সিলেটে নরমাল ডেলিভারি না করিয়ে সিজারের জন্য অপেক্ষা!
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:২০:৫৫,অপরাহ্ন ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ | সংবাদটি ২৬১ বার পঠিত
নিউজ ডেস্ক:: সিলেটের ওয়েসিস হাসপাতালে চিকিৎসায় অবহেলার কারণে তাহমিনা নামে এক চিকিৎসককে বরখাস্ত করা হয়েছে। রোববার হাসপাতালের এক জরুরি বৈঠকে তাকে বরখাস্ত করা হয়। জানা গেছে, রুমি বেগম নামে এক প্রসূতির নরমাল ডেলিভারি জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন।
কিন্তু চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে ও সিজারের করার পায়তারা করায় রোগীর অবস্থা বেগতিক হয়ে যায়। শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিজারের সিদ্ধান্ত নিলেও ১০ঘন্টা পর নরমাল ডেলিভারি করা হয়। দেরিতে ডেলিভারির কারণে বাচ্চার ব্রেইন ও ফুসফুসে চাপ পড়েছে এমন অভিযোগ করেন রোগীর স্বজনরা। এঘটনায় ওই চিকিৎসককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
রুমি বেগমের স্বামী আসাদুর রহমান জানান, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ড. জামিলা বেগমের ‘রেফারেন্সে’ ৭ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টায় সিলেটের ওয়েসিস হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারির জন্য ভর্তি হন। শুরুতে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাহমিনা ও নার্সরা প্রাথমিক চিকিৎসা দেন রুমিকে।
রাত বাড়ার সাথে প্রসব বেদনা আরো ঘনীভূত হতে থাকে। রুমির অভিভাবকরা নার্সদের বিষয়টি অবগত করেন। তাতে কোনো সাড়া দেননি তারা। শেষ পর্যন্ত রাত ১২টার পর ডাক্তারের খোঁজে রিসিপশনে যান রুমির স্বামী আসাদুর রহমান। অনেক বার চেষ্টা করার পর রাত সাড়ে ৩টায় কেবিনে আসেন কর্তব্যরত চিকিৎসক তাহমিনা। এসময় রুমির অবস্থা আরো খারাপ ছিল। অবস্থা বেগতিক দেখে ব্যথা নিরোধক ঔষুধ দিয়ে যান ডা. তাহমিনা। ছটফট করতে করতে রাত কাটে রুমির। আর দেখা মিলেনি ডাক্তার কিংবা নার্সদের।
পরদিন ৮ জানুয়ারি সকাল সাড়ে নয়টায় ‘রাউন্ডে’ আসেন ডা. জামিলা। তিনি রোগীর অবস্থা দেখে দ্রুত নরমাল ডেলিভারি পরামর্শ দেন। এবং এক ঘন্টার মধ্যে নরমাল ডেলিভারি সব প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেন ‘ডিউটি’ ডাক্তার ও নার্সদের। কিন্তু এক ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও ফের অদৃশ্য হয়ে যান কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্স। পরে নার্স ও চিকিৎসকরা বানিজ্যিক ফায়দা লাভের আশায় অনেক তৎপর চালান সিজার করাতে কিন্ত ব্যার্থ হয় তাদের অপচেষ্টা অবশেষ দুপুর ১২ টার দিকে নরমাল ডেলিভারি হয়।
দেরিতে সন্তান ডেলিভারির কারণে বাচ্চার ব্রেইন ও ফুসফুসে চাপ পড়েছে এমন অভিযোগ করেন রোগীর স্বজনরা।বর্তমানে নবাগত শিশু ও মা সিলেটের মা ও শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।পরিস্থিতির স্বীকার রুমি বেগম জানান ৭ ও ৮ তারিখ আমার সাথে যে ঘটনা আর অবহেলা ঘটনা ঘটেছে এটা যেন পূনরাবূত্তি না ঘটে। এভাবে মানুষের জীবন নিয়ে অবহেলা করার কোন প্রকৃত ডাক্তারদের কাজ হতে পারে না।মানুষ টাকা বেশী দিয়েও বেসরকারি হাসপাতালে যায় ভাল সেবা পাওয়ার জন্য, অবহেলা এবং বানিজ্যিক উদ্দেশ্যের স্বীকার হওয়ার জন্য নয়।
তিনি এর বিচার দাবী করেন এবং কর্তব্যরত নার্সদের শাস্তি দাবী করেন।সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিকিৎসকের গাফিলতির বিষয়টি ভাইরাল হয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় হাসপাতালের চেয়ারম্যান মাওলানা হুছাম উদ্দিন চৌধুরী রোববার জরুরি বৈঠক ডাকেন।বৈঠকে চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে ‘ডিউটি’ ডাক্তার তাহমিনাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, হাসপাতালের সহকারি পচিালক ডা, তাপস রাহুল,ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা।