বপন করেছিলেন। আর সেই ধারাবাহিকতায় এবারও তারা অসাংবিধানিক পন্থায় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
তাইতো পূর্বের ন্যায়ে আজও নিজেদের দলীয় স্বার্থে নির্বাচন ও নির্বাচনী ব্যবস্থাকে প্রহসনে পরিণত করতে মোটেই দ্বিধা করে না। বরং তারা নানা ধরনের ‘কু-যুক্তি’ দিয়ে একে সঠিক করার চেষ্টা করেছে, করছে। আর এর জন্য নতুন নতুন কৌশল কাজে লাগাচ্ছে। কখনোবা আবার বিএনপিকে অশান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক দল হিসেবে আখ্যায়িত করতে চাইছে। কিন্তু বিএনপি কখনোই অশান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক দল নয়, যদি হতো? তাহলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে রাজপথে জনগণের এত সম্পৃক্ততা থাকার কথা নয়। যদি হতো? তবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে গৃহবন্দী থাকতে হতো না। যতি হতো? তবে গুম-খুন সহ বিএনপির বিরুদ্ধে ৩৫ লক্ষর বেশি মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীদের উপর একপ্রকার বুলডোজার চালাবার পরও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হতো না। বরং বিএনপি যদি অশান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি হাতে নিতো? তাহলে ‘বাংলার জমিন’ জনগণের সম্পদ লুন্ঠনকারী আওয়ামী লীগের জন্য বসবাসের অযোগ্য হয়ে যেতো।
প্রিয় পাঠকবৃন্দ, চাটার দল চোরের দলের নেতৃবৃন্দরা গণতন্ত্রের নামে বিএনপির শাসনামলের কথা তুলে ধরে প্রায়ই সময় তাদের রাজনৈতিক বক্তব্যে যে মিথ্যাচারের ট্যাবলেট-ক্যাপস্যুল জনগণকে প্রতিনিয়তই খাওয়াতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আফসোস, ৭৫’এর ৭ই নভেম্বরের পরাজিত অপশক্তিদের ট্যাবলেট-ক্যাপস্যুল জনগণ খাচ্ছেনা। কারণ, জনগণ নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকেই দেখেছে বিএনপির শাসনামলে সংসদ, ভোট, আইন, বিচার এবং নির্বাহী ব্যবস্থা গণতন্ত্রের মূল চেতনার সঙ্গে সংগতি রেখেই রাষ্ট্রব্যবস্থাকে বিকশিত করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলো।
সুতরাং, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টি মোটেও আওয়ামী লীগের গলাবাজির রাজনীতির মধ্যে জনগণ খুঁজে বেড়ায় না। বরং খুঁজে বেড়ায় গণতন্ত্র সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখার মতো শিক্ষা, দেশ ও জনগণের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করার মতো মানসিকতা।
অতএব, প্রশ্নমুক্ত, সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনই হচ্ছে গণতান্ত্রিক রাজনীতির মূল ভিত্তি।
পরিশেষে দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে নির্দ্বিধায় বলতে পারি, আওয়ামী লীগ কখনোই জনকল্যাণের নীতি গ্রহণ করতে পারেনি এবং জনগণও তাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি, দিচ্ছে না, দিবেও না। কারণ, জনগণের কাছে আজকে সূর্যের আলোর মতো সত্যি আর স্পষ্ট এই যে, আওয়ামী লীগ সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই বারবার অনিয়ম ও অনৈতিকতার আশ্রয় নিয়ে গণতন্ত্রকে জিম্মি করে ফ্যাসিস্ট কায়দায় ক্ষমতাকে আঁকড়ে ধরে রাখতে চায়, তারা কখনোই জনগণের হিতৈষী নয়, এবং রাষ্ট্র কোনোভাবেই তাদের কাছে নিরাপদ নয়। সেইসাথে এটাও স্পষ্ট যে, ভোটারবিহীন গণতন্ত্রের প্রবর্তকই হচ্ছে বিনাভোটে ক্ষমতায় থাকা আজকের আওয়ামী লীগ। তাইতো এবার সব বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে আরও সক্রিয়-সম্পৃক্তার মধ্য দিয়ে, বিএনপির হাতকে আরও শক্তিশালী করতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজপথে জনগণ ছুটে যাবে, সেইসাথে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ইনশাআল্লাহ বিজয়ী হয়ে টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই ‘বাংলাদেশ’ স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবে ✊
ডালিয়া লাকুরিয়া
প্রচার-সম্পাদক
যুক্তরাজ্য, বিএনপি।