লন্ডনে মুহিতের নাগরিক সম্বর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:৪৬:১৪,অপরাহ্ন ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | সংবাদটি ১৫৭০ বার পঠিত
লন্ডনে মুহিতের নাগরিক সম্বর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান
রোববার ১২ই ফেব্রুয়ারি ২০১৭ লন্ডনের ইমপ্রেসন ভেন্যুতে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের উদ্যোগে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী, ভাষা সৈনিক আবুল মাল আবদুল মুহিতকে এক নাগরিক সম্বর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান করা হয়। এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী ভাষা সৈনিক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী, বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল, সাবেক রাষ্ট্রদূত, সফল কূটনীতিবিদ এবং বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ডঃ এ কে আবদুল মোমেন ।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এই সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে শুরুতেই যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা লীগ, মহিলা যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ দলবেদে সম্বর্ধিত অতিথি আবুল মাল আবদুল মুহিতকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরন করে নেন। এর আগে আওয়ামীলীগ নেতা, সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন আর দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এর পর মানপত্র ও সম্মাননা ক্রেস্ট উপহার দেয়া হয় আবুল মাল আবদুল মুহিতকে।
আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে বরন করে নিয়ে বিশিষ্ট সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ভাষা সৈনিক আবদুল গাফফার চৌধুরী রসিকতা করে বলেন, মুহিত ভাইয়ের পরিচয় সেই রাবিশ- যা তাদের ভাষা আন্দোলনের সময়ে জেলের জীবনেও উল্লেখ করে গাফফার চৌধুরী বলেন, “মুহিত ভাইকে অর্থমন্ত্রী হিসেবে সংবর্ধনা জানালে ছোট করা হয়। অর্থমন্ত্রী তো আসে যায়। কিন্তু মুহিত ভাই একজন সংস্কৃতিমনস্ক, রাজনীতিমনস্ক ব্যক্তি। একজন মানুষ মুহিত হিসেবে তাকে সংবর্ধনা দিচ্ছেন আপনারা।”এসময় ইম্প্রেসন ভেন্যুতে তুমুল করতালির মাধ্যমে মুহিতকে স্বাগত জানানো হয়।
বিশ্ব আর্থিক মন্দার সময়ে মুহিত কিভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আগলে রেখেছিলেন, সে কথা উল্লেখ করে আব্দুল গাফফার চৌধুরী বলেন, কৃষি নির্ভর বাংলাদেশ এখন জ্বালানি ও শিল্প সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে- এই কৃতিত্ব সভানেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সমানভাবে বড় ভাই মুহিতের বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ডঃ এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্ব অর্থনীতির রোল মডেল। আমাদের জিডিপি ৭ এর ঘরে, মিলেনিয়াম গোলের প্রায় সব কিছুতেই আমরা সফলতা অর্জন করেছি। সবই সম্ভব হয়েছে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের স্বপ্ন আর সাধনা আর নিরলস কাজের ফল।
সম্বর্ধনার জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বাংলাদেশের ৭৫ ভাগ গ্রামের ঘরে ঘরে এখন বিদ্যুৎ পৌছে গেছে। বিদ্যুৎ ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়। সেজন্য শেখ হাসিনা এক্ষেত্রে আপোষহীন। তিনি বলেন, আমার সংসদীয় এলাকা সহ বাংলাদেশের সব সংসদীয় আসনেই এখন বিদ্যুতের আর কোন চাহিদা নেই। তাদের কাজের প্রয়োজনীয় সব বিদ্যুতই পেয়ে গেছেন।
মুহিত বলেন, ওসমানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট উঠা নামা করতে যে তিনটি সমস্যা রয়েছে বিমান বন্দরের রানওয়ের বর্ধিত করন, রানওয়ের উন্নয়ন সহ যাবতীয় উন্নয়নে বড় আকারের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে বছর খানেকের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মুহিত বলেন, আপনাদের অধিকার ক্ষুন্ন হয়, এমন কাজ শেখ হাসিনার সরকার করবেনা। সেগুলো সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এবং আপনাদের সম্পত্তির অধিকার সেটা বহালই আছে, থাকবে। এটা বরং ধর্মীয় আইন দ্বারাই নির্ধারিত হয়ে থাকে যেভাবে, সেভাবেই আছে।
এর আগে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের মুহিত ভাই বাংলাদেশের অর্থনীতিকে যেভাবে সামাল দিয়েছেন, সেটা একটা রোল মডেল।
0
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সভাপতি সুলতান শরীফ বলেন, আমরা চাই মুহিত ভাই আবারো সংসদে ও মন্ত্রীত্বে থাকুন এবং সেই সাথে আমরা চাই ডঃ মোমেন মন্ত্রী হিসেবে সংসদে যোগ দিন। তিনি বলেন, দেশ নিয়ে ইউনুস গংরা যে ষড়যন্ত্র করছিলো, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চেয়েও ডঃ মোমেন নিজের দক্ষতা, যোগ্যতা আর কর্মগুন দিয়ে সেই সব সামাল দিয়ে বাংলাদেশকে দুষ্টু চক্রের হাত থেকে রক্ষা করেছেন।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক। ফুলেল শুভেচ্ছা পর্ব পরিচালনা করেন আহাদ চৌধুরী। সহযোগিতা করেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে লাঞ্চে আপ্যায়িত করা হয়। এ সময় সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী গৌরী চৌধুরী।